বৃহস্পতিবার, ০২:৩৮ অপরাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

আমাদের জাতীয় জীবনে কবি নজরুলের দর্শনের অভিঘাত

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০২৩
  • ১১১ বার পঠিত

নজরুলকে জাতীয় কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর তার বস্তুভিত্তিক দর্শন কীভাবে আমাদের জাতীয় জীবনে প্রভাব ফেলছে, আজকে কবির ১২৪তম জন্মবার্ষিকীতে সেটা ব্যাখ্যা করার প্রয়াসে বর্তমান আলোচনা। বাংলাদেশকে আর দরিদ্র দেশ বলা হয় না। এবং বলা হয় জাতি ক্ষুণ্নিবৃত্তির ঊর্ধ্বে উঠে গেছে। কিন্তু এগুলো রাজনৈতিক রিটারিক কেবল। বরং বলা যায়, বাংলাদেশের অর্থনীতি বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর জন্য বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ। এই বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নজরুলের দর্শন নিয়ে আলাপ করলে সবচেয়ে জোরালো উচ্চারণ পাই নজরুলের এই বিখ্যাত উক্তিতে : ‘মূর্খরা সব শোনো,/মানুষ এনেছে গ্রন্থ; গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো।’ (‘মানুষ’) এই চরণটিকে যদি একটি শাশ্বত নজরুলীয় বিশ্বাসের বাণী হিসেবে নিই, তা হলে বলতে হয় নজরুলের চিন্তার একটি দিক যদি হয় আধ্যাত্মিক তার আরেকটি দিক হচ্ছে একটি জীবন্ত সামাজিক, অর্থনৈতিক ও মানবিক প্রশ্ন- যে প্রশ্নটির ব্যাখ্যা নজরুল তার সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত এগারোটি কবিতায় এবং সর্বহারা গ্রন্থে নানাভাবে করেছেন।

কবি নজরুল বলছেন, সেই ‘মানুষ’ কবিতায়, এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে আজারির চিন, / বলে, ‘বাবা, আমি ভুখা-ফাঁকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’ ‘গায়ে আজারির চিন’? অর্থাৎ শরীরে দারিদ্র্যের চিহ্ন, যেটি একটি অর্থনৈতিক প্রশ্ন, সেটির আলোচনা করব নজরুলের ব্যবহৃত কতগুলো উপাদানের মাধ্যমে, যেমন- বস্ত্র, বীর্য, দুগ্ধশুষ্ক স্তন, সদ্যোজাত শিশু, ধর্মগ্রন্থ, ইট এবং মদ্য। নজরুল নির্মোহভাবে দেখাচ্ছেন সমাজে এগুলো আধ্যাত্মিক উপাদান হিসেবে দেখানো হলেও বস্তুত নিরেট অর্থনীতির আলোকেই তাদের ব্যবহার।

যেমন, বস্ত্র মানেই হচ্ছে মানুষ নিজের জন্য একটি আবরণ তৈরি করল। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট অনুযায়ী বলা যায়, মানুষ তার বস্ত্রের চাহিদা বেশ ভালোভাবেই পূরণ করল। কিন্তু এই বস্ত্রাচ্ছাদনের প্রক্রিয়ায় যে জিনিসটা যুগপৎ সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করল এবং যেটি নজরুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করল, সেটি হলো বস্ত্র উৎপাদনের শিল্পের মাধ্যমে যেমন বিরাট একটি মালিক শ্রেণি বা পুঁজিপতি গোষ্ঠী তৈরি হলো তার বিপরীতে তৈরি হলো বহুগুণে একটি বস্ত্রকর্মী সমাজ, যাদের জীবন অতিবাহিত হয় কোনোমতে ক্ষুণ্নিবৃত্তি করে। নজরুল যখন বলছেন, ‘জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুধায় কণ্ঠ ক্ষীণ’, তখনই বুঝতে পারি যে প্রায় একশ বছর আগে আমাদের জাতীয় কবি ঠিক বর্তমান বাংলাদেশের একটি চালচিত্র এঁকে ফেলেছিলেন যে বেশিরভাগ মানুষ থাকবে ‘জীর্ণ-বস্ত্র’ গায়ে, যাদের কণ্ঠ ক্ষুধায় এতটা ক্ষীণ হয়ে উঠবে যে তারা প্রতিবাদী স্বর তোলারও শক্তি পাবে না। নজরুল দেখাচ্ছেন যে, বস্ত্র নামের উপযোগ তৈরি করার মাধ্যমে একটি শ্রেণি বরাবর স্ফীত হয়েছে আর সৃষ্টি হয়েছে শোষিতের বিশাল বংশ, যাদের বস্ত্র জীর্ণ, যাদের পেট খালি।

