বৃহস্পতিবার, ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৪ঠা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

শৈত্যপ্রবাহের আওতা কমছে বৃষ্টির সম্ভাবনাও কেটে গেছে

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৯২ বার পঠিত

শৈত্যপ্রবাহের আওতা কমছে। সার্বিক তাপমাত্রা বাড়তির দিকে। আজো দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। কিন্তু এই স্বস্তির পরিবেশ সাময়িক। আবার সার্বিক তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। গতকাল রংপুর বিভাগের আট জেলা এবং এর বাইরে নওগাঁ ও মৌলভীবাজারে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ ছিল। আজ রোববার এই ১০ জেলা মধ্যে কয়েকটি থেকে শৈত্যপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের সব জেলায় গতকাল মোটামুটি উষ্ণ ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলি এলাকাটি ছাড়া। নিকলি জলাশয় বেষ্টিত বলে সে এলাকায় কুয়াশা থাকায় সেখানকার পরিবেশ এমনিতেই বেশ ঠাণ্ডাই থাকে। গতকালও এর ব্যতিক্রম ছিল না। নিকলিতে গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি। তবে পরে নিকলিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠে ২৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। ফলে দিনে মোটামুটি স্বস্তিতেই কেটেছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ ছিল ২৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল ১৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগেই সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল। রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে নিম্ন তাপমাত্রা গতকাল রেকর্ড করা হয় নওগাঁর বদলগাছীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদনদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে এবং দেশের কোথাও কোথাও তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল শনিবারের রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

এ দিকে এতদিন পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেশের কোনো কোনো স্থানে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা বলা হলেও গতকাল আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, দেশ থেকে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কেটে গেছে। তবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর থেকে গতকাল সন্ধ্যার ৬টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের আট বিভাগের দুই-এক জায়গায় গুঁড়ি গুঁড়ি ও হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

মোস্তফা কামাল বলেন, দেশের মধ্যাঞ্চলের ভূ-পৃষ্ঠে কুয়াশার যে প্রভাব ছিল তা এখনো রয়ে গেছে। এর কারণ মধ্যাঞ্চলের ভূপৃষ্ঠের ঊর্ধ্বাকাশে কিছু মেঘ জমেছে। অন্য দিকে ঊর্ধ্বাকাশে বয়ে চলা জেট স্ট্র্রিম যেভাবে আঁকাবাঁকা হয়ে বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল আবহাওয়ার পূর্বাভাস মডেলে, প্রকৃতপক্ষে তা না হয়ে সেটি অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি সরল রৈখিক পথে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে। সে কারণে বঙ্গোপসাগর থেকে খুবই অল্প পরিমাণ জলীয়বাষ্প বাংলাদেশের স্থলভাগে প্রবেশ করছে এবং বৃষ্টির সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিয়েছে। গতকাল শনিবার দিনেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কমে যায়। কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্রে দেখা বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, মেঘালয় পর্বতের ওপর মেঘের সৃষ্টি হচ্ছে বলে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পরে থেকে ভোর পর্যন্ত নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জের সীমান্ত সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় কিছুটা হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, টানা ১০ দিনের মাঝারি ও মৃদু শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে পঞ্চগড়ে চলতি শীত মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পঞ্চগড়ে। গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় চলতি শীত তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। তবে দিনে কড়া রোদ থাকায় টানা শৈত্যপ্রবাহেও মানুষের দুর্ভোগ অনেকটা কম ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের হিসাবে দেশের কয়েকটি জেলার সাথে রংপুর বিভাগের উপর দিয়ে মাঝারি থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

গতকাল শনিবার ভোররাত থেকে ঘন কুয়াশার সাথে উত্তরের কনকনে শীতল বাতাসের কারণে প্রচণ্ড শীত অনুভূত হতে থাকে। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সূর্যের দেখা যাওয়ার পর সাড়ে ৮টার দিকে রোদের দেখা মেলে। এরপর থেকে সারা দিনই ছিল ঝলমলে রোদ। তবে উত্তরের হীম বাতাস প্রবাহ অব্যাহত থাকায় সূর্যের তেজ তেমনটা গায়ে লাগেনি।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন, গতকাল শনিবার তেঁতুলিয়ায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি শীত মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। গত ৫ জানুয়ারি থেকেই পঞ্চগড়ে মাঝারি থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ৪ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ
রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশার কারণে সকাল ৬টা থেকে ৪ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর সকাল ১০টা পর্যন্ত ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। পদ্মা ও যমুনা নদীপথে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানান, শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের নদী অববাহিকায় ভারী কুয়াশা পড়তে থাকে। ভোর ৬টা নাগাদ কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে নদীর মার্কিং আলো অস্পষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া ফেরির ফগলাইট দিয়ে দূরের কিছু না দেখা যাওয়াতে কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো: সালাহউদ্দিন বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। কুয়াশা কেটে গেলে সকাল ১০টার পর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।

গাংনী (মেহেরপুর) সংবাদদাতা জানান, মেহেরপুরের গাংনীতে শৈত্যপ্রবাহ ও বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ার কারণে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে বিপদে পড়েছেন শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষেরা। উপজেলা শহরে দিনের বেলা হেড লাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com