অন্য ভাষায় :
রবিবার, ০৩:৫০ অপরাহ্ন, ০২ জুন ২০২৪, ১৯শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর উপায়

প্রফেসর কর্নেল ডা: জেহাদ খান
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২
  • ৭৫ বার পঠিত

মহান আল্লাহ আমাদের শরীরে অধিকাংশ অঙ্গ একজোড়া করে সৃষ্টি করেছেন যেমন দুই চোখ, কান, হাত, পা, ফুসফুস, কিডনি, ওভারি (ডিম্বাশয়), অণ্ডকোষ ইত্যাদি। একটি নষ্ট হয়ে গেলে আরেকটি দিয়ে মোটামুটি কাজ চলে। আর একটি করে অঙ্গ হচ্ছে হৃৎপিণ্ড, যকৃৎ (লিভার), প্লীহা (স্পি­ন) ও জরায়ু। কোনো কোনো রোগে জীবন বাঁচানোর জন্য বা সুচিকিৎসার জন্য জরায়ু ও প্লীহা ফেলে দিতে হয়। অর্থাৎ এ দুটো অঙ্গ ছাড়াও মানুষের বেঁচে থাকা সম্ভব। যকৃৎ হচ্ছে এমন একটি অঙ্গ যার ৮০% নষ্ট হয়ে গেলেও বাকি ২০% থেকে আবার কিছু দিনের মধ্যে পূর্ণ যকৃৎ তৈরি হয়ে যায়। হৃৎপিণ্ড হচ্ছে এর ব্যতিক্রম। এর সামান্য অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আর ঠিক করা সম্ভব হয় না। হৃদরোগে পৃথিবীর অনেক দেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। অন্য কোনো অঙ্গ রোগাক্রান্ত হলে এত দ্রুত মানুষ মৃত্যুবরণ করে না যেমন হৃদরোগের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক রোগী হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বা এক ঘণ্টার মধ্যেই মারা যায়। কাজেই এই হৃৎপিণ্ডের যত্নের ব্যাপারে আমাদের মনোযোগী হওয়া দরকার। হৃৎপিণ্ড যেমন অনেক মূল্যবান, এর চিকিৎসাও তেমনি ব্যয়বহুল। অথচ আমরা অল্প খরচে হৃদরোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে পারি যা আলোচনা করছি।

হৃৎপিণ্ড নিয়ে মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে হৃৎপিণ্ডের গোলাকৃতি একটি ছবি আঁকা হয়। আসলে এটি হচ্ছে একটি গরুর হৃৎপিণ্ড যার সামান্যই ভালোবাসা আছে (গাভীর স্বল্পকালীন মাতৃস্নেহ ব্যতীত)। মানুষের হৃৎপিণ্ড হচ্ছে পিরামিড আকৃতির যার চূড়া নিচের দিকে থাকে। প্রত্যেকবার এটি ০.৩ সেকেন্ড কাজ করে (systole), বিশ্রাম করে ০.৫ সেকেন্ড (Diastole)। অর্থাৎ তার কাজের চেয়ে বিশ্রামই বেশি। এভাবেই মহান আল্লাহ এমন একটি অঙ্গ সৃষ্টি করেছেন যা অনবরত নিশি-দিন, সারা জীবন কাজ করে চলেছে; এর থেমে যাওয়া মানে জীবন থেমে যাওয়া।

মহান আল্লাহ বলেন, ‘আকাশসমূহ ও জমিনের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন’। (কুরআন ৪২:৪৯)

প্রাণিজগতে তিনি যেভাবেই চেয়েছেন সেভাবেই হৃৎপিণ্ড সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী (Etruscan shrew)-এর হৃৎপিণ্ড সঙ্কুচিত হয় মিনিটে ১২০০ বার আর শ্বাস নেয় ৮০০ বার। মানুষের এমন হলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সে মারা যাবে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী তিমির হৃৎপিণ্ড চলে মিনিটে মাত্র আট বার। এরকম হলেও মানুষের পক্ষে বাঁচা সম্ভব নয়। জিরাফের হৃৎপিণ্ডের বাম অংশ অসম্ভব রকমের মোটা। কারণ, তাকে অনেক উঁচুতে রক্ত সরবরাহ করতে হয়। অক্টোপাসকে একটি নির্দয় প্রাণী হিসেবে মনে করা হয় অথচ এর রয়েছে তিনটি হার্ট এবং সে সন্তানের জন্য জীবন উৎসর্গ করে থাকে। কাঠবিড়ালি সারাক্ষণ দৌড়ঝাঁপ করে থাকে অথচ বাঁচে মাত্র ৫-১০ বছর।

আর কচ্ছপ বসে থেকে বাঁচে প্রায় ৩০০ বছর। এই হচ্ছে মহাজ্ঞানী স্রষ্টার সৃষ্টি নৈপুণ্য। সে তুলনায় আমাদের মানুষের জ্ঞান খুবই সীমিত। ‘তোমাদেরকে খুবই কম জ্ঞান দান করা হয়েছে।’(কুরআন)