বস্ত্র থেকে আসি বীর্যে। কারণ এই বীর্যের মাহাত্ম্য দিয়ে নারী-পুরুষের মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় অর্থে ভেদাভেদ তৈরি করেছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। নজরুল যেমন মনে করতেন যে, মানুষের মধ্যে সাম্যবাদ যেমন অর্থনৈতিকভাবে সম্ভব হয়নি, তেমনি হয়নি নারী-পুরুষের মধ্যে সমতা আনয়নের প্রচেষ্টাও। ‘বারাঙ্গনা’ ও ‘নারী’ শীর্ষক কবিতাদ্বয়ে এই বৈষম্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে বীর্য উপাদানটির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য। বীর্য প্রাকৃতিক কিংবা শারীরিক ইন্দ্রিয়াধীন, তাই একে নিয়ন্ত্রণাধীন করা কঠিন, তাই এটি জাতভেদ, ধর্মভেদ, সংস্কৃতিভেদ এবং কোনো কোনো স্বভাবে লিঙ্গভেদ মানে না। কিন্তু বীর্যকেও লৈঙ্গিক রাজনীতির আওতায় আনা হলো। বারঙ্গনালয় পুরুষ দ্বারা প্রতিপালিত, অর্থায়নকৃত এবং পুরুষ খদ্দের দ্বারা পূরণকৃত। নজরুল বীর্যের সর্বত্র গমনেচ্ছু প্রবণতার উল্লেখ করে বলছেন, পুরুষ যেমন বীর্য-প্রভাবিত জীব, তেমনি নারীও শারীরিক ক্ষুধাসংবলিত জীব, দুজনেই কামমুখী : ‘দেবতা গো জিজ্ঞাসি-/দেড়শত কোটি সন্তান এই বিশ্বের অধিবাসী-/কয়জন পিতামাতা ইহাদের হয়ে নিষ্কাম ব্রতী/পুত্রকন্যা কামনা করিল? কয়জন সৎ-সতী? / কয়জন করিল তপস্যা ভাই সন্তান-লাভ তরে?’ (‘বারাঙ্গনা’) তা হলে এই নিয়ন্ত্রণহীন যৌনাচারের মধ্যে বীর্যের সর্বত্রগামিতা যেমন সত্য, তেমনি নারীর কামনাও সত্য। ‘স্রেফ পশুর ক্ষুধা নিয়া হেথা মিলে নর-নারী যত, / সেই কামনার সন্তান মোরা! তবুও গর্ব কত।’ (‘বারাঙ্গনা’) ‘তবুও গর্ব কত’ হলো পুরুষ জাতির প্রতি শ্লেষ। পুরুষ পুরুষতান্ত্রিকতার নামে যৌনতাকে ধর্মীয় এবং রাজনীতিকভাবে নারীর ওপর ব্যবহার করে তাকে করেছে বশ্য। এবং এই বশ্যতা স্বীকার করিয়ে নারীকে শুধু যৌনতার ক্ষেত্রে নয়, সাংসারিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিকভাবেও করেছে বশ্যতার শিকার। সংসারের লক্ষ্মী নারী বলে তার বহিঃজীবনের রাজনৈতিক অধিকার করেছে হরণ।

