কূটনীতিকদের চলাচলে পুলিশের নিরাপত্তা উঠিয়ে নেয়া বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে জানতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করে পিটার হাস এ প্রশ্ন করেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান। এছাড়া তাদের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জানতে চেয়েছিলেন, হঠাৎ করে কেন সড়ক নিরাপত্তা (রোড প্রোটেকশন) উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ চার দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি তা বাতিল করে সরকার। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, কোনো দেশ প্রয়োজন মনে করলে আনসার বাহিনীর মাধ্যমে ওই সেবা নিতে পারবে। সে জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে আনসার গার্ড রেজিমেন্ট গড়ে তোলা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়টি আবার বলা হয়েছে। একইসাথে নিশ্চিত করা হয়েছে, কূটনীতিকপাড়ায় কোনো ধরনের নিরাপত্তার ব্যাঘাত ঘটবে, এ রকম কোনো কিছু হতে দেবেন না। কূটনীতিকপাড়া ও তাদের (কূটনীতিক) চলাচল যাতে নিরাপদ থাকে, সেই ব্যবস্থা করা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘ওনারা কিছু সময় চেয়েছিলেন (সড়কে নিরাপত্তার বিষয়ে)। তাদের বলা হয়েছে, যাদের (আনসার গার্ড রেজিমেন্ট) নিরাপত্তার জন্য দেয়া হচ্ছে, তারা খুবই প্রশিক্ষিত। তবে এ বিষয়ে আরো বসা হবে। যদি মনে করা হয়, নিরাপত্তার জায়গায় কোনো অভাব আছে, তাহলে সেটি দেখা হবে।
এই নিরাপত্তার জন্য টাকা পরিশোধ করতে হবে, তা–ও জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি দিয়েছে, সেই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন পিটার হাস। তিনি শুরুতেই বলেন, এটা কাউকে উদ্দেশ করে দেয়া হয়নি। একটি সুন্দর নির্বাচন যাতে হয়, সে জন্যই দেয়া হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘আমি তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ভিসা যার যার দেশের নিজস্ব ব্যাপার। কাকে সেই দেশে ঢুকতে দেবে কি দেবে না, সেটি সেই দেশই জানে, সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই। তারা ভিসা নিয়ে যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটি তাদের নিজস্ব ব্যাপার।’
‘তবে তারা দেশে একটি সুন্দর নির্বাচন চান’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও বিশ্বাস করি ষড়যন্ত্র নয়, কোনো শক্তির অভ্যুত্থান নয় কিংবা বন্দুকের নল নয়। মানুষের ম্যান্ডেটে একটি নির্বাচন হোক। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে, জনগণের ম্যান্ডেট। আপনারাও ( যুক্তরাষ্ট্র) সেটির জন্য উৎসাহ প্রকাশ করেছেন। সে জন্য যে ভিসা নীতি দিয়েছেন, আমরা স্বাগত জানাই।’
সুষ্ঠু ভোটের লক্ষ্যে ভিসা নীতি ঘোষণা করায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ সময় একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরো নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে গণমাধ্যমে খবর আসছে। এ বিষয়ে পিটার হাসের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা? জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপার। সেখান থেকে কী করবে আমার জানা নেই।’