ঢাকার শাহবাগস্থ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এর সামনে ইক্যুয়িটি বিডি, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, বেলা, ব্রতী, ক্লিন, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, 350.org, গ্লোবাল ল’ থিংকারস সোসাইটি এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে আজ ১৮ মে, ২০২৩, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় এশিয়া মহাদেশের অন্যান্য দেশের সাথে বাংলাদেশেও “Don’t Gas Asia Campaign” এর অংশ হিসাবে মূকাভিনয় ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃ্ষক সমিতির সভাপতি এ.এস.এম বদরুল আলম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল।
উল্লেখ্য, জাপানে অনুষ্ঠিতব্য G7 সম্মেলনে জীবাশ্ব জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ হ্রাস করে উন্নত দেশসমুহ যাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধিতে বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশসমূহকে সহায়তা করে, সেজন্য এশিয়ার আরো দশটি দেশের সাথে একযোগে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে জীবাশ্ম জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানির এই ভয়াবহ সম্প্রসারণ কে রুখে দিতে ঢাকার পাশাপাশি একযোগে আজ টোকিও, ম্যানিলা, ইঞ্চেওন, মান্ডালুইয়ং, জাকার্তা, চিয়াং মাই, হানই, দিল্লী, কলকাতা, কাঠমুন্ডু, লাহোর এবং করাচিতেও এই প্রতিবাদ সমাবেশ এর আয়োজন করা হয়। পুরো এশিয়াতে এই সমাবেশ আয়োজন ও সমন্বয় করেছে এশিয়া এনার্জি নেটওয়ার্ক এবং এপিএমডিডি (এশিয়ান পিপল’স মুভমেন্ট ফর ডেট এন্ড ডেভেলপমেন্ট)।
মানববন্ধনের উদ্বোধনী বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, আগামী ১৯ থেকে ২০ মে অনুষ্ঠিতব্য G7 সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবে জোটের একমাত্র এশিয়ান সদস্য জাপান এই বছরের G7 সম্মেলন এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ একটি এশিয়ান দেশ এর কর্তৃত্বে রয়েছে, এবং জাপান এবার এই G7 সম্মেলনকে পুঁজি করে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে জীবাশ্ব জ্বালানির অর্থায়নের সুযোগ প্রসারিত করার চেষ্টা করবে। যেখানে উন্নত দেশসমূহ ইতোমধ্যেই জীবাশ্ব জ্বালানি নির্ভরতা থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সেখানে বাংলাদেশে এধরণের ক্ষতিকর জীবাশ্ব জ্বালানি তে বিনিয়োগের পরিবর্তে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহায়তা দাবী করছি।
কক্সবাজার বাপা’র সভাপতি এবং কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী বলেন, এশিয়ার একটি দেশ হয়ে অন্যান্য এশিয়ার দেশগুলিতে জাপান যেভাবে জীবাশ্ব জ্বালানিভিত্তিক ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ঘটাচ্ছে আমরা তার বিপক্ষে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। বাংলাদেশের পরম বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আমরা আশা করবো আসন্ন G7 সম্মেলনে এই দেশের ভবিষ্যত এর কথা মাথায় রেখে তারা যেন সিদ্ধান্ত প্রণয়ন করে।
মোংলা বাপা’র আহ্বায়ক এবং পশুর রিভার ওয়াটারকিপার নূর আলম শেখ বলেন, আশা করি G7 সম্মেলনে এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হবেনা যা এই দেশের প্রাণ, প্রকৃতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। এই দেশের বাস্তবতা এবং পরিণতির কথা মাথায় রেখে যেন নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরিতে G7 ভুক্ত রাষ্ট্রসমূহের সহযোগিতা কামনা করছি।
সমাপনী বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি এ.এস.এম বদরুল আলম বলেন, উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ব জ্বালানির ভয়াবহতা সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল এবং জলবায়ু সংকটের ঝুঁকিতে থাকা একটি দেশে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য এই খাতে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন করছে। তাই দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে সহায়তা বাড়াতে আমাদের এই একাত্ব আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে।
সমাবেশে জীবাশ্ম জ্বালানির ভয়াবহতা বিষয়ে জনসচেতনতামূলক মাইম প্রদর্শন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাইম এ্যাকশন এর সদস্যবৃন্দ। অনুষ্ঠানে আয়োজনকারী সংগঠন সমূহ ছাড়াও অন্যান্য পরিবেশবাদী সংগঠন এবং ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।