ফাগুনের বেলা শেষের সেই ভয়ংকর ক্ষণটি
বারবার আসে ফিরে
কই ‘মা’ তুমিতো আর ফিরে এলে না!
শুধু অধরা স্বপ্ন হয়ে রয়ে গেলে
হাত বাড়িয়েও আর ছুঁতে পাই না তোমায়!
বুঝেছিলাম সেই রাতেই
আর কখনো হবে না দেখা আমাদের দুজনের
নির্ঘুম রাত কেটেছে ভয়ংকর দু:শ্চিন্তায়
সকাল হলেই যেনো বাঁচি।
ছটফট করছিলাম কখন তোমার কাছে
আবার ছুটে গিয়ে জড়িয়ে নেবো তোমার শরীর
তোমার গায়ের মিষ্টি ‘মা’ মাখা গন্ধ পাবো
কিন্তু প্রতিদিনের মতো তা আর হলো না
তুমি একেবারে চলে গেছো
এই মোহ মায়ার জগৎ ত্যাগ করে
ফাগুনের শান্ত এক মায়াবী ভোরে
শুক্লপক্ষের অষ্টমীর পুর্ণ্য তিথীতে
তোমার মৃত্যুর খবর জেনেছে সবাই
তখনও আমি কেন যেনো এই খবর রাখিনি
মনে শংকা,ভয় নিয়ে প্রশ্ন করতে
খুভ ভয় পেলাম
কী আসে উত্তর
কিন্তু যা হবার তাই হলো
অমোঘ চিরসত্য
মিথ্যে হওয়ার কোনো উপায় যে নেই
আমি সব বুঝে নিয়েছিলাম
পাতা ঝরা কান্নায় মিশে গেছে
আমার আর্তচিৎকার
আকাশ -বাতাস ভারি হলো
আমার কান্নায় কাঁদলো বৃক্ষরাও
কিন্তু তুমি একটিবার আঁখি মেলে দেখলে না!
ততক্ষণে তোমায় নিয়ে চলছে কত কী আয়োজন
কত ফুলের মালা, কত ফুলের তোড়া
তোমার কফিন ঢেকেছে সেদিন ফুলে- ফুলে
লাল সবুজের বাংলাদেশের পতাকায় আবৃত
তোমার শুদ্ধ শরীর আর কফিন
তোমাকে পরম যত্নে আর শ্রদ্ধায়
মমতা মিশিয়ে সাজানো হলো সেদিন
তুমি কিছুই জানলে না!
তুমি তখন মোহ মায়ার বাঁধন ছেড়ে বহু দূর
আত্মা ছেড়েছে দেহ
মিছে কায়া,মায়ার ছায়াটুকু হয়ে
তোমার চিরচেনা প্রিয় বাসভূমে ফিরে এলে
হ্যাঁ এলে কিন্তু হাসপাতালের কফিনে চড়ে
একদিন বধূ সেজে এসেছিলে এই বাড়িতে
আভিজাত্যের পালকি চড়ে
আজ শুধু একটু উঠোন জুড়ে নিথর হয়ে
শেষ বিদায়ের পালা
দলে দলে শেষবারের মতো একটু করে দেখা
চারিদিকে বইছে শোকের ছায়া
নি:শব্দ চরাচরে নক্ষত্র ঝরে পড়ে
মা হারিয়ে গেছে আমার
কোথাও আমার মা নেই
কোথাও আর মা নেই
তুমি না থেকেও সবসময় মিশে আছো
আমার সমস্তটুকু অস্তিত্বের বলয় জুড়ে!!
‘মা’হারিয়ে গেছে আমার
১৪. ৩.২০২৩
মায়ের আজ চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা রইল