টাকাপয়সা, সম্পদ নিয়ে আপনার ভাবনা কেমন? এই অর্থই কি জীবনের সব সুখ এনে দিতে পারে? বিপুল সম্পদের মালিক হলেই কি সব সুখ মেলে? নাকি অন্য কিছুর প্রয়োজন আছে জীবনে? অর্থ ক্ষণিকের সুখ দিতে পারে ঠিকই, কিন্তু সব সময় সবকিছু অর্থ দিয়ে বিবেচনা করা যায় না এমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।
গবেষকেরা মনে করেন, ‘আমরা কীভাবে আমাদের অর্থ ব্যয় করব বা করছি, তা সুখের ধারণার ওপর একটা বড় প্রভাব ফেলে। মার্কিন লেখিকা গ্রেটচেন রুবিন তার ‘দ্য হ্যাপিনেস প্রজেক্ট’ বইতে লিখেছেন, অর্থ সুখ কিনতে পারে না। তবে অর্থ ব্যয় করে আপনি যে অসংখ্য জিনিস কেনেন, তা আপনার সুখের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
হ্যাঁ, সুখ বিষয়ে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে যে গবেষণাটি চালানো হয়েছে, তার কৃতিত্বের দাবিদার হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি। আর এই গবেষণাই সম্প্রতি সব জল্পনা কল্পনা উড়িয়ে পরিস্কার করে ঘোষণা করেছে যে, না, টাকা দিয়ে আর যাই কেনা যাক না কেন, সুখ কিনে ফেলা সম্ভব নয় কোনও মতেই। অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন রবার্ট ওয়াল্ডিঙ্গার এবং মার্ক স্কালজ।
হার্ভার্ড স্টাডি অফ অ্যাডাল্ট ডেভেলপমেন্টের গবেষণা অনুযায়ী প্রকাশিত ‘দ্য গুড লাইফ’ বইটির এই দুই লেখকের মতে, সুখ যদি গন্তব্য হয়, তবে টাকা সেখানে পৌঁছনোর একটা উপায় হতে পারে, কিন্তু টাকা সেই চূড়ান্ত গন্তব্য নয়।
টাকা কী দিতে পারে তাহলে? গবেষকরা জানাচ্ছেন, তা আমাদের সুরক্ষা দিতে পারে, দিতে পারে নিরাপত্তা, এমনকি একটা পর্যায় পর্যন্ত সন্তুষ্টিও এনে দিতে পারে টাকা। পাশাপাশি জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণের বোধও তৈরি করতে পারে। কিন্তু দিনের শেষে দাঁড়িয়ে একের সঙ্গে অপরের সংযোগই হল জীবনের সেই গোপন চাবিকাঠি, যা আমাদের সুখের ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। আমাদের সম্পর্কগুলোই আসলে আমাদের সুখী করতে পারে বলে মনে করেন সাইকোলজির অধ্যাপক স্কালজ।
ওপরের আলোচনা দিয়ে এতটুকু বলা যায় যে অর্থ ব্যয় করে কতটুকু সুখ কেনা যাবে, তা নির্ভর করে মনুষ্যত্বের ওপর। সে যদি তার অর্থ ব্যয় করে সুখ অনুভব করে তবে তা তার সুখই আছে এতে কোনো ভুল নেই।
আসলে অর্থের সঙ্গে সুখের সম্পর্কটা বেশ জটিল। তাই বলা যেতে পারে, মানবজীবনে সুখী হওয়ার সঙ্গে টাকার সম্পর্ক রয়েছে।