নজরুল বলছেন, ‘শোনো ধর্মের চাঁই-/জারজ কামজ সন্তানে দেখি কোনো সে প্রভেদ নাই।’ (‘বারাঙ্গনা’) কিন্তু সমাজে দেখা যায় যে জারজ সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য নারী সমাজে নিন্দনীয় হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু দায়ী পুরুষটি দিব্যি আর দশজনের সঙ্গে মিলে হয়তো সে নারীকেই দুষছে। ঠিক এই বিষয়টির (জারজ সন্তান) সম্প্রসারিত রূপ দেখতে পাই ‘মসজিদ ও মন্দির’ শীর্ষক প্রবন্ধে, যেখানে কবি এক ভিখারিণীর সদ্যপ্রসূত সন্তানের ওপর আলোকপাত করছেন। ভিখারিণী বলছে, ‘বাছাকে আমার দুধ দিতে পারছি না বাবু! এই মাত্র এসেছে বাছা আমার! আমার বুকে এক ফোঁটা দুধ নেই।’ তখন নজরুল লিখছেন, ‘পাশের একটি বাবু বেশ একটা ইঙ্গিত করিয়া বিদ্রুপের স্বরে বলিয়াউঠিল, ‘বাবা! এই তো চেহারা, এক ফোঁটা রক্ত নেই শরীরে, তবু ছেলে হওয়া চাই।’ ভিখারিণী এতে ক্রুদ্ধ নয়নে তাকালে নজরুলের প্রবন্ধের বর্ণনাকারী মন্তব্য করছেন : ‘আমি যেন তার দৃষ্টির অর্থ বুঝিতে পারিলাম। সে বলিতে চায়, পেটের ক্ষুধা এত প্রচণ্ড বলিয়াই তো দেহ বিক্রয় করিয়া সে ক্ষুধা মিটাইতে হয়!’ তার পর নজরুল মোক্ষম বাক্যটি লিখলেন : ‘যে-লোকটি বিদ্রুপ করিল সে-ই হয়তো ওই শিশুর গোপন পিতা! সে না হয়, তারই একজন আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু অথবা তাহারই মতো মানুষ একজন ওই শিশুর জন্মদাতা।’ ঠিক সে রকম ‘বারাঙ্গনা’ কবিতায় কবি নজরুল নিশ্চিত করছেন যে, ‘অসতী মাতার পুত্র সে যদি জারজ-পুত্র হয়, / অসৎ পিতার সন্তানও তবে জারজ সুনিশ্চয়।’

ধর্মের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে নজরুলের বক্ষ্যমাণ তিনটে রচনা হলো রুদ্র-মঙ্গল গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত ‘মন্দির ও মসজিদ’ এবং ‘হিন্দু-মুসলমান’ প্রবন্ধদ্বয় এবং ‘হিন্দু-মুসলমান ঐক্য’ শীর্ষক একটি অভিভাষণ। এবং এই সাম্প্রদায়িকতা ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে নজরুলের ইট উপাদানটির ব্যবহার তাৎপর্যপূর্ণ।

মানুষ অন্তরেরটা ফেলে বাইরেরটাকে আঁকড়ে ধরে ধর্মের নামে, মসজিদ-মন্দিরের নামে হানাহানিতে মাতে। অথচ মসজিদ মন্দিরে ওই অর্থে সৃষ্টিকর্তা অবস্থান করেন না। তা হলে ধর্মের চর্চার নামে এরা আসলে আঁকড়ে ধরে ইট, যেহেতু ইট দিয়ে তৈরি হয় ধর্মীয় উপাসনালয়গুলো। ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় ‘ইট’ এসেছে মেটাফর হিসেবে ধর্মের অন্তঃসারশূন্য চর্চার ধারণা দিতে গিয়ে। অর্থাৎ পুরো ধর্মীয়বোধসহ আত্মার প্রসারণ তুল্যমূল্য হয়ে গেল ইট নামক জড়বস্তুটির সঙ্গে।

ইটের প্রসঙ্গে তার ‘মন্দির ও মসজিদ’ শীর্ষক প্রবন্ধে পূর্বে উল্লেখিত ভিখারিণী অনাহারের কারণে তার সদ্যপ্রসূত সন্তানের মরদেহ সৎকার করার ব্যাপারে বলছেন, রাস্তায় তখন হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা চলছে, কেউ বর্ণনাকারীর কোলে মৃত শিশুটিকে সৎকারের কাজে সাহায্য করা তো দূরের কথা, ফিরেও তাকাচ্ছে না।

শিশুর লাশ-কোলে আমি বহুক্ষণ সেখানে দাঁড়াইয়া রহিলাম। শিশুর লাশ যেন একটা প্রতিকার প্রার্থনা, একটা কৈফিয়ৎ তলবের মতো দেখাইতে লাগিল। ধর্ম-মদান্ধদের তখন শিশুর লাশের দিকে তাকাইয়া দেখিবার অবসর ছিল না। তাহারা তখন ইট-পাথর লইয়া বীভৎস মাতলামি শুরু করিয়া দিয়াছে।

