রাজধানীসহ সারা দেশের ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিয়েছে। কেউ ভুগছেন করোনায়, কেউ ডেঙ্গু জ্বরে। আবার মৌসুমি জ্বর ও শ্বাসতন্ত্রের ইনফেকশনের জ্বরেও আক্রান্ত অনেকে। অর্থাৎ বর্তমানে চার ধরনের জ্বরে ভুগছে মানুষ। যদিও কোভিডের উপসর্গ এবার অন্যবারের তুলনায় বেশির ভাগেরই দেখা যাচ্ছে মৃদু। তবে এসব জ্বরকে অবহেলা করা উচিত নয় জানিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, চার দিনের বেশি জ্বর থাকলে একই সঙ্গে ডেঙ্গু ও করোনার পরীক্ষা করাতে হবে। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি সবার মেনে চলতে হবে।
এবার ঈদ উৎসবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত থাকায় করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকার সবার জন্য মাস্ক পরা বাধ্যমূলক করলেও সেই নির্দেশনা মানেননি বেশির ভাগ মানুষ। ঈদে ঘরে ফেরা, ফিরতি যাত্রা, পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র, পশুর হাটসহ সর্বত্রই ছিল স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত। রাস্তাঘাট, মার্কেট, লঞ্চ, বাস ও রেল স্টেশনসহ সব জায়গাতেই দেখা গেছে মাস্ক ছাড়াই মানুষের বেপরোয়া চলাচল। কোথাও মানা হয়নি স্বাস্থ্যবিধি। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জের পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি ছিল উপেক্ষিত। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যেও ছিল ব্যাপক উদাসীনতা। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলারও কোনো বালাই নেই। সবকিছু এমন ঢিলেঢালা চলার পরিপ্রেক্ষিতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধির আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
ইতিমধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে ঘরে ঘরে জ্বরের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। জ্বর শরীরের যে কোনো সংক্রমণ বা প্রদাহের বিপরীতে প্রথম প্রতিরোধব্যবস্থা। তবে অতিরিক্ত জ্বর শরীরকে দুর্বল করে ফেলে। জ্বরের কারণ অনেক। তবে সাধারণ ভাইরাস জ্বরই বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে ঋতু বা আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে। আবার কিছু কিছু কারণ আছে, যার কারণে যে কোনো সময় জ্বর হতে পারে। যেমন কিছু জটিল রোগে র্যাশসহ জ্বর হতে পারে। সাধারণত ওষুধ খেলে জ্বর ভালো হয়ে যাচ্ছে। তবে যাদের জ্বর চার/পাঁচ দিনের বেশি থাকে তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর বর্তমানে যাদের করোনার জ্বর সেটিও অল্পতে ভালো হয়ে যাচ্ছে। তবে বয়স্ক, শারীরিক দুর্বলতাসহ বিভিন্ন ক্রিটিক্যাল রোগে আক্রান্তরা করোনায় আক্রান্ত হলে খারাপের দিকে যাচ্ছে।
ডেঙ্গু জ্বরের সময় ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়েও জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর আবারও জ্বর আসতে পারে। এর সঙ্গে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, যেহেতু এখন ডেঙ্গু, করোনা ও সিজন্যাল জ্বরের মৌসুম, তাই অনেকে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকে এমনিতেই ভালো হচ্ছে। তবে যাদের জ্বর চার/পাঁচ দিনের বেশি থাকছে তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আর মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরলে নিজে নিরাপদ থাকার পাশাপাশি পরিবারও সুরক্ষিত থাকবে।