জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) আজ প্রায় ৫,১৫২.৫৫ কোটি টাকা ব্যয় সাপেক্ষে চট্টগ্রামের (ক্যাচমেন্ট ২ এবং ৪) পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য একটি প্রকল্পসহ মোট ৫,৯১৫.৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নের জন্য পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেকের চেয়ারপারসন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
পাঁচটি প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে ১,০৯৫.৯৪ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের অংশ থেকে, ৪,৭৮৭.৫০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা থেকে এবং বাকি ৩২.৫৫ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে। অনুমোদিত পাঁচটি প্রকল্পের মধ্যে দুটি নতুন এবং তিনটি সংশোধিত প্রকল্প।
সভায় অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হলো ৪৫৯.৯৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয়ে প্রথম সংশোধিত প্রস্তাবসহ পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিডের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ, ৯৩.৫০ কোটি টাকা দিয়ে যুব উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সক্ষমতা বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ১১০.১৫ কোটি টাকা খরচসহ মংলা বন্দরের আধুনিক বর্জ্য ও অবমুক্ত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা, ১ম সংশোধিত প্রকল্প, এবং ৯৯.৮৪ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় সহ জরুরি বহু খাতের রোহিঙ্গা সংকট ব্যবস্থাপনা ২য় সংশোধিত প্রকল্প।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কিছু নীতিগত বিষয় সমন্বয় করার এখন সময় এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতা গ্রহণের পর অন্তর্র্বতীকালীন সরকার উন্নয়ন প্রকল্পগুলোকে দুর্নীতি ও অনিয়মমুক্ত করার দিকে নজর দিয়েছে। এখন তারা প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈঠকে উপদেষ্টারা মানবসম্পদ, শিক্ষা এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর ক্ষেত্রে কিছু নতুন প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে আলোচনা করেছেন।’
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নের হার কম ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিগত বছরের মতো বিভিন্ন কারণে এডিপি ছাঁটাই হতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, দু-একদিনের মধ্যে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের চলমান প্রকল্পগুলো দুর্নীতি ও অনিয়ম পরিহার করে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশন থেকে অনুরোধ করা হবে। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি ব্যক্তিগতভাবে উপদেষ্টাদের চিঠি দেবেন।
তিনি আরেক প্রশ্নকর্তাকে জানান, চলতি অর্থবছরের শেষে, শিক্ষা খাতে বিশেষ করে শিক্ষাগত সরঞ্জাম, বৈজ্ঞানিক ও গবেষণার উপকরণ এবং অন্যান্য সরঞ্জামের জন্য অন্যান্য খাতের তুলনায় আনুপাতিকভাবে বেশি বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে এলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা অধিক সংখ্যায় এগিয়ে আসবে এবং অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারিত হবে।