সরকারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে বলেছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংক-সংলগ্ন রাস্তায় ১২ দলীয় জোটের উদ্যোগে ঢাকা বিভাগের সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন।
আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোসহ ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিভাগীয় সমাবেশ করেছে ১২ দলীয় জোট। একই ইস্যুতে রংপুর ও সিলেট বিভাগেও সমাবেশ হয়েছে।
জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, জনগণের সম্মতিবিহীন এই অবৈধ সরকারকে বিদায় করা জনগণের রাজনৈতিক কর্তব্য।
তারা বলেন, স্বাধীন দেশে আজ ভিন্ন মত দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী শাসনের সামাজিক ভিত্তি রচনা করা হচ্ছে। সরকারের কুৎসিত ক্ষমতালিপ্সা রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, রাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। সুতরাং দেশ ও জনগণের স্বার্থেই এই অবৈধ সরকারের পতন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
সমাবেশে বক্তারা চলমান বিরোধী দলগুলোর শান্তিপূর্ণ যুগপৎ কর্মসূচিতে সরকার অব্যাহত উস্কানি দিয়ে সহিংসতার পথে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। এমতাবস্থায় সরকারের যাবতীয় উস্কানি হামলা ও দমন-পীড়ন মোকাবলা করে ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে যুগপৎ ধারায় আরো বেগবান করার জন্য সব বিরোধী দল ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ষড়যন্ত্র নয়, ভোটারবিহীন অনির্বাচিত এবং অসংবিধানিক সরকারের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে পতন ঘটবে।
বক্তারা বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ হা-হুতাশ করছে। সামনে রমজান মাস এখনই দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। বিদ্যুতের দাম গ্যাসের দাম বাড়িয়ে প্রতারণা করে জনগণের কাছ থেকে সব টাকা লুটপাট করে নিচ্ছে।
তারা আরো বলেন, দেশের মানুষ চলমান আন্দোলনে বিজয়ী হয়ে ভোটের অধিকার গণতন্ত্রের দাবি আদায় করে ঘরে ফিরবে। তাই চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শরিক হয়ে অবৈধ সরকার পতনের আন্দোলনকে বেগবান করতে বক্তারা জনগণকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় বিভাগীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, আব্দুল গনি, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মুহাম্মদ আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন, জাগপার সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্য জোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আমিন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব নুরুল কবির পিন্টু, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব জনাব আবুল কাশেমসহ ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
পরবর্তী কর্মসূচি :
গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে ‘পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে ১২ দলীয় জোট।