মিঠাপুকুরে মসজিদের শতাধিক হাড়িভাঙা আমগাছ কেটে সাবাড় করেছে দুবৃর্ত্তরা। রাতের আধারে পূর্ব শত্রুতার জেরে গাছগুলো কেটে ফেলেছে বলে দাবি করেছে সমজিদ কমিটি।
সম্প্রতি রাতে গাছগুলো কেটে নেয়ার ঘটনায় মিঠাপুকুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের আন্দারকোটা গ্রামে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আন্দারকোটা গ্রামের উত্তর আন্দারকোটা পীর মহিউদ্দিন রহ: জামে সমজিদের প্রায় দু’একর ৭২ শতক সম্পত্তিতে পাঁচ বছর আগে হাড়িভাঙা আম বাগান করে সমজিদ কমিটি। ওই সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছে একই গ্রামের আকমল হোসেন, মিজানুর রহমান, ইদ্রিস আলী, ফিদ্দুস মিয়া, ইউসুফ আলী ও সুলতান মিয়ার সাথে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানেও সমাধান না হওয়ার বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এরপরও সমজিদ কমিটির লোকজনকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করছিলেন প্রতিপক্ষরা।
রাতের আধারে আকমল হোসেন, মিজানুর রহমান, ইদ্রিস আলী ও ফিদ্দুস মিয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে বলে দাবি করেন মসজিদ কমিটির লোকজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামের শেষপ্রান্তে পশ্চিম দিকে প্রায় ৪০০ গাছের একটি হাড়িভাঙা আম বাগান। গাছগুলোতে মুকুল আসা শুরু করেছে। প্রায় তিন একর জমিতে বাগানটির সেচের জন্য রয়েছে একটি অগভীর নলকূপ। বাগানটির দক্ষিণের দিক হতে মোটাতাজা প্রায় ১০০ গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অগভীর নলকূপটি।
উত্তর আন্দারকোটা পীর মহিউদ্দিন (রহঃ) জামে সমজিদ কমিটির সভাপতি আজিজার রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিপক্ষ গাছগুলো কেটে ফেলার ফন্দি করছিলো। বেশ কয়েকবার আমাদের হুমকিও দিয়েছে। ঘটনার দিন সকাল বেলা গ্রামের লোকজন দেখতে পায় গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে।’
সমজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মকিব মণ্ডল বলেন, ‘গাছগুলোকে সন্তানের মত করে বড় করেছি। ফল দেয়া গাছগুলো কেটে ফেলল, আমরা এর কঠোর বিচার চাই।’
মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান মণ্ডল বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা প্রায় সাড়ে তিন থেকে চার লাখ টাকায় বাগানটি লিজ দেয়। টাকাগুলো মসজিদের উন্নয়নে কাজে লাগানো হয়। গাছগুলো কেটে ফেলার ফলে গাছের মূল্য ও লিজের টাকাসহ প্রায় ১০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ দিন ধরে তাদের সাথে বিরোধ চলছিল। আমরাও একটি নতুন সমজিদ করেছি, তাই আমরা চেয়েছিলাম আমাদেরও জমি দেয়া হোক। কিন্তু তারা দেয়নি। তবে, গাছ কেটে ফেলার সাথে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই।’
মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’