বৃহস্পতিবার, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ইবরাহিম (আ.) যেভাবে হজের ঘোষণা দিয়েছিলেন

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪
  • ৫৫ বার পঠিত
হজ ইসলামের অন্যতম মৌলিক বিধান। প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পবিত্র কাবা শরিফ কেন্দ্র করে বিশ্বের মুসলমানরা হজ পালন করে থাকেন। ভাষা-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠীসহ অন্যান্য বাহ্যিক বৈচিত্র্য ও পার্থক্য থাকলেও আকিদা-বিশ্বাস ও ধর্মের ক্ষেত্রে সব মুসলমান এক ও অভিন্ন। সবার কণ্ঠে দৃপ্তস্বরে ধ্বনিত হয় তাওহিদের অমীয় বাণী।

মানবেতিহাসের সূচনালগ্ন থেকে পবিত্র কাবাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠেছে আল্লাহবিশ্বাসী জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতি। এখান থেকেই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে হেদায়েতের আলো।মক্কার পথে পৃথিবীর যাত্রাকাবাগৃহের নবনির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর আল্লাহ তাআলা ইবরাহিম (আ.)-কে নির্দেশ দেন—‘মানুষের মধ্যে ঘোষণা করে দাও। ঘোষণা দাও—‘তোমাদের ওপর হজ ফরজ।

’ সেই নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি হজের আজান দেন। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে এসেছে : ‘আল্লাহ বলেন, এবং স্মরণ করো, যখন আমি ইবরাহিমের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম সেই গৃহের স্থান, তখন বলেছিলাম, আমার সঙ্গে কোনো শরিক স্থির কোরো না এবং আমার গৃহ পবিত্র রেখো তাদের জন্য, যারা তাওয়াফ করে এবং যারা নামাজে দাঁড়ায়, রুকু করে ও সিজদা করে এবং মানুষের কাছে হজের ঘোষণা করে, তারা তোমার কাছে আসবে হেঁটে ও ক্ষীণকায় উটের পিঠে, তারা আসবে দূর-দূরান্তের পথ অতিক্রম করে। যাতে তারা তাদের কল্যাণকর স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে।’ (সুরা : হজ, আয়াত : ২৬-২৮)আলোচ্য আয়াতের ব্যাখ্যায় এসেছে, ইবনে আবি হাতেম ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, যখন ইবরাহিম (আ.)-কে হজ ফরজ হওয়ার কথা ঘোষণা করার নির্দেশ দেওয়া হয়, তখন তিনি আল্লাহর কাছে আরজি পেশ করেন, এটা তো জনমানবশূন্য প্রান্তর।

ঘোষণা শোনার মতো কেউ নেই। যেখানে জনবসতি নেই, সেখানে আমার আওয়াজ কিভাবে পৌঁছবে? আল্লাহ তাআলা ওহি পাঠান—তোমার দায়িত্ব শুধু ঘোষণা করা। মানুষের কানে পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার।অতঃপর ইবরাহিম (আ.) আবু কুবাইস পাহাড়ে আরোহণ করে দুই কানে অঙুলি রেখে ডানে-বাঁয়ে এবং পূর্ব-পশ্চিমে মুখ করে চিত্কার করে ঘোষণা করেন, ‘হে মানুষেরা! আল্লাহ তোমাদের এ ঘরের হজ করার নির্দেশ করেছেন, যাতে তোমাদের জান্নাত দিতে পারেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে পারেন। সুতরাং তোমরা হজ করো।

এই ঘোষণার পর পৃথিবীর পাহাড়গুলো অবনত হয়ে যায় এবং তাঁর আওয়াজ পৌঁছে যায় পৃথিবীর দিক-দিগন্তে। ইবরাহিম (আ.)-এর এ আওয়াজ আল্লাহ তাআলা সব মানুষের কানে কানে পৌঁছে দেন। এমনকি যারা ভবিষ্যতে কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে আসবে, তাদের কানে পর্যন্ত এ আওয়াজ পৌঁছে দেওয়া হয়। যাদের ভাগ্যে আল্লাহ তাআলা হজ লিখে দিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকেই এ আওয়াজের জবাবে ‘আমি হাজির’, ‘আমি হাজির’ বলে হাজির হওয়ার স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইবরাহিম (আ.)-এর ঘোষণার জবাবই হচ্ছে হজে ‘লাব্বাইক’ বলার আসল ভিত্তি। (কুরতুবি, ১২তম খণ্ড, ২৮ পৃষ্ঠা)

ইবরাহিম (আ.)-এর ঘোষণা মানবমণ্ডলীর কাছে পৌঁছার কারণে কিয়ামত পর্যন্ত হজের ধারা কায়েম থাকবে। মক্কার পথে পৃথিবীর যাত্রা চলছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত চলবে, ইনশাআল্লাহ।

কাসেম শরীফ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com