বৃহস্পতিবার, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

বৃক্ষরাজি : আল্লাহর নেয়ামত

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৯ মে, ২০২৪
  • ৫৬ বার পঠিত

মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের বিভিন্ন নেয়ামত দিয়ে ধন্য করেছেন। পার্থিব জগতে প্রতিটি বস্তু মানবজাতিরর কল্যাণের জন্য সৃজন করেছেন। পৃথিবীকে সাজিয়েছেন হরেক রকম সৃষ্টি দিয়ে। এরমধ্যে অন্যতম হলো, বৃক্ষরাজি। গাছগাছালি জীব-জন্তুকে পরিশোধিত বায়ু দ্বারা জীবন ধারণের বড় ভূমিকা পালন করে থাকে। এ গাছপালার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা, ওষুধপত্র, গৃহ নির্মাণ, আসবাবপত্র ও জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্র আমাদের বিভিন্ন উপকারে আসে। কুরআনের ভাষ্য, ‘রাব্বুল আলামিন তোমাদের জন্যে আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, এ পানি থেকে তোমরা পান করো। এ পানি দ্বারা তোমাদের জন্য উৎপাদন করেন ফসল, জয়তুন, খেজুর, আঙ্গুর ও সর্বপ্রকার ফল।’ (সূরা নাহাল : ১০)

আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টি বর্ষণ করেন, যাতে ভূমি সজীব ও উর্বর হয় এবং তাতে উদ্ভিদ ও বৃক্ষরাজি উৎপন্ন হয়। আল্লাহ তায়ালা জানান দেন, এখনই সময় বৃক্ষ রোপণ করার। কিন্তু আমরা বুঝেও বুঝি না। জনসংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে গাছপালা ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এতে পরিবেশ ও জীব-জন্তুর জীবন-ধারণ দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। বিশেষভাবে বৃক্ষরাজির অভাবে পরিবেশের ওপর বিপর্যয় দেখা দেয়। মরুকরণ, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার প্রকোপ ভয়াবহ আকারে দেখা দেয়। পরিবেশবিজ্ঞানীদের ধারণামতে কোনো দেশের পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় সে দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা অতীব প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশের ৬৫ হাজার বর্গমাইলে মাত্র ১০ হাজার বর্গমাইল বনভূমি রয়েছে। অর্থাৎ আয়তনের মাত্র ১৫ ভাগ। নির্বিচারে বৃক্ষ কাটা, যত্রতত্র বৃক্ষকে অবহেলাভরে পদদলিত করা রীতিমতো দেখা যাচ্ছে সব জায়গায়। এভাবে চলতে থাকলে সুন্দর বৃক্ষময় এলাকা একসময় বৃক্ষশূন্য রূপ নেবে বলে মনে করি।

তাই আমাদের এ ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিভিন্ন ঋতুর প্রাকৃতিক পরিবর্তন হয়। শীত ঋতুতে গাছের পাতা ঝরে যায়। সে সময় বৃষ্টিপাত না থাকায় অনেক বৃক্ষ অঙ্কুরেই মরে যায়। তাই বর্ষার বৃষ্টিপাতে বৃক্ষ রোপণ করলে, তা সহজেই সতেজ হয়ে ওঠে। এ দিকেও আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বৃক্ষের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে। ভেষজ, আসবাবপত্র ও জ্বালানিরূপে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ফলদানকারী বৃক্ষও আছে। আম, জাম, কাঁঠালের ফলন হয়। আসবাবপত্র তৈরিতেও বৃক্ষের কোনো জুড়ি নেই। জ্বালানিতেও বৃক্ষের চাহিদা খুব। কয়লার জন্য বৃক্ষের বিকল্প নেই।

মহান রাব্বুল আলামিন মানবজাতির জন্য বিভিন্ন প্রকার বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। আমাদের পক্ষে এর নাম ও গুণগত কল্পনা করা অসম্ভব। বৃক্ষের লতাপাতাতে রয়েছে চিকিৎসার সবরকম বৈশিষ্ট্য। চিকিৎসকরা অবাক হয়ে পড়েন বৃক্ষের গুণাগুণ দেখে। সুতরাং বৃক্ষকে বাঁচাতে হলে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। বৃক্ষরোপণ অভিযানে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে অংশগ্রহণ করতে হবে। যদি আমরা প্রত্যেকে একটি করে গাছ লাগাই, তাহলে আমাদের দেশে বৃক্ষের কমতি হবে না কখনোই। পরিবেশও আমাদের অনেকটা অনুকূলে চলে আসবে। তাই আসুন দলমত নির্বিশেষ সবাই মিলে গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই।

লেখক : মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ

প্রিন্সিপাল, শ্যামপুর কদমতলী রাজউক মাদরাসা, ঢাকা

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com