অন্য ভাষায় :
সোমবার, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, ২০ মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

মিয়ানমার সঙ্কট : চীন-ভারতের স্বার্থ আর বাংলাদেশের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • ১২ বার পঠিত

রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে চলমান গৃহযুদ্ধের প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে। জান্তা বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্যের পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া এবং সীমান্তের কাছে বাংলাদেশী নাগরিকের মৃত্যুতে নতুন করে নিরাপত্তা হুমকি এবং উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান কিভাবে হবে সেটি নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী ভারত এবং চীনকে সাথে নিয়ে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজছে বাংলাদেশ।

মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধ, রাখাইনে নতুন করে সঙ্ঘাত এবং বিদ্যমান রোহিঙ্গা সঙ্কট মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য পুরো পরিস্থিতি দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে বলেই অনেকে মনে করছেন। একই সাথে মিয়ানমারের রাখাইনকে ঘিরে ভূরাজনীতি এবং পরাশক্তিগুলোর স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকায় মিয়ানমারের সাথে সঙ্কট সমাধান বাংলাদেশের জন্য বড় কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবেও সামনে এসেছে।

এই মুহূর্তে সরকারি হিসেবে ১২ লাখের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে মহাসঙ্কটে রয়েছে বাংলাদেশ। রাখাইনে চীন ও ভারতের যেখানে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা। বর্তমানে রাখাইন এবং মিয়ানমারে যে সঙ্ঘাত চলছে তাতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূরাজনৈতিক অবস্থানের দিক থেকেও রাখাইনকে ঘিরে পরিস্থিতি সঙ্কটের দিকেই যাচ্ছে।

মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘অনেকটা অগোচরে, অদৃশ্যভাবে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখাইন ধীরে ধীরে একটা ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের জন্য জিনিসটা এখন জটিলতর হয়েছে। কারণ আমাদের এতদিন উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো, প্রত্যাবাসন এখন পুরোপুরি ঝুঁকির মুখে। কেউ এখন প্রত্যাবাসনের কথা বলছে না। এখানে বাংলাদেশের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ সেটা হচ্ছে রাখাইনকে স্টেবল করা। যদিও এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় কিন্তু যেহেতু আমরা আক্রান্ত, এই যে গোলাগুলি এসে আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। আমাদের সীমান্ত অঞ্চলে চাষবাসের সমস্যা হচ্ছে।’

রাখাইনে চীন ভারতের স্বার্থ
মিয়ানমারকে ঘিরে চীনের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ এবং বিনিয়োগ সবচেয়ে বেশি। রাখাইনে গ্যাস, বিদ্যুৎ, বন্দরের বড় প্রকল্প গড়ে তুলছে চীন। নিজের স্বার্থে সেখানে বিনিয়োগ করেছে ভারত।

রাখাইনে চীন ভারতে বিনিয়োগ এবং স্বার্থ নিয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক এমদাদুল হক জানান, রাখাইন রাজ্যে চকপিউতে চীন সমুদ্র বন্দর গড়ে তুলেছে। সেখান থেকে তারা গভীর সমূদ্র বন্দরের সাথে দু’টি পাইপলাইন নিয়ে গেছে চীন ভূখণ্ডে। একটা গ্যাস লাইন একটা তেল লাইন। মধ্যপ্রাচ্য থেকে যে জ্বালানি তারা আমদানি করবে সেটা এই পথে কুনমিং পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘চকপিউকে ভিত্তি করে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার বাজারকে মাথায় রেখে চীন সেখানে শিল্পপার্ক গড়ে তুলছে। যেখানে কুড়ি বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। তারা ইকোনমিক কোরিডোরকেও এই চকপিউয়ের সাথে সংযুক্ত করতে চায়। এছাড়া চীনের বেল্ড অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভকে বাস্তব রূপ দেয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে চকপিউ।’

চীনের স্বার্থ নিয়ে এমদাদুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারে চীনের যে স্বার্থ সেটি অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বহুগুণে বিস্তৃত এবং ব্যাপক।

তিন বলেন, ‘চকপিউ বন্দরের কারণে চীন বঙ্গোপসাগরে বাধাহীন প্রবেশাধিকার পাবে একই সাথে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইন্দোপ্যাসিফিক পলিসির মাধ্যমে চীনকে ঠেকানোর যে কৌশল সেটিকেও মোকাবেলা সহজ হবে চীনের জন্য। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রাখাইনে থা শোয়ে গ্যাসক্ষেত্র। এখান থেকে তাদের দক্ষিণাঞ্চলে তিনটি প্রদেশে গ্যাস নিচ্ছে চীন। এছাড়া ইরাবতি নদীতে ১৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলছে চীন।’

