সোমবার, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে গৌরনদীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে জহির উদ্দিন স্বপনের পক্ষ থেকে কম্বল বন্টন আবারও রাজনীতির লাইমলাইটে খালেদা জিয়া জাতীয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পুতুলকে সরাতে দুদকের চিঠি পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু ১৫ বছর পর প্রথমবার জামিন পেলেন ২৫০ সাবেক বিডিআর সদস্য এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এসকে সুরের বাসায় দুদকের অভিযান, ১৭ লাখ টাকা উদ্ধার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে স্বস্তির প্রহর গুনছেন ফিলিস্তিনিরা

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ : শেষকৃত্য কখন-কোথায়-কী ঘটবে?

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৭৭ বার পঠিত

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চার দিন শায়িত থাকার পর আজ সোমবার ব্রিটেনের স্থানীয় সময় সকাল বেলা, বাংলাদেশ সময় দুপুরের পর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের জন্য শেষ যাত্রা শুরু করবে।

প্রথমে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে একটা ধর্মীয় সভা হবে অভ্যাগতদের উপস্থিতিতে। এরপর উইন্ডসর ক্যাসেলে ঘনিষ্ট ও রাজপরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে শোকসভা হবে। তারপর রানিকে সমাধিস্থ করা হবে।

আজকের দিনটি পালিত হতে যাচ্ছে আবেগঘণ, আড়ম্বরপূর্ণ রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে। ব্রিটেনে এই ধরনের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য সর্বশেষ হয়েছিল ৬০ বছর আগে উইনস্টন চার্চিলের ক্ষেত্রে। বাকিংহ্যাম প্রাসাদ থেকে জানানো হয়েছে, শেষকৃত্যের পরিকল্পনায় রানি ব্যক্তিগতভাবে কিছু সংযোজন করেছিলেন।

সকাল ৮টা
লন্ডনের কেন্দ্রস্থলের ওয়েস্টমিনস্টার হলে রানির রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত অবস্থা শেষ হয়েছে।

কিছু দূরে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেরা দরজা খুলে দেয়া হবে যাতে বেলা ১১টার শেষকৃত্যানুষ্ঠানের আমন্ত্রিত অতিথিরা সেখানে এসে প্রবেশ করতে শুরু করতে পারেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা রাজ পরিবারের সদস্যের সাথে যোগ দেবেন। তারা রানির জীবন এবং কাজকে স্মরণ করবেন। যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদরা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীরাও যোগ দেবেন।

ইউরোপের অন্যান্য রাজ পরিবারের সদস্য, তাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন রানির রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়, আশা করা হচ্ছে তারাও যোগ দেবেন। তাদের মধ্যে বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপ ও রানি মাথিলডা এবং স্পেনের রাজা ফেলিপে ও রানি লেটিজিয়া রয়েছেন।

সকাল ১০টা ৪৪ মিনিট
এই সময়ে এসে দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। রানির কফিন ক্যাটাফাল্ক থেকে সরিয়ে নেয়া হবে। চার দিন ধরে তিনি এখানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত আছেন। কফিনটি এরপর নেয়া হবে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের জন্য।

রাজ পরিবারের সিনিয়র সদস্যরা, তাদের মধ্যে নতুন রাজা, তার ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম এবং প্রিন্স হ্যারি গান ক্যারিজ বা কামানবাহী গাড়িকে পদব্রজে অনুসরণ করবেন। এই গাড়িতে রানির কফিন নিয়ে যাওয়া হবে।

স্কটল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ড রেজিমেন্টের পাইপ এবং ড্রামবাদক দল এই শোভাযাত্রার অগ্রভাগে থাকবে। আরো থাকবে রয়্যাল এয়ার ফোর্স এবং গোর্খা সদস্যরা।

বেলা ১১টা
রানির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে আশা করা হচ্ছে দুই হাজার অতিথি থাকবেন ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে। এটা একটা রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। এই ধরনের অনুষ্ঠান সাধারণত রাজা অথবা রানির জন্য করা হয়।

এসব অনুষ্ঠানে কঠোর নিয়ম, রীতিনীতি মানতে হয় – যেমন সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শায়িত রাখা। ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে একটা ঐতিহাসিক গির্জা। এখানেই ব্রিটেনের রাজা ও রানিদের অভিষেক হয়।

এখানেই ১৯৫৩ সালে রানির অভিষেক হয়েছিল। এই গির্জাতেই তৎকালীন প্রিন্সেস এলিজাবেথ ১৯৪৭ সালে প্রিন্স ফিলিপকে বিয়ে করেন। আঠারো শতকের পর এখানে কোনো রাজার শেষকৃত্য হয়নি।

যদিও ২০০২ সালে রানির মায়ের শেষকৃত্য এখানেই হয়েছিল।

এই রাষ্ট্রীয় আয়োজন পরিচালনা করবেন ওয়েস্টমিনিস্টারের ডিন ডেভিড হয়েল। সাথে থাকবেন ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি। প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসও ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করবেন।

বেলা ১১টা ৫৫
শেষকৃত্যের শেষের দিকে সংক্ষেপে বিউগলের সুর বাজানো হবে এরপর দুই মিনিট জাতীয়ভাবে নীরবতা পালন করা হবে।

জাতীয় সঙ্গীত এবং রানির বাঁশিবাদক দল বিষাদের সুর তুলবেন। এরই মধ্যে দিয়ে দিনের মধ্যভাগে শোকসভা শেষ হবে।