এমন করিয়া যুগে যুগে ইহারা মানুষকে অবহেলা করিয়া ইট-পাথর লইয়া মাতামাতি করিয়াছে। মানুষ মারিয়া ইট-পাথর বাঁচাইয়াছে। বৎসরের পর বৎসর ধরিয়া বঙ্গজননী তাহার দশ লক্ষ অনাহার-জীর্ণ রোগশীর্ণ অকালমৃত সন্তানের লাশ লইয়া ইহাদের পাশ দিয়া চলিয়া যাইতেছেন, ইহাদের ভ্রুক্ষেপ নাই। ইহারা মানুষের চেয়ে ইট-পাথরকে বেশি পবিত্র মনে করে! ইহারা ইট-পূজা করে! ইহারা পাথর-পূজারি!

মানুষ তাহার পবিত্র পায়ে-দলা মাটি দিয়া তৈরি করিল ইট, রচনা করিল মন্দির-মসজিদ। সেই মন্দির-মসজিদের দুটো ইট খসিয়া পড়িল বলিয়া তাহার জন্য দুইশত মানুষের মাথা খসিয়া পড়িবে? যে এ কথা বলে, আগে তাহারই বিচার হউক।

প্রায় যে ধারাটি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ তার অমর কথাসাহিত্য লালসালুতে ব্যক্ত করেছেন। সেই উপন্যাসটির নায়ক বা খলনায়ক মজিদ ধর্মকে ব্যবহার করেছে মাজারের ইটকে অবলম্বন করে। অর্থাৎ মুসল্লি বা পূজারি যায় ভজনালয়ে তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি অনুরাগবশত কোনো একটা প্রসাদ নিয়ে, কিন্তু মন্দির-মসজিদ অধিকর্তাদের জন্য সেই প্রসাদই হচ্ছে জীবিকা নির্বাহের উপায়। চরম অর্থনীতি এবং তার শিকার সরাসরি শোষিত, নিরন্ন জনগণ।

তার উপন্যাস মৃত্যুক্ষুধা কিংবা সাম্যবাদী ও সর্বহারা কবিতাগুলোর নির্যাস এই যে, মানুষের শরীরই শেষ পর্যন্ত সামাজিক বঞ্চনার শিকারহয়। মানুষ শোষিত হতে হতে ন্যাংটা হয়ে গেলে পেটের ক্ষুধা মেটানোটাই তার পরম লক্ষ্য হয়ে ওঠে।

মাতৃদুগ্ধ, যা কিনা সদ্যপ্রসূতের জীবনরক্ষাকারী দ্রব্য, কিন্তু সেটিও শোষণের রাজনীতির ঘেরে পড়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে, মা হয়ে যাচ্ছে অক্ষম ভিখারিণী। এবং তার মূল কাজ শিশুকে দুগ্ধ দেওয়া, সেটা সে আর করতে পারছে না। ক্ষুধার্ত শিশু এবং দুগ্ধ-শুষ্ক নারী যেন নজরুলের সাম্যবাদী কবিতার স্থায়ী চিত্রকল্প : ‘ক্ষুধাতুর শিশু চায় না স্বরাজ, চায় দুটো ভাত একটু নুন!’ (‘আমার কৈফিয়ৎ’/ সর্বহারা)

নজরুলের বিখ্যাত কবিতা ‘বিদ্রোহী’ মানুষের ইতিবাচকতাপূর্ণ জীবনবোধের কথা বললেও নজরুলের দার্শনিক চিন্তার পরম্পরায় বরং সমাজের বেশির ভাগ মানুষ স্বল্পভাগ মনুষ্যরূপী অসুরের হাতে যে জিম্মি, সে কথা তার রচনায় ব্যবহৃত কতিপয় উপাদান ব্যাখ্যা করে সামনের দিনগুলোতে যে অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে সতর্ক হওয়ার আভাস নজরুলের রচনায় মেলে।

ড. মোহীত উল আলম : সাহিত্যিক, গবেষক ও সাবেক উপাচার্য, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com