সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানির জন্য আগামী ৯ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।
আজ বুধবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে তারেক মাসুদের পরিবারের শুনানি করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন।
এর আগে গত বছরের ১১ অক্টোবর সড়ক দুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদের মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে বাস মালিকদের করা আপিলের শুনানি সাত বছর পর শুরু হয়।
২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী মো: ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ ওই মামলায় রায় দেন। এতে তারেক মাসুদের পরিবারকে চার কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছিল। পরে বাস মালিকপক্ষ ক্ষতিপূরণ রায়ে স্থগিত চেয়ে একটি লিভ টু আপিল করলে আপিল করার অনুমতি দেয়া হয়।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিশুক মনির। তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটির সাথে চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। এতে তারেক মাসুদ ও মিশুক মনিরসহ মাইক্রোবাসের পাঁচ আরোহী নিহত হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নিহতদের পরিবারের সদস্যরা মানিকগঞ্জ জেলা জজ আদালতে মোটরযান অর্ডিন্যান্সের ১২৮ ধারায় বাস মালিক, চালক এবং ইনস্যুরেন্স কোম্পানির বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন। পরে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দু’টি হাইকোর্টে বদলির নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন বাদীরা। নিম্ন আদালত থেকে মামলা দু’টি স্থানান্তরে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে হাইকোর্টে ওই আবেদন দু’টি করা হয়। তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথেরিন মাসুদ এবং মিশুক মনিরের স্ত্রী কানিজ এফ কাজী ও তাদের ছেলে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর হাইকোর্টে ওই দু’টি আবেদন করেন। যার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বছরের ৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল দেন।
রুলে সংবিধানের ১১০ অনুচ্ছেদ অনুসারে মামলা দু’টি কেন উচ্চ আদালতে বদলি করা হবে না-তা জানতে চাওয়া হয়। পাশাপাশি মামলা দু’টির নথি তলব করা হয়। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলা ও মোটর ক্লেইমস ট্রাইব্যুনালে করা মামলা দু’টি হাইকোর্টে বদলির আবেদন মঞ্জুর করে রায় দেন হাইকোর্ট। পরে বিচারপতি জিনাত আরার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি শুনানির জন্য পাঠান প্রধান বিচারপতি।