শুক্রবার, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

অভাবে পশুর খাবার খাচ্ছেন আফগানরা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ জুন, ২০২২
  • ৮৩ বার পঠিত

যে নান রুটিগুলো বাসি হলে বস্তায় ভরে রেখে দিতেন দোকানি। পরদিন সেগুলো নিয়ে যেতেন পশুপালকরা, খাওয়াতেন তাদের পশুদের। এখন সে খাবারগুলোই বাধ্য হয়ে খাচ্ছেন আফগানিস্তানের ক্ষুধার্ত নাগরিকরা। বাসি রুটির ওই টুকরোগুলোই এখন বাঁচিয়ে রাখছে তাদের। বিবিসি।

কাবুলের একটি নীল গম্বুজ মসজিদের সামনে বাজারের একটি স্টলে বস্তায় করে সাজানো হয়েছে গত কয়েকদিনে বাসি নান রুটিগুলো। দোকানি শফি মোহাম্মদ গত ৩০ বছর ধরে কাবুলের পুল-ই-খেশতি বাজারে বাসি রুটি বিক্রি করছেন। তিনি জানান, আগে দিনে সর্বোচ্চ ৫ জন এই রুটি কিনতেন, এখন তিনি প্রতিদিন ২০ জনের বেশি ক্রেতা পাচ্ছেন।

আফগানিস্তানের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট অবস্থাহত মানুষগুলোকে কঠিন এই বাস্তবতায় কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। গত আগস্টে তালেবান দেশটিকে দখলের পর থেকে মানুষের গড় আয় কমে গেছে এক-তৃতীয়াংশ। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে খাদ্যের দামও। সে কারণে বাসি রুটির ব্যবসায়ী শফি মোহাম্মদের ব্যবসা জমজমাট।

তিনি বলেন, ‘আফগান জনগণের জীবন এই মুহূর্তে একটি পাখির মতো- যাকে একটি খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। যে খাঁচাটিতে খাদ্য নেই, এমনকি পানিও নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মহান স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করছি, তিনি যেন আমার দেশ থেকে এই দুর্দশা ও দারিদ্র্য দূর করেন।’

আফগানিস্তানে রুটি একটি প্রধান খাবার। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে এটি কেনার মতো ক্ষমতা হারিয়েছেন অনেকেই। এই রুটি কিনতে এসেছেন তিন সন্তানের বাবা হাশমতুল্লাহ। বাসি রুটি কিনে একটি শপিং ব্যাগে ভরলেন তিনি। বিবিসিকে বললেন, ‘আমি সকাল থেকে পরিশ্রম করে যা পেয়েছি, তা দিয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু কেনার সামর্থ্য আমার নেই।’ হাশমতুল্লাহ জানালেন, এই রুটি নিয়ে টমেটো এবং পেঁয়াজ দিয়ে রান্না করে খাওয়াবেন তার তিন সন্তানকে।

বাসি রুটি সংগ্রহের পেছনেও একটা গল্প আছে। ময়লা সংগ্রহকারীরা রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল এবং বিভিন্ন বাড়ি থেকে বাসি রুটিগুলো সংগ্রহ করে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে নিয়ে যায়। তারা এটিকে স্টলহোল্ডারদের কাছে বিক্রি করে। তারপর পান সাধারণ ক্রেতা। কিন্তু এখানেও ফুরিয়ে এসেছে রসদ। একজন মধ্যস্বত্বভোগী জানালেন, অর্ধেক দেশ এখন ক্ষুধার্ত।

এ কারণে বাসি রুটির সংগ্রহ সুবিধাজনক নয়। আগে দিনে এক বস্তা রুটি সংগ্রহ হতো। এখন অর্ধেকও হয় না। কারণ, যারা বাসি রুটি ফেলে দিতেন, তাদের অধিকাংশই এখন সেটির ওপর নির্ভর করছেন বলে জানালেন ওই মধ্যস্বত্বভোগী।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com