জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ‘পলাতক থাকায়’ তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মোঃ আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। একইসাথে এ বিষয় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল।
ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাদের কোনো মালামাল পায়নি বলে আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর বিচারক মামলার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে তাদের আদালতে হাজির হতে বিজি প্রেসের মাধ্যমে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন।
দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজি প্রেসের মাধ্যমে তারেক-জোবায়দাকে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে গত বছরের ১ নভেম্বর তারেক ও জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। তাদের গ্রেফতার করতে না পারায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আদালত তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন। একইসাথে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ১৯ জানুয়ারির মধ্যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘোষিত আয়ের বাইরে চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। তবে এ সংক্রান্ত চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। একইসাথে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ টু আপিল করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ লিভ টু আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন।