দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। মাছ ধরার ট্রলারভর্তি ইলিশ নিয়ে কূলে ফিরছেন জেলেরা। ইলিশের পাশাপাশি ধরা পড়ছে রূপচাঁদাসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ।
সাগরে প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়ায় ব্যবসায়ী ও জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। আড়তগুলোতে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় উৎসবের আমেজ। টানা তিন-চার মাস কোলাহল না থাকায় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে।
বৈরী আবহাওয়া ও ২২ দিন নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগর থেকে টন-টন ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে শত শত মাছ ধরার ট্রলার। ঘাট থেকে ডিঙি নৌকায় ঝুড়ি নিয়ে মোকামে (গুদাম ঘর) তোলা হচ্ছে ছোট-বড় ইলিশ। সেখানে কারো যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। কেউ বরফ ভাঙছে, কেউ ইলিশ সাজাতে ব্যস্ত। অনেক ব্যবসায়ী কাঙ্ক্ষিত দাম পেয়ে ট্রাকে ট্রাকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন ইলিশের চালান।
জেলেরা জানান, অনেক দিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় এবং মাছ না পাওয়ায় বেশ কষ্টে দিন কেটেছে। অনেক দুঃখ-কষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের থাকতে হয়েছে। এবার সাগরে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ায় সেই দুঃখ-কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে।
কক্সবাজার ফিশারি ঘাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ওসমান গণি টুলু জানান, এবার যেভাবে মাছ ধরা পড়েছে তাতে সবাই লাভবান হবে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও ইলিশ রফতানি করা সম্ভব হবে।
১ নভেম্বর মঙ্গলবার এক দিনে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মজুদ মাছের পরিমাণ ১৮ টন। আগের দিন ৩১ অক্টোবর মজুদ হয় ১২ টন।
জেলেদের অভিযোগ, ভারতীয় প্রায় ৪০০ হতে ৫০০ ট্রলার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সত্ত্বেও তারা মাছ ধরে নিয়ে যায়, এতে করে বাংলাদেশের জেলেরা কাঙ্খিত মাছ পাচ্ছে না।
কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে এক কেজি বা তার চেয়ে বেশি ওজনের ইলিশ কেজি প্রতি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ট্রলার আরো ফিরলে দাম আরো কমতে পারে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: বদরুদ্দোজা বলেন, ইলিশ ধরা বন্ধের পর প্রচুর মাছ ধরা পড়ছে। এ বছর ডিমও ছেড়েছে অনেক। বন্ধকালীন সময়ে ইলিশের প্রজনন বেড়েছে অনেক গুণ।
তিনি আরো বলেন, উপকূলে অনুকূল পরিবেশ থাকায় নির্ভয়ে জেলেরা নৌকাভর্তি মাছ নিয়ে খুশি মনে কূলে ফিরতে পারছে।
তিনি আশা করছেন, এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবেন জেলেরা।
সূত্র : ইউএনবি