ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বিএনপির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসংগঠন মেয়াদোত্তীর্ণ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলমান। যে কোনো সময় নতুন কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকাল চারটা থেকে রাত পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের একজন একজন করে স্কাইপির মাধ্যমে মতামত নেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সুপার সিক্স বাদ দিয়ে ৮২ নেতার বক্তব্য শোনেন। মতামত দেওয়া নেতারা হলেন সহসভাপতি ২৯ জন, যুগ্ম সম্পাদক ২০ জন, সহসাধারণ সম্পাদক ৩০ জন। এসব নেতাদের সঙ্গে গতকাল বুধবার কথা বলে জানা যায়, নতুন কমিটির জন্য সব মিলিয়ে আট নেতার নাম প্রস্তাব করেছেন। এদের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান কমিটির ৫ জন এবং ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে তিনজন। বর্তমান কমিটির নেতারা হলেন সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সহসভাপতি গোলাম সারোয়ার, সহসভাপতি আনু মোহাম্মদ শামীম, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াছিন আলী। বর্তমান বাইরে ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান। এসব নেতারাই মূলত আলোচনার শীর্ষে অবস্থান করছেন। এ ছাড়া বিভিন্নভাবে আলোচনায় আছেন বর্তমান কমিটির ফখরুল ইসলাম রবিন ও নাজমুল হাসানও।
জানা গেছে, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১০ আগস্টের মধ্যেই নতুন কমিটি দেওয়া হতে পারে। সম্প্রতি, ছাত্রদল, যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতাদের মতামত নেওয়ার পর নতুন কমিটি দিয়েছেন। এবারও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন তারেক রহমান। স্বেচ্ছাসেবক দল সূত্রে জানা যায়, গত একাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরপরই তৃণমূল থেকে সংগঠনকে আরঙ শক্তিশালী করতে উদ্যোগ নেয় বিএনপির হাইকমান্ড। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে দলের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ঢেলে সাজানোর কার্যক্রম শুরু হয়।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদলের মতো সারাদেশে স্বেচ্ছাসেবক দলের ইউনিয়ন, থানা কমিটি গঠন শেষ করা হয়েছে। অনেক জেলা কমিটিও পুনর্গঠন করা হয়েছে। এবার ৬ বছর ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ত্যাগী, যোগ্য আর অভিজ্ঞদের দিয়ে এ কমিটি গঠন করা হবে বলে দলটির নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন।
২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি ও আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক দলের পাঁচ সদস্যের আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। মেয়াদ শেষের প্রায় পাঁচ বছর পর ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ১৪৯ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে সংগঠনের সভাপতি শফিউল বারী বাবু মৃত্যুবরণ করেন। পরে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পর ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩৫২ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয় এবং মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারমুক্ত করে সভাপতি করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ১ জন সভাপতি, ২৯ জন সহসভাপতি, ১ জন সাধারণ সম্পাদক, ২১ জন যুগ্ম সম্পাদক, ৩৪ জন সহসাধারণ সম্পাদক, ১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক, ৬৩ জন সহসাংগঠনিক সম্পাদক, ১০২ জন সদস্যসহ বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে কমিটি ঘোষণা করা হয়।