রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিহত আশরাফুল হকের বন্ধু জরেজকে আসামি করে শাহবাগ থানায় মামলা করেছে নিহতের পরিবার।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় জরেজের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ছিল নিহত আশরাফুল হক (৪২)। তিন দিন আগে বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকা আসেন তিনি। স্ত্রী লাকী বেগম গত বুধবার থেকে স্বামীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন কিন্তু ফোন ধরেন জরেজ মিয়া। তিনি লাকীকে জানান, আশরাফুল বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে লাকী বেগম ভাইকে নিয়ে বদরগঞ্জ থানায় গেলে জানতে পারেন, ঢাকায় নীল রঙের একটি ড্রামের ভেতর থেকে ২৬ টুকরা অবস্থায় আশরাফুলের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আঙুলের ছাপ মিলিয়ে শনাক্ত করা হয় লাশটি।
আশরাফুলের শ্যালক আবদুল মজিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আশরাফুল তার বাবাকে হাসপাতালে রেখে মঙ্গলবার মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজের সঙ্গে ঢাকা যায়। গত বুধবার বিকেল ৫টায় বোনের সঙ্গে তার শেষ কথা হয়। তখন সে বোনকে বলেছে, “বাবাকে হাসপাতালে রিলিজ দিবে, টাকাপয়সা দিছি। বাবাক নিয়া আইসো।”এরপর থাকি আশরাফুলকে কল দিলে তার বন্ধু জরেজ ধরে। আর বলে, আশরাফুল ব্যস্ত আছে, কালেকশনে গেছে।’
আবদুল মজিদ আরও বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে ফোন দিলে আবার জরেজ ফোন ধরে। কিন্তু আশরাফুলকে দেয় না। এ জন্য বোন জরেজের স্ত্রীর কাছে যায়। জরেজের স্ত্রী তাকে ফোন দিলে আশরাফুলের ফোন ধরে না কেন জানতে চাইলে জরেজ বলেন, আশরাফুলের ফোন ড্রেনে কুড়ায় পাইছে। এরপর বোনসহ থানায় আসি। এসে শুনি তাকে খুন করছে। তার লাশ উদ্ধার হইছে ঢাকায়। আমরা হত্যাকারীর বিচার চাই।’
পরিবারের দাবি, সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত আসামিকে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে অবস্থিত কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পাশে নীল রঙের ড্রামের ভেতর থেকে আশরাফুল হকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিন রাতেই খণ্ডিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ‘আঙুলের ছাপের মাধ্যমে খণ্ডিত মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করা হয়।’