অন্যদিকে, রাখাইন রাজ্য ভারতের জন্য ভূ-কৌশলগত স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ভারত অনেকটা বাংলাদেশকে বাইপাস করে কলকাতা থেকে সিতওয়ে অর্থাৎ আগের আকিয়াব বন্দর পর্যন্ত নৌপথকে জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত করেছে। আকিয়াব থেকে কালাদান হয়ে পালেটওয়া এবং এরপর ভারতের উত্তর-পূর্বের মিজোরামের সাথে সড়কপথে সংযোগ সৃষ্টি করছে। এ প্রকল্প উত্তর পূর্বাঞ্চলে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ করবে। রাখাইনে ভারতের এ প্রকল্পের নাম কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট। এ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো নৌপথ ও সড়কপথের মাধ্যম পণ্য আনা নেয়ার জন্য বহুমুখী এক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল হক বলেন, ‘এই যে পরস্পরিক দ্বন্দ্বমুখর দু’টি বৃহৎ প্রতিবেশী যখন এগুলোতে থাকবে তখন আমরা একটা ঝুঁকিতে থাকব সবসময়। ভারতও আমাদের বন্ধু চীনও আমাদের বন্ধু। কিন্তু এখানে রাখাইনকে ঘিরে আমরা কোনো পক্ষভুক্ত হলেই সেটা হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কারণ সেখানে বিরাট একটা ঝুঁকি আমাদের জন্য বিদ্যমান সেটা হচ্ছে রোহিঙ্গা। আপনি যদি সেখানে কোনো ঝুঁকিতে পা দেন পক্ষভুক্ত হন এই রোহিঙ্গা ইস্যুটি অনিশ্চিত হবে।’

সঙ্কট সমাধান কিভাবে?
মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বরাবরই কূটনৈতিক পথে সমাধানের পথে রয়েছে বলেই দৃশ্যমান হয়েছে। রাখাইন তথা মিয়ানমারে পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হলে তার প্রভাব বাংলাদেশের জন্য সুখকর হবে না এটি অনেকের কাছেই স্পষ্ট।

দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবেই সমস্যা সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ এবং অংশীদার দেশগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ চীন এবং ভারত দু’টি দেশকেই পাশে রাখতে চাইছে। সম্প্রতি নতুন মেয়াদে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতে প্রথম দ্বি-পক্ষীয় সফর শেষ করে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে এক সাথে কাজ করতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এক সাথে দু’দেশ কাজ করবে সে বিষয়ে ঐক্যমত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী।

অন্যদিকে, সরকারের আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ মাসে চীনা রাষ্ট্রদূতের সাথে সাক্ষাৎ শেষে বলেছেন মিয়ানমার সঙ্কট সমাধানে চীনকে পাশে চায় বাংলাদেশ।

তবে ভারত চীনের ওপর নির্ভর করে মিয়ানমার ইস্যু সমাধানের কূটনীতি কতটা কাজে দেবে তা নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে কারো কারো মধ্যে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারত এবং চীনের ভূমিকা বাংলাদেশের পক্ষে কার্যকর সমাধানের পথ দেখায়নি। যে কারণে ২০১৭ সালে আসা একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি।

মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা সঙ্কটের দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সহায়তার পাশাপাশি নিজস্ব কূটনৈতিক তৎপরতাও দরকার বলে মনে করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমি এবং অনেকেই মনে করেন যে এনইউজি এবং আরাকান আর্মির সাথে অবশ্যই আমাদের বেসরকারি পর্যায়ে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। সরকার অবশ্যই স্বীকার করতে পারবে না সেটা। কিন্তু পৃথিবীতে এই ঘটনা অহরহ ঘটতেছে। চীনারা কী বলছে তারা আরাকান আর্মিকে অস্ত্র দেয়? বলছে না কিন্তু আরাকান আর্মির সাথে তো তাদের ভালো সম্পর্ক আছে। তাদেরতো অফিসিয়াল সম্পর্ক টাটমাডোর সাথে। তো আমাদেরও এ ধরনের একটি পলিসি নেয়া প্রয়োজন ছিল।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এখানে আবার এটি অনেকে মনে করবেন যে এটা ভারত-চীন হয়তো পছন্দ করবে না। হতে পারে কিন্তু সবকিছুই যে ভারত বা চীনের পছন্দ অনুযায়ী হবে তাতো না। আমাদের পছন্দ অনুযায়ী তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা করেনি। কাজেই আমাদের কিছু পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, যেন করে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার পথ কিছুটা হলেও খুলে যায়।’

মিয়ানমারে শান রাজ্য থেকে আরাকান পর্যন্ত যে দলগুলো যুদ্ধ করছে তারা প্রায় সবাই চীনের মদদপুষ্ট। সেনাবাহিনীর সাথে এবং বিদ্রোহী গ্রুপ দুটির সাথে চীনের সম্পর্ক আছে। রাখাইনে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সাথেও চীনের সুসম্পর্কের রয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন।