দুপুর ১২টা ১৫
রানির কফিন নিয়ে একটা শোভাযাত্রা হেঁটে হেঁটে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে থেকে ওয়েলিংটন আর্চ, লন্ডনের হাইড পার্কের কোনায় যাবে।

এই রাস্তায় সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকবে। বিগ বেন থেকে এক মিনিট পর পর ঘণ্টা ধ্বনি করা হবে। শোভাযাত্রাটি খুব ধীরে ধীরে রাজধানীর রাস্তা দিয়ে যাবে।

হাইড পার্ক থেকে প্রতি মিনিটে তোপধ্বনি করা হবে। সাধারণ মানুষ এই শোভাযাত্রা কয়েকটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে দেখতে পাবেন।

এই শোভাযাত্রাটি রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ নেতৃত্ব দেবে। শোভাযাত্রাটি সাতটা ভাগে থাকবে। প্রতিটা ভাগের অগ্রভাগে থাকবে আলাদা বাদকদল। যুক্তরাজ্য এবং কমনওয়েলথের সৈন্যবাহিনী শোভাযাত্রায় থাকবে।

পুলিশ, ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস এর সাথে যুক্ত থাকবে। রাজা আরো একবার রাজপরিবারের সদস্যদের নেতৃত্ব দেবেন।

কুইন কনসর্ট ক্যামিলা, প্রিন্সেস অব ওয়েলস, কাউন্টেস অব ওয়েসেক্স ও ডাচেস অব সাসেক্স শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন গাড়িতে চড়ে।

উইন্ডসর অভিমুখে যাত্রা
ওয়েলিংটন আর্চে দুপুর একটার সময় নতুন একটা রাষ্ট্রীয় শবযানে কফিনটি নেয়া হবে উইন্ডসর ক্যাসেলের দিকে শেষ যাত্রার উদ্দেশে।

এই প্রাসাদটি প্রায় এক হাজার বছর ধরে ৪০ জন রাজা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন, আর রানির কাছে জীবনভর এটার একটা বিশেষ তাৎপর্য ছিল।

কিশোরী বয়সে তাকে এখানে পাঠানো হয়েছিল, কারণ লন্ডনে বোমা বর্ষণের আতঙ্ক ছিল। আর সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাস মহামারীর সময় তিনি এখানে স্থায়ীভাবে থাকছিলেন।

বেলা ৩টা
উইন্ডসর ক্যাসেলের প্রবেশের জন্য ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ লং ওয়াক-এ নামে আরেকটি শোভাযাত্রায় অংশ নেবে শবযান।

এই সড়কের দুধারে সেনা সদস্যরা দাঁড়িয়ে থাকবেন। সাধারণ মানুষদের শোভাযাত্রা দেখার জন্য লং ওয়াকে প্রবেশাধিকার দেয়া হবে।

আশা করা হচ্ছে পরের দিকে রাজা এবং রাজপরিবারের সিনিয়র সদস্যরা উইন্ডসর ক্যাসেলের ভিতর কোয়ার্ডরেঙ্গেলের কর্টেজে যোগ দেবেন।

প্রাসাদের সেবাস্টোপোল এবং কারফিউ টাওয়ারের ঘণ্টা প্রতি মিনিটে বাজানো হবে। প্রাসাদের প্রাঙ্গণথেকে তোপধ্বনি করা হবে।

বেলা ৪টা
সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলে কফিনটি নেয়া হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার জন্য। রাজপরিবারের সদস্যদের বিয়ে, দীক্ষা ও শেষকৃত্য হয় এই গির্জায়। এখানেই ডিউক এবং ডাচেস প্রিন্স হ্যারি ও মেগানের বিয়ে হয়েছিল ২০১৮ সালে।

রানির স্বামী প্রিন্স ফিলিপের শেষকৃত্য হয়েছিল এখানে। অপেক্ষাকৃত কম মানুষ সমবেত হবেন এখানে। অনেকটা ব্যক্তিগত ধর্মসভা করা হবে যেখানে প্রায় আট শ’ অতিথি থাকবেন।

এই ধর্মসভা উইন্ডসরের ডিন ডেভিড কনার পরিচালনা করবেন। ক্যান্টারবারির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবির আশীর্বাদ নিয়ে সভাটি হবে।

রানির রাজত্বের শেষ হিসেবে নানা ঐতিহ্য প্রতীকী হিসেবে স্বরণসভায় উপস্থাপন করা হবে।

এ সময় রানীর মুকুট, রাজকীয় গোলক ও রাজদণ্ড শেষবারের মতো সরিয়ে নেয়া হবে কফিন থেকে। এ সময় আরো কিছু আনুষ্ঠানিকতার পরা রানির কফিন রয়েল ভল্টে নামানো হবে।

বাঁশিবাদক দল প্রার্থনা এবং ‘গড সেভ দ্যা কিং’ গাইবেন। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে বলা হয়েছে বাঁশিবাদক দলের এই পারফরমেন্স রানি ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করে গিয়েছেন।

বেলা ৪টা ৩৫
শেষকৃত্য অনুষ্ঠান শেষ হবে। রাজা ও রাজপরিবারের সদস্যরা চ্যাপেল ছেড়ে যাবেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা
পারিবারিক ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে সেন্ট জর্জেস চ্যাপেলের অভ্যন্তরে অবস্থিত রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেলে রানিকে তার স্বামী ডিউক অব এডিনবরার সাথে সমাহিত করা হবে।

তার সমাধির উপর মার্বেলের ফলকে খোদাই করে লেখা থাকবে ‘দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯২৬-২০২২’।
সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com