করোনাভাইরাসের মহামারিকালে ঝালকাঠি থেকে ২ তরুণ নিখোঁজ হয়। তবে একসঙ্গে নয় ভিন্ন সময়ে নিখোঁজের ঘটনা ঘটে।
তাদের খোঁজে পরিবারের সদস্যরা পুলিশের সহায়তাও চান। কিন্ত দুই বছরধরেই তাদের কোন খোজ মিলেনি। কেটে যায় প্রায় দুই বছর ।
ক্ষীণ হতে শুরু করে তাদের ফিরে আসার সম্ভাবনাও। পরিবারের সদস্যরা যখন তাদের ফিরে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন-ঠিক তখন খবর আসে তাদের খোঁজ মিলেছে। তবে এ খবরে পরিবারের সদস্যদের আনন্দের লেশ মাত্র নেই বরং পরিবার হতবাক। তাদের মুখে হাসিঁর পরিবর্তে এনে দেয় অশ্রু।
কারণ ২ জনই জঙ্গির খাতায় নাম লিখিয়েছে। নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ায়’ তারা যোগ দিয়েছেন।
ওই ২ তরুন হলো সদর উপজেলার বাউকাঠি কালিকান্দা এলাকার হাবিবুর রহমান ওরফে মুরা (২৩) এবং একই জেলার নলছিটি উপজেলার নাচনমহল গ্রামের মিলন তালুকদার ওরফে লামজল (২৪)।।
জানুয়ারির শেষের দিকে সেনাবাহিনী ও র্যাবের যৌথ অভিযানে কক্সবাজার থেকে এ সংগঠনের সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীরকে গ্রেফতার করা হয়।
তখন মোবাইল ফোনে ধারণ করা অস্ত্র প্রশিক্ষণের ভিডিও তার কাছে পাওয়া যায়। এ থেকে ১২ জনের সন্ধান মেলে। যাদের সবার বাড়ি বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায়। এদের মধ্যে ঝালকাঠি জেলার রয়েছে হাবিবুর রহমান ওরফে মুরা (২৩) এবং মিলন তালুকদার ওরফে লামজল (২৪)।
প্রাথমিক পর্যায়ে উদ্ধার হওয়া ভিডিওটি দেখে ৩৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের ২ জনের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাউকাঠি কালিকান্দা এলাকার হাবিবুর রহমান ওরফে মুরা (২৩) এবং একই জেলার নলছিটি উপজেলার নাচনমহল গ্রামের মিলন তালুকদার ওরফে লামজল (২৪)।
২৩ জানুয়ারি ভোরে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলির পর সেনাবাহিনীর হাতে রনবীর ও বাশার মৃধা আটক হয়।
এরপর জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে নতুন জঙ্গি সংগঠনের ব্যাপারে জানা যায়। অভিযানে অস্ত্র ও গোলাবারুদের পাশাপাশি মোবাইল ফোনের ভিডিও উদ্ধার করা হয়। এ ভিডিওর সূত্র ধরে ঝালকাঠির ২ তরুণের খোঁজ মেলে।
২০২১ সালে ওই ২ তরুণ নিজ নিজ বাসা থেকে নিখোঁজ হয়। তবে তাদের মধ্যে আগে থেকে কোনো পরিচয় বা যোগাযোগ ছিল না। করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাদের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে তারা একে একে ঘর ছাড়ে এমন তথ্য একটি সুত্র নিশ্চিত করেন।
সুত্রটি আরো জানান, রাজধানী ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতা চালিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে চেয়েছিল।
সেই লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহিন পাহাড়ি জঙ্গলে তারা ঘাঁটি গাড়ে। সেখানে তারা সদস্যদের অস্ত্র পরিচালনা, বোমা তৈরি এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে।
এ প্রশিক্ষণের নানা সময়ের ভিডিও চিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়। তবে ওই তরুণের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে-সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তরুণদের ধর্ম সম্পর্কে ভুল বুঝিয়ে জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।
এমনভাবে তাদের মগজ ধোলাই করা হয়-বাড়ি ছাড়ার আগে পরিবার অথবা বন্ধুদের সঙ্গেও তারা এসব বিষয়ে আলোচনা করেনি।
উলোলখ্যঃ ঝালকাঠিতে সিরিজ বোমা হামলা হয় এরপর জঙ্গীর হাতে খুন হয় ঝালকাঠি তৎকালিন সরকার পক্ষের আইনজীবী পি.পি. হায়দার হোসাউন।
বেশ কয়েকটি জঙ্গীদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। জঙ্গী হিসাবে বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয় ওই সময়ে। এরপর থেকে ঝালকাঠিতে জঙ্গী আতংক শুরু হয়।
ঝালকাঠি পুলিশ সুপার আফরুজুল ইসলাম টুটুল বলেন, ঝালকঠিতে ঝালকাঠির ওই দুই তরুণ একজন দুই বছর আগে নিখোঁজ হয় অন্যজন এক বছর আগে নিখোজ হয়। ঝালকাঠিতে ২০১৩ সনে জঙ্গী হিসাবে আটক হওয়া ব্যাক্তিরা কয়েকজন ঢাকায় গারমেন্সে চাকুরি করে একজন এলকায় দোকন দেয় ।
এছাড়া রাজাপুর উপজেলায় আটক হওয়া এক ব্যাক্তি বাসে ডিউটি করে বাসেই থাকে এলাকায় আসলে পুলিশের নলেজে দিয়েই আসে তারা স্বাভাবিক জীবনে রয়েছে বলে ধরনা এ পুলিশ কর্মকর্তার। তবে পুলিশ নজরদারীতে রয়েছে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া জেলায় সন্দেহজনক নিখোজ নেই বলে জানান তিনি।