তবে মিয়ানমারে সরকার-বিরোধী আরেকটি গ্রুপ আছে যেটি ন্যাশনাল ইউনিটি গর্ভনমেন্ট (এনইউজি)। এরা সু চি’র দল। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এনইউজি মূলত মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় গঠিত বেসরকারি প্রশাসন। সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধী অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনীতিবিদরা মিলে এটি গঠন করেছে। এনইউজির পক্ষে মিয়ানমারে জনসমর্থন রয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিনিধিত্বমূলক কার্যালয় রয়েছে তাদের।

চীনের মূল্যায়ন হচ্ছে এরা পাশ্চাত্যের মাধ্যমে প্রভাবিত এবং এদেরকে যদি বাড়তে দেয়া হয় তাহলে চীনের স্বার্থ এখানে ক্ষুণ্ন হতে পারে। কারণ এনইউজির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট কিছু দিন আগে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাদের কোনো একমুখী নীতি হবে না।

এখান থেকেও চীন তার বার্তা পেয়েছে। সেনাবাহিনী যেহেতু জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে তাই যারাই ক্ষমতাবান হোক তারা যেন চীনের নিয়ন্ত্রিত হয় সে জন্যই চীন এদেরকেও সমর্থন জোগাচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষক এমদাদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘চীনের ভূ-অর্থনীতির ওপর ভারত কোনো ধরনের হস্তক্ষেপের ইনটেনশন প্রদর্শন না করে এবং চীন যদি ভারতের যেটা ভূ-কৌশলগত স্বার্থে সেখানে বিঘ্ন না ঘটায় তাহলে সেখানে পারস্পরিক একটা সম্পর্কের বিষয় আসবে। সেই কাজটা হয়তো বাংলাদেশ করতে পারে। এটা করতে হবে খুব সফিসটিকেটেড ওয়েতে। এটাই হবে কূটনীতি।’

বিশ্লেষকদের সবার মূল্যায়নই বলছেন, বর্তমানে মিয়ানমার সরকার এবং রাখাইনে বিদ্রোহী দু’পক্ষের ওপরই এখন পর্যন্ত সবচে বেশি প্রভাব রয়েছে চীনের।

তৌহিদ হোসেন বলেন, চীন যেহেতু দু’পক্ষের সাথেই আছে এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও মিয়ানমারের যে সমস্যা বাকি পৃথিবীর সাথে, এ কারণে কিন্তু তাদের মধ্যে চীন নির্ভরতা আছে অনেকখানি। চীনের পক্ষেই একমাত্র সম্ভব তাদের কনভিন্স করা যে এই সমাধানটাই হলো তাদের জন্য, আমাদের জন্য এবং চীনের জন্য ভালো। নাহলে স্থিতিশীলতা যে ভবিষ্যতে থাকবে না এই জিনিসটা যদি আমরা চীনকে বোঝাতে সক্ষম হই তাহলে চীনের পক্ষে যথাযথ চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব হবে এই মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের ওপর।

তিনি বলেন, ‘আমি এখনো বিশ্বাস করি যে এই গৃহযুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে আলোচনার মাধ্যমে। আমি মনে করি, একটা স্থিতাবস্থা দাঁড়াবে যখন এরাও গেইন করতে পারবে না, ওরাও লুজ করবে না। আবার ওদের পক্ষেও হয়তো সেই শক্তি অর্জন সম্ভব হবে না যে এদেরকে সরিয়ে দেবে বা হটিয়ে দেবে। তখন কিন্তু আলোচনার টেবিলে বসবে। আলোচনার টেবিলে যদি বসে সেখানে চীন, যুক্তরাষ্ট্র ভারত প্রত্যেকেরই প্রভাব থাকবে। তারা সরাসরি যদি টেবিলে নাও বসে। সেই পরিস্থিতিতে কিন্তু যদি চীনাদের যে যোগাযোগ আছে দু’পক্ষের সাথেই সেটা যদি চীন ব্যবহার করে তাহলে আমি মনে করি যে আমাদের যে সমস্যা, রোহিঙ্গা সমস্যা সেটার সমাধান অনেকখানি সম্ভব।’

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সম্প্রতি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সরকারি বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্যকে ফেরত পাঠাতে পেরেছে বাংলাদেশ।

সরকারি বাহিনীর সদস্যদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি সামনে কোনোভাবেই যেন রোহিঙ্গারা ঢুকতে না পারে সেজন্য সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে বাংলাদেশ।

মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের স্বার্থের দিক থেকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো। আর এক্ষেত্রে সফলতা অর্জনকেই বাংলাদেশের কূটনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com