শুক্রবার, ০৩:৩২ পূর্বাহ্ন, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদীতে সন্ত্রাস-মাদক বিরোধী র‌্যালি ও আলোচনা সভা সারাদেশে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি, মানববন্ধন হাসিনার দালালরা বিভিন্ন অপকর্মের ফাইল পুড়িয়ে দিয়েছে : সারজিস শেখ হাসিনাকে পুনর্বহালের ষড়যন্ত্র বিএনপি মেনে নেবে না : জয়নুল আবদিন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কোনো দেশের সম্পৃক্ততা পেলে দায়ী করা হবে-তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎহীন সচিবালয়, বন্ধ দাপ্তরিক কার্যক্রম সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন ময়মনসিংহে ডাম্পট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের নিহত ৪ পেঁয়াজের দাম কমছেই, খুশি ভোক্তারা প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে অসংখ্য মিল-কারখানা, বেকারের আর্তনাদ

এই লজ্জা কোথায় লুকাবো আমরা বাংলাদেশিরা?

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৪৪ বার পঠিত

টানা ৩২ বছর টাঙ্গাইল জেলার মধুপুরগড়ে অবস্থিত কালিয়াকৈরে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার পর মারা যান নিউজিল্যান্ডের অধিবাসী ৭৪ বছর বয়স্ক ডাক্তার এড্রিক বেকার। গ্রামের সবার কাছেই যিনি ডাক্তার ভাই হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হলে অনেকেই চেয়েছিলেন- উনাকে ঢাকাতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা দিতে। তিনি ঢাকা যাননি। তাঁর তৈরি করা মধুপুরের ওই হাসপাতালেই তিনি ২০১৫ সালে মারা যান এবং হাসপাতালের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়।

মৃত্যুর পূর্বে তিনি চেয়েছিলেন- এই দেশের কোনো মানবতবাদী ডাক্তার যেন গ্রামে এসে তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের হাল ধরে। ডা: বেকার তার শেষ ইচ্ছা পোষণ করে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে ডাক্তার হয়ে বের হচ্ছে। এদের মধ্য থেকে অন্তত একজন ডাক্তার চলে আসবেন আমাদের এই গরিবের হাসপাতালে। নিজেকে নিয়োজিত করবেন গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায়।

কিন্তু হানিফ সংকেতের ইত্যাদিতে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুসারে – ডাঃ বেকারের মৃত্যুর ৪ বছর হয়ে গেলেও এ দেশের একজন ডাক্তারও তাঁর সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি।

দেশের কেউ সাড়া না দিলেও তাঁর আহ্বানে সূদর আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছেন- আরেক মানবতাবাদী ডাক্তার দম্পতি জেসিন এবং মেরিন্ডি। যে দেশে যাওয়ার জন্য দুনিয়ার সবাই পাগল। শুধু নিজেরা যে এসেছেন তা না। নিজেদের সন্তানদেরও সাথে করে নিয়ে এসেছেন। ভর্তি করে দিয়েছেন গ্রামেরই স্কুলে। গ্রামের শিশুদের সাথে খেলছে। ডাক্তার জেসিন কী সুন্দর করে লুঙ্গি পরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

অথচ আমরা সুযোগ পেলেই গ্রাম থেকে শহরে ছুটি। শহর থেকে বিদেশ পাড়ি দেই। শিশু জন্মের পর থেকেই চিন্তা থাকে কত দ্রুত সন্তানকে আধুনিক মিডিয়াম ইংরেজি স্কুলে বাচ্চাকে পড়াবো। লুঙ্গি পরাতো আমাদের রুচির সাথে আজ বড়ই বেমানান। লুঙ্গি পরতে পারিনা বলতে পারলে- আমাদের আভিজাত্যের পারদ শুধু একটুকু না অনেকটুকুই বাড়ে।

সেই জায়গায় ডাঃ এড্রিক বেকারের মতো ডাঃ জেসন এবং মেরিণ্ডা দম্পত্তি আমাদের এক বিশাল লজ্জায় ফেলে দিলেন।

তারা বলেন, ‘প্রথমে ভাষা শিখতে শুরু করি। ভাত আর পাঙ্গাশ মাছ খাওয়া রপ্ত করেছি। বাঙালি পোশাক পরতে আমরা দুজনেই ভালোবাসি। ডাক্তার ভাই যে পদ্ধতিতে হাসপাতাল চালাতেন, আমরা সে পদ্ধতিই অনুসরণ করছি। এখানে সবাই আন্তরিক।’

এই দম্পতিরও ইচ্ছে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবা করতে চান জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত, মরতে চান এই দেশের মাটিতে।

অথচ আমাদের দেশে কত বড় বড় ডাক্তার আছেন, যারা সামান্য গুলশান-বনানী বা ধানমন্ডি ছেড়ে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালেই যায় না! ট্রান্সফার হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলেও তিন মাসের বেশি থাকেন না, তবদির করে ফিরে যান ঢাকা।

আর হৃদয়বান এই দম্পতি সম্পদ আর সুখের মোহ ত্যাগ করে আমেরিকা ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে এসেছেন টাঙ্গাইলের মধুপুরে। এখন গ্রামের মানুষের কাছে জেসিন হয়ে উঠেছেন নতুন ডাক্তার ভাই।

এই মহান মানুষদেরকে স্যালুট না দিয়ে পারা যায় না।

সংগ্রহীত

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com