মরুর বালুকাবেলায় আজ থেকে শুরু হচ্ছে এশিয়ার ক্রিকেট উৎসব—এশিয়া কাপ। আট জাতির এই মহারণ এবার হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। উদ্বোধনী ম্যাচে আবুধাবিতে রাত ৮টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময়) মুখোমুখি হবে আফগানিস্তান ও হংকং।
টুর্নামেন্টের মূল আকর্ষণ নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ১৪ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণকে ঘিরেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে গোটা এশিয়া কাপ। সীমান্তে রাজনৈতিক টানাপোড়েন থাকলেও ক্রিকেট মাঠে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই সবসময়ই রঙিন, আবেগঘন। মরুভূমির হৃদয়ে সেই ম্যাচকে ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে উৎসবের আবহ। মধ্যপ্রাচ্যে ভারত ও পাকিস্তান প্রবাসীদের বিপুল উপস্থিতি দর্শকাসনে রূপ নেবে মহাসমুদ্রে।
এবারের এশিয়া কাপে থাকছে বাড়তি প্রণোদনা—প্রাইজমানি তিন লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের আসরের চেয়ে দেড়গুণ বেশি। আরেকটি বিশেষত্ব হলো, আগামী বছর ভারত-শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটি হবে বড় পরীক্ষা।
বাংলাদেশের জন্য এটি ১৫তম এশিয়া কাপ। ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি মিলে টুর্নামেন্টের মোট ১৭তম আসর এটি। তিনবার রানার্সআপ হওয়া টাইগাররা এবারও চোখ রাখবে ফাইনালের দিকে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মাঠে নামবে লিটন-তাসকিনের বাংলাদেশ। আবুধাবিতে প্রতিপক্ষ হংকং। এরপর গ্রুপপর্বে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ শ্রীলংকা (১৩ সেপ্টেম্বর) ও আফগানিস্তানের (১৬ সেপ্টেম্বর) বিপক্ষে।
টুর্নামেন্টে আট দল দুই গ্রুপে বিভক্ত। প্রতিটি গ্রুপের সেরা দুই দল উঠবে সুপার ফোরে। সেখানে চার দল একে অপরের বিপক্ষে লড়বে। শীর্ষ দুই দল খেলবে ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে। সেক্ষেত্রে ভারত-পাকিস্তান লড়াই তিনবার দেখার সম্ভাবনাও আছে দর্শকদের সামনে।
পাকিস্তান ইতোমধ্যে শারজায় ত্রিদেশীয় সিরিজ জিতে এশিয়া কাপে প্রবেশ করেছে আত্মবিশ্বাসী হয়ে। অধিনায়ক সালমান আগা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘এশিয়া কাপের জন্য আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত।’
তার সেই হুঙ্কারের প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম খেলোয়াড় ও সমর্থকদের প্রতি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেষবার ফেব্রুয়ারিতে দুবাইয়েই মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেই ফাইনালে জয় পেয়েছিল ভারত, যারা এখন এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নও (২০২৩ সালে কলম্বোর ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল)।
এবারও তাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সেই ম্যাচই। তবে বাংলাদেশের তরুণদের ঝলক, শ্রীলঙ্কার পুনরুত্থানের চেষ্টা কিংবা আফগানিস্তানের চমক—সব মিলিয়ে মরুর বুকে জমজমাট ক্রিকেটযুদ্ধের অপেক্ষায় এশিয়া।