সাংবাদিকদের নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ, বিদ্বেষপ্রসূত ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন এবং সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ সাংবাদিকদের বাপ-মা তুলে যে ভাষায় বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তাদের মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঘৃণ্য বক্তব্যের জন্য অনতিবিলম্বে সালাউদ্দীন ও নাবিলকে বাফুফে থেকে অপসারণ এবং একই সঙ্গে বাফুফে’র দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেছেন নেতৃবৃন্দ।
বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন এবং ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার (০৫ মে, ২০২৩) এক যুক্ত বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২ মে মঙ্গলবার ছিল বাফুফে কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি সভা। সভাশেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে হাজির হন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। এ সময় তার পাশে ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি এবং আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক।
কাজী সালাউদ্দিন ব্রিফিংয়ের শুরুতে কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিকরা এখানে (বাফুফেতে) ঢুকতে গেলে আমার এখানে তাদের বাপ-মায়ের ছবি দিতে হবে। আরেকটা শর্ত হলো তার বাবার ছবি পাঠাবে, জুতা পরা। ঠিক আছে (হাসি)? এটা হতে হবে মেন্ডেটরি (বাধ্যতামূলক)। বাবার জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।’
এ সময় কাজী মো. সালাউদ্দিনকে উদ্দেশ্য করে সাংবাদিকদের অনেকটা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কাজী নাবিল আহমেদকেও বলতে শোনা যায়, ‘আমার রিকুয়েস্ট হচ্ছে অন্য। কে আন্ডারওয়্যার পরে বড় হয়েছে আর কে হয়নি সেটাও দেখতে হবে।’
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান নেতৃত্বের হাত ধরেই দেশের ফুটবল এখন সর্বনাশের দ্বারপ্রান্তে। তাদের দায়িত্ব পালনকালে দেশের জনপ্রিয় এই খেলার মান প্রতিনিয়ত নিম্নগামী। র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান প্রায় সবার নিচের দিকে। বাফুফে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রের খবর, যার সাম্প্রতিক প্রমাণ ফিফার নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন সময়ে এসব খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় বাফুফে নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাদের সাম্প্রতিক কথাবার্তায়। প্রতিবাদের মুখে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন এবং সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করলেও তা যথেষ্ট নয়। বাফুফে থেকে তাদের বিদায় এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে বর্তমান নেতৃত্বের সময় বাফুফে সংঘটিত সকল দুর্নীতি ও অনিয়মের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।