বৃহস্পতিবার, ০১:১৪ অপরাহ্ন, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

মৃত্যুর পর ওয়ারিশদের করণীয়

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২
  • ১৩৬ বার পঠিত

মৃত্যু অনিবার্য সত্য। জন্ম যার মৃত্যু তার জন্য অবধারিত। এ মৃত্যু থেকে কেউ রেহাই পাবে না। মৃত্যু থেকে বাঁচার জন্য যদি কেউ শক্ত দুর্গে কিংবা গহিন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকে, মৃত্যু সেখানেও পাকড়াও করবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভালো দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।’ (সূরা আম্বিয়া-৩৫)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের হায়াত ঠিক করে রেখেছেন। হায়াত ফুরিয়ে গেলে মৃত্যুর ফেরেশতা এসে উপস্থিত হবে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ ফরমান, ‘যখন তোমাদের কারো মৃত্যু আসে তখন আমার প্রেরিত ফেরেশতারা তার আত্মা হস্তগত করে নেয়।’ (সূরা আনআম-৬১)

মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার ওয়ারিশদের দায়িত্ব কী? মৃত ব্যক্তি তো আর নিজের কাফন-দাফন নিজে করতে পারবে না। নিজের রেখে যাওয়ার সম্পত্তির ওপর দখলদারিত্ব ফলাতে পারবে না। সুতরাং মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা মৃত্যুর পর চারটি কাজ করবে।

ওয়ারিশদের চারটি কাজ : প্রথম, মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশরা মৃত ব্যক্তির কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করবে। পুরুষ হলে তিনটি, ইজার-লেফাফা-কুরতা। মহিলা হলে পাঁচটি। পুরুষের তিনটির সাথে আরো দু’টি কাপড় সেরবন্দ ও সিনাবন্দের ব্যবস্থা করবে। কবর খনন করবে। নিজে না পারলে যারা কবর খুঁড়তে পারদর্শী তাদের মাধ্যমে কবর খনন করাবে। জানাজার ব্যবস্থা করাবে।
হাদিসে আছে, আর যে ব্যক্তি মৃত ব্যক্তিকে কাফন পরাবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের সূক্ষ্মও পুরু রেশমের বস্ত্র পরিধান করাবেন। যে ব্যক্তি তার জন্য কবর খুঁড়ে তাতে তাকে দাফন করবে, আল্লাহ তার জন্য এমন এক গৃহের সওয়াব জারি করে দেবেন যা সে কিয়ামত পর্যন্ত বাস করার জন্য দান করে থাকে। (রিয়াদুস সালেহিন-১২৯২)

দ্বিতীয়, তার সম্পত্তি, টাকাকড়ি থেকে তার কর্জ আদায় করতে হবে। কর্জ মানুষের হক। যতক্ষণ মানুষ মাফ করবে না, ততক্ষণ আল্লাহও মাফ করবেন না। মৃত ব্যক্তির নড়াচড়া করার ক্ষমতা নেই। হাদিসে আছে, যার নিয়ন্ত্রণে আমার প্রাণ তাঁর কসম। যদি কোনো ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়, আবার জীবন লাভ করে; আবার শহীদ হয় এবং আবার জীবিত হয়, পরে আবার শহীদ হয়, আর তার ওপর কর্জ থাকে, তবে তার পক্ষ থেকে সে কর্জ আদায় না হওয়া পর্যন্ত সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। (নাসায়ি- ৪৬৮৪)

তৃতীয়, মৃতব্যক্তির বৈধ ওসিয়ত পূরণ করবে। যেমন কেউ ওসিয়ত করল, আমি মারা যাওয়ার পর আমার এই টাকাগুলো দিয়ে একটা মাদরাসা করে দেবে। অথবা কেউ বলল, এই টাকাগুলো দিয়ে ১০ জন মাদরাসার গরিব ছাত্রদের খানা খাওয়াবে। তাহলে তার সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে তার ওসিয়ত পূরণ করতে হবে।

যদি কেউ ওসিয়ত করে যায়, আমার মৃত্যুর পর এই টাকাগুলো অমুক জায়গায় গানের আসর হবে, সেখানে দিয়ে দিও। এভাবে আরো যত অবৈধ অসিয়ত আছে, কেউ করে গেলে তা পূরণ করতে হবে না।
চতুর্থ, উপরের তিনটি কাজ করার পর যদি সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকে, ওয়ারিশের মাঝে বণ্টন করে দেবে। বিজ্ঞ আলেমের পরামর্শে যার যতটুকু প্রাপ্য ভাগ করে নেয়া।

পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা মনে করি মানুষ মরে যাওয়ার পর চারদিনা, চল্লিশা, পনেরো পিঠা ও বছর শেষে একটি মেজবান দিলেই আমাদের দায়িত্ব শেষ! অথচ এসব কিছু কুসংস্কার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com