পদ্মা সেতুর আলোকোজ্জ্বল উদ্বোধনের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জনগণকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করে শেখ হাসিনার সরকার উল্লাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিসের জন্য এ সিদ্ধান্ত? অন্যদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিনী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বেডে। অথচ তারা তার চিকিৎসা করার ন্যূনতম সুযোগ দিচ্ছে না।
সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনি যে আলোকোজ্জ্বল উদ্বোধনের কথা বলছেন ৬৪টা জেলায়। এটা কিসের জন্য? এগুলো কার টাকায় করবেন? বিভিন্ন দেশের ডেভলপমেন্ট দেখেছি। ৭২ সালে সাগরের নিচ দিয়ে রেল লাইন নিয়ে গেছে- সেখানে এত ঢাকঢোল দেখেনি। ঊনবিংশ শতাব্দীতে লন্ডনে মাটির নিচ দিয়ে ট্রেন লাইন নিয়ে গেছে সেখানে তো এত ঢাকঢোল পেটাতে শুনিনি। আপনি এত ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন কিসের জন্য? যদি আপনার নিজের টাকায় তৈরি করা হতো বা আপনার পৈতৃক সম্পত্তি দিয়ে করা হতো তাহলে একটা কথা ছিল। পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে সাধারণ জনগণের টাকা দিয়ে। রিকশাওয়ালা, সিএনজি ওয়ালা, বাসের ড্রাইভার, ব্যবসায়ীদের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রথমে পদ্মা সেতুর কাজ নিয়েছিল রয়েল ব্যাংক। তারা আপনাদের দুর্নীতির কারণে সরে গেছে। আপনার মন্ত্রী দুর্নীতির কথা বলেছেন। আপনার উপদেষ্টা এই দুর্নীতির সাথে জড়িত। জনগণের ওপর অনেক ঋণ চাপিয়ে দিয়ে সেতু করে এখন বলছেন নিজের অর্থায়নে করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নের বলতে কী বুঝান? তাহলে ঋণ নিয়েছেন কেন? এই মিথ্যা কথা কেন বলছেন? আপনারা তো মিথ্যার ওপর দিয়ে চলছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো উন্নত চিকিৎসা নেই। যদি থাকতো তাহলে মানুষ কেন ঝাঁকে ঝাঁকে ভারত সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য রাষ্ট্রে যায়? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পায়ে হেঁটে জেলখানায় গেলেন। আর হুইল চেয়ারে করে বের হলেন। আপনি কী নির্যাতন করেছেন? আপনি খাবারের মধ্যে কী বিষ দিয়েছেন? গোটা জাতি এটি জানতে চায়।
তিনি বলেন, নারীরা একটা প্রোগ্রাম করেছেন। আর আপনি চারপাশে পুলিশ মোতায়েন করেছেন। আপনার এত ভয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে ও আপনার ভয় যায় না। আপনি বিরোধী দল দমন করার চেষ্টা করছেন। তাদের সভা-সমাবেশ করতে দিতে চান না।
সংগঠনের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।