কুষ্টিয়ায় হোমিও ডাক্তার সানাউর রহমান হত্যা মামলায় চার জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসাথে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার সময় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর এলাকার মজিবুর রহমানের লেছে আজিজুর ইসলাম, কুবুরহাট দোস্তপাড়ার সামাদ সর্দারের ছেলে জয়নাল সর্দার, মাদ্রাসা পাড়া এলাকার আজিজুল হক খানের ছেলে সাইফুল ইসলাম খান, দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষনোপুর এলাকার আব্দুর রহমান ওরফে কালা কাজীর ছেলে সাইজুজ্জিন কাজী।
কুষ্টিয়া জজ আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২০ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার মজমপুর এলাকার মৃত বজলুর রহমানের পুত্র হোমিও চিকিৎসক সানাউর রহমান এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুজ্জামান মোটর সাইকেলযোগে সদর উপজেলার বটতৈল এলাকার শিশির মাঠের বাগান বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে দুজন কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই সানাউর রহমানের মৃত্যু হয় এবং সাইফুজ্জামান গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় সানাউর রহমানের ভাই আনিছুর রহমান অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দীর্ঘ তদন্ত শেষে দণ্ডপ্রাপ্ত ওই চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়ার মডেল থানার এসআই আজিজুর রহমান।
পরে দীর্ঘ তদন্ত শেষে স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিত্বে অভিযুক্ত ওই চার আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এদিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলামকে হত্যা দায়ে চাচা ওয়াসিম আলী ও ভাতিজা সিফাত বিশ্বাসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়া বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় দেন। একইসাথে তাদেরকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ এপ্রিল বিকাল ৫টার দিকে কুমারখালী উপজেলার বাড়াদি গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে রিয়াজুর আসামিদের উচ্চশব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে রিয়াজুলকে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরের দিন নিহতের ছেলে শহিদুল ইসলাম আসামিদের বিরুদ্ধে কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। নির্ধারিত ধার্য তারিখে আদালতের বিচারক মামলার আসামিদের শাস্তির আদেশ দেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ব্যবসায়ী রিয়াজুল হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর ৯ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।