যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির কারণে টাকা পাচার কমবে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শনিবার (২৭ মে) এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নতুন ভিসা নীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
মোমেন বলেন, ‘ভিসা (যুক্তরাষ্ট্রের) কারা নেয়? কিছু ধনী ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তারা। যারা আমার পলিটিক্যাল এজেন্ট, যারা নির্বাচনে কাজ করবে, তারা ভিসা চাইতে আসে না। তাহলে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ কী?’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু রাজনীতিবিদ, বড় ব্যবসায়ী বা সুশীল সমাজের নেতা যাদের ছেলে-মেয়েরা বিদেশে পড়াশোনা করে, তারা সেখানকার ভিসা নেয়।’
যারা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তাদের কথা উল্লেখ করে মোমেন আশা প্রকাশ করেন, ‘নতুন ভিসা নীতির কারণে মানি লন্ডারিং কমে আসবে।’
মোমেন বলেন, ‘যারা সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের আশ্রয় নেয়, তাদের নেতাদের সতর্ক হওয়া দরকার। আপনারা জানেন এই কাজগুলো কারা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাইব, এই ভিসা নীতির আওতায় জ্বালাও-পোড়াও বন্ধ হোক। যারা একবার জ্বলেছে এবং জীবিত আছে তাদের চেহারা দেখলে বড় দুঃখ পাবেন। আমরা আর জ্বালাও পোড়াও চাই না।’
ড. মোমেন বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় পূজারি।
বাংলাদেশ আশা করছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি যথেচ্ছভাবে প্রয়োগ করা হবে না।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাক্টের অধীনে তথাকথিত থ্রিসি বিধান অনুযায়ী ভিসা সীমাবদ্ধতা নীতিসম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘোষণার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার আমলে নিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে সকল পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের দ্ব্যর্থহীন অঙ্গীকারের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এই ঘোষণাকে দেখতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশ এবং জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সত্তার কোনো বেআইনি কর্মকাণ্ড বা হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিবৃতি অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকসহ নির্বাচনী প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারিতে থাকবে।
সরকার আশা করে যে স্থানীয় অগণতান্ত্রিক শক্তি যারা সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা সতর্ক থাকবে এবং সংবিধানের নির্দেশিত নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বিপন্ন করার তাদের বিভ্রান্তিকর প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কঠিন ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং দেশের উন্নয়ন অর্জনকে সমুন্নত রাখা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে।’
অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর অব্যাহত অঙ্গীকারের পাশে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় সমর্থনকে বাংলাদেশ সরকার ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করে।
সূত্র: ইউএনবি