নাটোরের সিংড়ার সুকাশ ইউনিয়নের বামিহাল বাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আ’লীগ নেতাসহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। এক পক্ষের আত্তাব হোসেন (৫০) ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং প্রতিপক্ষের রুহুল আমিন (৪৫) রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়।
রোববার রাত ৯টায় বামিহাল বাজারে পূর্ব বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত আত্তাব হোসেন সুকাশ ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বামিহাল গ্রামের গাজীউর রহমানের ছেলে। আর প্রতিপক্ষ নিহত রুহুল আমিন বামিহাল গ্রামের শাজাহান আলীর ছেলে।
এদিকে এই ঘটনায় সুকাশ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ দু’পক্ষের আরো তিনজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ ও প্রতিপক্ষের মাসুদকে গুরুতর আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সোমবার সকালে বামিহাল বাজারে ২ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বামিহাল গ্রামের আ’লীগ নেতা আত্তাব হোসেনের সাথে সুকাশ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দস ও তার বড় ভাই সুকাশ আ’লীগ নেতা ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিনের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার বিকেল থেকে দু’পক্ষের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে রাতে বামিহাল বাজারে দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে আত্তাব হোসেনসহ তার পক্ষের তিনজন ও আব্দুল কুদ্দুসের পক্ষের দু’জন গুরুতর জখম হয় এবং ঘটনাস্থলেই আ’লীগ নেতা আত্তাব হোসেনের মৃত্যু হয়। এবং আহতদের মধ্যে প্রতিপক্ষ গ্রুপের রুহুল আমিন সোমবার সকালে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম বলেন, আহতরা সবাই ধারালো অস্ত্রে গুরুতর আহত হয়েছেন। আর নিহত আ’লীগ নেতা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তার শরীরে পর্যাপ্ত ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ও পায়ের রগ কাটা রয়েছে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সুকাশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বামিহালে সুকাশ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে তার বাহিনী যুবলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদকে কুপিয়ে গুরুতর জখম ও আ’লীগ নেতা আত্তাব হোসেনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এই বাহিনীর অত্যাচারে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষ সুকাশ ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি ইউপি সদস্য ফরিদ উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, তার পক্ষের রুহুল আমিন ও মাসুদ নামের দু’জনকে কুপিয়ে জখম হয়েছে এবং রুহুল ও মুছা নামের তার দু’জন কর্মীর বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এখন পর্যন্ত দু’পক্ষের দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে ২ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।