সিলেট টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের পথে বাংলাদেশ। তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে দিনের শুরুতেই উইকেট দিয়ে এসেছেন ম্যাথু হাম্প্রেস (১৬)। স্লগ সুইপ করতে গিয়েছিলেন, টপ এজ হয়ে বল উঠে যায় ওপরে। শর্ট ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ারে সাদমান ইসলাম নেন ক্যাচ।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সফকারীদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭৭ রান।
সিলেট টেস্টে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের লিড ৩০১ রানের। জবাব দিতে নেমে ৫ উইকেটে ৮৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে আয়ারল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে তারা তুলেছিল ২৮৬ রান।
আয়ারল্যান্ডের ২৮৬ রানের জবাবে জয়-শান্তর সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ৫৮৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ৩০১ রানের লিড পান টাইগাররা। প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ৮৬ রান করেছে আয়ারল্যান্ড। ইনিংস হার এড়াতে ৫ উইকেট হাতে নিয়ে আরও ২১৫ রান করতে হবে আইরিশদের।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে আয়ারল্যান্ডের ২৮৬ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ৩৩৮ রান করেছিল বাংলাদেশ। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৫২ রানে এগিয়ে ছিলেন টাইগাররা। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ১৬৯ ও মোমিনুল হক ৮০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
তৃতীয় দিনের শুরুতেই জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দিনের দ্বিতীয় ওভারে জয় ও চতুর্থ ওভারে প্যাভিলিয়নে ফিরেন মোমিনুল। দুজনই আয়ারল্যান্ড পেসার ব্যারি ম্যাককার্থির বলে আউট হন। ১৪টি চার ও ৪টি ছক্কায় ২৮৬ বলে ক্যারিয়ারসেরা ১৭১ রান করেন জয়। ৫ চার ও ২ ছক্কায় ১৩২ বলে ৮২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন মোমিনুল।
৩৪৬ রানের মধ্যে জয়-মোমিনুল ফেরার পর বাংলাদেশের রান ৪০০ পার করেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং ক্যারিয়ারের ৯৯তম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম। ১০৩ বলে ৭৯ রান যোগ করে বিচ্ছিন্ন হন তারা। ৩ চারে ২৩ রান করা মুশফিককে শিকার করেন আয়ারল্যান্ডের বাঁহাতি স্পিনার ম্যাথু হামফ্রিজ।
মুশফিকের বিদায়ে ক্রিজে শান্তর সঙ্গী হন উইকেটরক্ষক লিটন কুমার দাস। রানের গতি বাড়িয়ে ১১৮তম ওভারে বাংলাদেশের রান ৫০০ স্পর্শ করেন তারা। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এই নিয়ে ১৩তমবারের মতো ইনিংসে ৫০০ রান স্পর্শ করলেন টাইগাররা।
এরপর ৫৩ বলে টেস্টে ১৯তম হাফসেঞ্চুরির স্বাদ নেন লিটন। শেষ পর্যন্ত ৮ চার ও ১ ছক্কায় ৬৬ বলে ৬০ রান তুলে হামফ্রিজের তৃতীয় শিকার হন লিটন। শান্তর সঙ্গে ১০৭ বলে ৯৮ রানের জুটি গড়েন এই ডান-হাতি ব্যাটার।
লিটন ফেরার পর টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৮তম ম্যাচে অষ্টম সেঞ্চুরি তুলে নেন শান্ত। সর্বশেষ পাঁচ ইনিংসে তৃতীয় সেঞ্চুরি তার। গত জুনে শ্রীলংকা সফরে সিরিজের প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ১৪৮ ও অপরাজিত ১২৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
১১২ বলে সেঞ্চুরি পাওয়ার পরই আউট হন শান্ত। অফ-স্পিনার এন্ডি ম্যাকব্রিনের বলে লেগ বিফোর আউট হন টাইগার দলনেতা। ১৪ চারে ১১৪ বলে ১০০ রান করেন শান্ত। এতে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ব্যাটিং অর্ডারে উপরের সারির প্রথম চার ব্যাটারই (জয় ১৭১, সাদমান ইসলাম ৮০ ও মোমিনুল ৮২) অন্তত হাফসেঞ্চুরির দেখা পেলেন।
শান্তকে শিকার করে টেস্টে আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের রেকর্ড গড়েন ম্যাকব্রিন। ১০ টেস্টে ২৬ উইকেট আছে তার। ৭ টেস্টে ২৫ উইকেট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেলেন পেসার মার্ক অ্যাডায়ার।
দলীয় ৫৪৫ রানে শান্ত ফেরার পর আরও ২ উইকেট হারিয়ে ৪২ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ৮ উইকেটে ৫৮৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন টাইগাররা। টেস্টে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় এবং দেশের মাটিতে সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ৩০১ রানের লিড পান টাইগাররা।
হামফ্রিজ ১৭০ রানে ৫ উইকেট নেন। এটি তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা বোলিং। ৩০১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে দলীয় ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ওপেনার কেড কারমাইকেলকে ৫ রানে বোল্ড করেন পেসার নাহিদ রানা।
দ্বিতীয় উইকেটে বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে ৮৩ বলে ৪৭ রান যোগ করেন আয়ারল্যান্ডের আরেক ওপেনার পল স্টার্লিং ও হ্যারি টেক্টর। ৭ চারে ৪৩ রান করে রান আউট হন স্টার্লিং।
দলীয় ৬১ রানে স্টার্লিং ফেরার পর আয়ারল্যান্ডকে ইনিংস হারের শঙ্কায় ফেলে দেন দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও অভিষিক্ত হাসান মুরাদ।
টেক্টরকে ১৮ রানে তাইজুল এবং কার্টিস ক্যাম্ফারকে ৫ ও লরকান টাকারকে ৯ রানে শিকার করেন মুরাদ। ফলে ৫ উইকেটে ৮৬ রানে দিন শেষ করেছে আয়ারল্যান্ড। মুরাদ ৮ রানে ২টি, রানা ও তাইজুল ১টি করে উইকেট নেন।