শনিবার, ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

বরিশালে এডিশনাল এসপির বিরুদ্ধে বিয়ে নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ নারীর

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৮৯ বার পঠিত

ধর্ষণ, প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে ও শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে বরিশালে ১০ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (এডিশনাল এসপি) নামে আদালতে নালিশ করেছেন এক নারী। ওই নারী বরিশালের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।

সোমবার (২ জানুয়ারি) বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই নালিশী অভিযোগ দেন তিনি। পরে বিচারক মো. ইয়ারব হোসেন অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় (মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী মো. হুমায়ন কবির জানান, আগামী৭ দিনের মধ্যে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলার গ্রহণের বিষয়ে শুনানি হবে।

আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগের বরাত দিয়ে আইনজীবী বিপ্লব কুমার রায় জানান, বিবাদী বরিশাল দশম আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌস (৪০)। সে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার বোরানাল গ্রামের মো. আব্দুল আউয়াল খন্দকারের ছেলে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাদী নারী ও বিবাদী পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। সেই সূত্রে তাদের আগে থেকেই পরিচয় ছিল। দীর্ঘদিন পরে বাদী বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি নেন এবং বিবাদীও বরিশালে এডিশনাল এসপি হিসেবে চাকরি নেন। এরই ধারাবাহিকতায় বরিশাল অফিসার্স ক্লাবে তাদের দেখা হয়। পূর্ব পরিচয়ের সুবাধে ক্লাবে তারা ব্যাডমিন্টন খেলতেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক হলে পুলিশ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তখন ওই নারী তার সঙ্গে দেখা ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

পরবর্তীতে বরিশাল নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকায় দেখা হলে অনুনয় বিনয় করে আবারো সু সম্পর্ক করেন। এ সম্পর্কের বিষয়টি বাদীর স্বামী জানতে পেরে গত বছরের জানুয়ারিতে ডিভোর্স দেন।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ১০ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বাংলোতে ইসলামী শরীয়া অনুযায়ী বাদীর সাথে বিবাদীর বিয়ে হয়। তবে কোন কাবিন করেননি বিবাদী। এভাবে বিয়ের পর বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী অনুষ্ঠানে উভয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে অংশ নেয়।

গত বছরের মার্চে পুলিশ কর্মকর্তার প্রথম স্ত্রী সন্তানসহ দশম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের বাংলোয় আসেন। তখন বিয়ের কাবিন করার জন্য বাদী চাপ দিলে বাংলোতে তাকে বেধড়কভাবে পেটানো হয়। সুস্থ হয়ে বিষয়টি দশম আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশের অধিনায়কের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে কাবিন করতে রাজি হন। তবে ৩/৪ টি বিভাগীয় মামলা থাকার কথা জানিয়ে বাদীকে মামলাগুলোর ঝামেলা গেলেই কাবিন করা হবে বলে জানায়।

এরপর গত ২২ জুলাই নারীকে ঢাকা নিয়ে রাজধানীর ইস্কাটনে পুলিশ অফিসার্স মেসে নেয়। গত ২৫ জুলাই গুলশানের এক বন্ধুর বাসায় কাবিনসহ বিয়ে হয়। তবে বাদী কাবিননামা চাইলে নানানভাবে ঘোরাতে থাকে বিবাদী। ১৮ জুলাই বাদীকে পুলিশ অফিসার্স মেসে রেখে বিবাদী জরুরি কাজে কিশোরগঞ্জ চলে যায় এবং বাদী ২৯ জুলাই পুলিশ অফিসার্স মেস থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।

এরপর বিবাদীর সঙ্গে বাদীর সর্বোশেষ কথা হয় ১১ অক্টোবর। যারপর থেকে বিবাদী ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ম্যাসেঞ্জার, সেলফোন নাম্বার বন্ধ করে দেয়।

পথিমধ্যে মোবাইল ফোনে কথা হলে মাহমুদুল হাসান তাকে বিয়ের কথা স্বপ্ন মনে করে ভুলে যেতে বলেন এবং বিয়ের কথা অস্বীকার করেন। এনিয়ে বাড়াবাড়ি করলে গুলি করে হত্যাসহ সহকর্মীদের মাধ্যমে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হুমকি দেন। এরপর থেকে তিনি যোগযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর গত ২০ নভেম্বর স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে আইনি নোটিশ দেন। কিন্তু জবাব না দেওয়ায় গত ২৭ নভেম্বর বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলার পরামর্শ দেয়। সেই পরামর্শ অনুযায়ী বাদী আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।

এদিকে মামলার বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ফেরদৌসের মোবাইল ফোন নম্বরে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com