পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। গত ১৫ দিন ধরে ঝির ঝির হিমেল বাতাস আর শৈত্যপ্রবাহ জেঁকে বসেছে। বৃষ্টির মতো কুয়াশায় ছেয়ে গেছে জনপদ। দেখা মিলছে না সূর্যের।
সোমবার তেতুঁলিয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তারা জানান, সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানায়, গত দু’সপ্তাহ ধরে থেকে ৯ থেকে ১১ ডিগ্রিতে উঠানামা করছে তাপমাত্রা। এছাড়া ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন ধীর গতিতে চলাচল করছে। ব্যাহত হচ্ছে জনজীবন।
তীব্র শীতে মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারণে কাজে যেতে পারছেন না তারা। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত একটানা কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। অসহায় মানুষজন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে অনেকেই কিস্তি আর পরিবারের খাবার যোগাতে বের হচ্ছেন। তবে শীতের কারণে কাজও কমে গেছে। এদিকে শীতবস্ত্র ও গরম কাপড়ের অভাবে ছিন্নমূল ও বয়োবৃদ্ধরা কাবু হচ্ছেন। তারা সহযোগিতার দিকে তাকিয়ে আছেন।
এ অঞ্চলে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে থেকে হিমেল বাতাস আর কুয়াশায় ঢেকে পড়ছে পরিবেশ। সন্ধ্যা নামার আগেই গ্রামাঞ্চলের বেশিরভাগ বাড়িতে খড়কুটো, গাছের পাতা ও পুরানো কাঠে আগুন জ্বালিয়ে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। অনেকে পুরনো কাঁথা, চট গায়ে দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
সদর উপজেলার জগদল বাজারের কামরুন নেহা বলেন, শীতের কারণে জিদানকে পঞ্চগড় শহরে স্কুলে পাঠাচ্ছি না। যেভাবে আজ শীত পড়ছে, তা ছোট ছেলে সহ্য করতে পারবে না।
পঞ্চগড় শহরের জান্নতিুল ফেরদৌস রিক্তা বলেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর অতিরিক্ত শীত। আজকে সবচেয়ে বেশি শীত মনে হচ্ছে। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কষ্টকর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, শীতজনিত কারণে পঞ্চগড় আধুনিক হাসপাতালসহ সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে শিশু, কিশোর, বয়োবৃদ্ধ নারী পুরুষ সর্দি, জ্বর, কাশি, হাঁপানিসহ নানা রকম রোগী ভর্তি হচ্ছেন। বর্তমানে সিটের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রাসেল শাহ জানান, আজ ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্র রেকর্ড করা হয়েছে। উত্তরদিক থেকে হিমালেয়ের হিমেল হাওয়া প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্র ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। সামনে আরো কয়েক দিন শৈত্যপ্রবাহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।