এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে যোগ্যপ্রার্থী নির্বাচিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। তিনি বলেন, তাই আমরা নির্বাচন করব না, বরং আগামীতে যে নির্বাচন হবে তত্ত্বাবধায়ক না হলে সেই নির্বাচন আমরা প্রতিহত করব। এই বছরই আমরা সেই দাবি আদায় করব।’
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার (২০ মে) বরিশালে আয়োজিত জনসমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমর। শনিবার বেলা ১১টায় নগরের সদর রোডের জেলা ও মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ও সদর রোডের বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে সমাবেশে আসা নেতা–কর্মীদের পুলিশ বাধা দেয়নি।
বরিশাল নগরের সদর রোডের জেলা ও মহানগর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজাহান ওমর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনার দলের এত জনপ্রিয়তা যদি থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ভয় পাচ্ছেন কেন? যদি জনপ্রিয়তা থাকে তাহলে জনগণের কাতারে আসুন।’
সমাবেশে বরিশাল সিটির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন আগে বলেছিল এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না। কিন্তু এখানে দলটির নায়েবে আমির প্রার্থী হয়েছেন। সরকারের সঙ্গে দলটির আঁতাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পাতানো নির্বাচনকে বৈধতা দিতেই দলটি এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।
এ সময় দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শাহজাহান ওমর বলেন, ‘আমাদের সাফ কথা, এই পাতানো নির্বাচনে আমরা যাব না। এরপরও যদি কেউ যায়, তাহলে তাঁর জন্য দলের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা অনুরোধ করব সামান্য লোভলালসায় না পড়ে আন্দোলন এবং আগামী নির্বাচনের জন্য সবাই প্রস্তুতি নিন।’
বিএনপির বরিশাল মহানগর, দক্ষিণ ও উত্তর শাখা আয়োজিত এই জনসমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, বিএনপির কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দীন স্বপন।
সমাবেশে মজিবর রহমান বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। দেশের সব রাজনৈতিক দলই এই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ।
সরকার আবার বিএনপি নেতাদের ওপর দমন–পীড়ন চালাচ্ছেন অভিযোগ করে মজিবর রহমান বলেন, সরকার বিএনপিকে দমন করতে আবার গায়েবি মামলা, পুলিশ দিয়ে হামলা, নির্যাতন শুরু করেছে। খুলনায় বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। এটা সরকারের পুরোনো চেহারা। তারা দমন-পীড়ন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। রাতের ভোটের মতো পাতানো আরেকটি নির্বাচন আয়োজন করতে চায়। কিন্তু সেই সুযোগ আর পাবেন না। পুলিশ দিয়ে এই আন্দোলনকে দমন করা যাবে না।
জনসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান খান। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক কাজী রওনোকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদ, বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মিজানুর রহমান খান, দক্ষিণ জেলা বিএনপি আহ্বায়ক আবুল হোসেন খান, উত্তর জেলা বিএনপি আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ, মহানগর বিএনপি সদস্যসচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ, বরিশাল জেলা দক্ষিণ সদস্যসচিব আবুল কালাম প্রমুখ।
সকাল থেকে নগরের সব ওয়ার্ড ও জেলা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। এতে সদর রোডে যান চলাচল ব্যাহত হয়।