ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে বর্বর হামলা চলছেই। নতুন করে ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম গাজায় সমুদ্রতীরবর্তী একটি ক্যাফেতে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
এছাড়া গাজা শহর, উত্তরের বিভিন্ন এলাকার স্কুল ও ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রসহ একাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী।
এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাফে, স্কুল এবং খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে বোমা হামলায় কমপক্ষে ৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া একটি হাসপাতালে হামলা চালালে আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সোমবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৬২ জন গাজা শহর এবং ভূখণ্ডের উত্তরে ছিলেন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, আল-বাকা নামে উত্তর গাজার ওই সমুদ্র তীরবর্তী ক্যাফেটিতে নারী ও শিশুসহ অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন একটি জন্মদিন উদযাপন করতে। সেখানে হওয়া হামলায় নিহতদের মধ্যে ইসমাইল আবু হাতাব নামে এক সাংবাদিকও ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোনো ধরনের পূর্বসতর্কতা ছাড়াই সেখানে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ফেলা হয়।
এদিকে গাজা শহরের ইয়াফা স্কুলে আশ্রয় নেওয়া কয়েকশ বাস্তুচ্যুত মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
হামাদা আবু জারাদে নামের একজন জানান, তারা হামলার মাত্র পাঁচ মিনিট আগে সরে যাওয়ার নোটিশ পান। তিনি বলেন, ‘আমরা কোথায় যাবো বুঝতে পারছি না। গত ৬৩০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। প্রতিদিন মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি।’
এছাড়া মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল চত্বরে চালানো আরেক হামলায় আহত হন আরও অনেকে। সেখানে কয়েক হাজার পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। হামলার সময় আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে বিশৃঙ্খলা। অনেকেই দৌঁড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম বলেন, ‘এই হাসপাতালে এর আগেও অন্তত ১০ বার হামলা হয়েছে। প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়া স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর আরেকটি মারাত্মক আঘাত হচ্ছে এই হামলা।’
আল জাজিরা বলছে, ত্রাণের আশায় দাঁড়ানো মানুষকে লক্ষ্য করেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলে খান ইউনিসে বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে খাবারের জন্য অপেক্ষারত মানুষের ওপর চালানো হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন।
জিএইচএফ গত মে মাসের শেষ দিকে সীমিত পরিসরে গাজায় ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে এসব কেন্দ্রে প্রায় প্রতিদিনই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এখন পর্যন্ত এসব হামলায় অন্তত ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত ও ৪ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।