মানুষের হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসি। হৃৎপিণ্ডের রয়েছে প্রধানত পাঁচ ধরনের রোগ : ১. জন্মগত রোগ ২. হৃৎপিণ্ডের ভাল্বের রোগ ৩. হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশীর রোগ ৪. হৃৎকম্পনজনিত রোগ ৫. হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীর রোগ। এর মধ্যে রক্তনালীর রোগ সবচেয়ে বেশি মারাত্মক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি বছর প্রায় এক কোটি ৭৯ লাখ লোক রক্তনালী হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে থাকে, যা সব মৃত্যুর মধ্যে ৩১%। হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীর নাম করোনারি আরটারি। করোনাভাইরাসের মতোই এগুলো দেখতে অনেকটা মুকুটের মতো (করোনা অর্থ মুকুট) যা হৃৎপিণ্ডের বাইরের আবরণে ছড়িয়ে থাকে। এই রক্তনালীগুলোর কোনো একটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়, যা সাধারণত মানুষ অনেক সময় ভুলবশত হৃৎপিণ্ডের স্ট্রোক বলে থাকেন। এ রোগ হওয়ার জন্য প্রধানত উচ্চরক্ত চাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি দায়ী। তা ছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, মদ, মেদ (Obesity), রাত জাগা, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকা, স্ট্রেস্ফুল লাইফ, প্রতিযোগিতামূলক জীবনপদ্ধতি ইত্যাদি হৃদরোগের ক্ষেত্রে পরোক্ষ দায়ী।

আমি আগেই উল্লেখ করেছি যে, হৃদরোগ একবার হয়ে গেলে চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল যা অনেক গরিব মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব হয় না বলে তারা চিকিৎসার অভাবে মারা যান। কাজেই আমাদের সামজিক প্রেক্ষাপটে রোগ প্রতিরোধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অসীম জ্ঞান ও সৃষ্টি বৈচিত্র্যের অধিকারী মহান আল্লাহ আমাদের মহামূল্যবান হৃৎপিণ্ড দিয়েছেন। এটি সংরক্ষণের জন্য তিনি কী নির্দেশিকা (Mannua) পাঠিয়েছেন জানা যাক।

কুরআন ও হাদিস থেকে জানা যায় যে, আমরা যদি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা:) নির্দেশিত পথে জীবন পরিচালিত করতে পারি তাহলে হৃদরোগ ও অন্যান্য রোগ অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।

‘আমি অবতীর্ণ করি কুরআন যা মুমিনের জন্য আরোগ্য ও রহমত।’ (কুরআন ১৭:৮২)
বাংলাদেশে প্রায় ৩৫% মানুষ ধূমপান করে থাকে। আমরা পৃথিবীর অন্যতম প্রধান ধূমপায়ী জাতি। একটি গবেষণা অনুযায়ী ২০১৮ সালে বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের কারণে এক লাখ ২৬ হাজার লোকের মৃত্যু ঘটেছে। এই মৃত্যুগুলো প্রতিরোধযোগ্য। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিজ হাতে নিজেদের ধ্বংসে নিক্ষেপ করোনা।’ (কুরআন ২:১৯৫) ‘আর তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা করো না।’ (কুরআন ৪:২৯)

এই আয়াতগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে ৪০০-এর অধিক ফতোয়া রয়েছে যে, ধূমপান হারাম।
২৫% হৃদরোগ ধূমপান, জর্দা, গুলের কারণে হয়ে থাকে। কাজেই কুরআনিক এই মূলনীতি অনুসরণ করে আমরা যদি ওই বিষাক্ত বস্তু বর্জন করতে পারি তাহলে হৃদরোগ অনেক কমে যাবে।

‘প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে ভুলিয়ে রেখেছে যতক্ষণ না তোমরা কবরের সাক্ষাৎ করবে।’ (কুরআন ১০২:১-২) ‘তারা (মুমিনরা)পৃথিবীতে প্রতিপত্তি চায় না।’ (কুরআন ২৮:৮৩)
গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রামের মানুষের তুলনায় শহরের মানুষের মধ্যে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিসের প্রকোপ বেশি। শহরের মানুষের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির লড়াই, অধিক ধন সম্পদের মোহ, স্ট্রেস, ডিপ্রেশন ইত্যাদি গ্রামের মানুষের তুলনায় বেশি। কাজেই আমরা যদি দুঃখে ও সুখে সব অবস্থায় আল্লাহর ওপর ভরসা করে সহজ সরল নিরহঙ্কার জীবনযাপন করতে পারি তাহলে এ শহুরে রোগগুলো হওয়ার প্রবণতা কমে যাবে।

রোজা হৃদরোগ প্রতিরোধের অন্যতম একটি মাধ্যম। মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা:) রমজানের রোজার পাশাপাশি বছরব্যাপী রোজা রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। এতে শরীরের দুর্বল কোষগুলো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় (Autophagy)। এই আবিষ্কারের জন্য একজন জাপানি বিজ্ঞানী নোবেল প্রাইজ পেলেন। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকার অনেক ডাক্তার উপবাস বা রোজার মাধ্যমে চিকিৎসার ব্যাপারে রোগীদের উৎসাহিত করছেন। যুক্তরাষ্ট্রে মরমোন খ্রিষ্টান সম্প্রদায় রয়েছে, যারা আট বছর বয়স থেকে নিয়মিত রোজা রাখেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, তাদের মধ্যে হৃদরোগ ওই দেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর চেয়ে কম।

রাসূল (সা:) আমাদের পাকস্থলীর তিন ভাগের এক ভাগ খাবার দিয়ে পূর্ণ করতে বলেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত কম আহার করলে হৃদরোগসহ কিছু রোগ কম হয়ে থাকে। কুরআনে বেহেশতের খাবার হিসেবে ফল, পাখির গোশত ইত্যাদির উল্লেখ করা হয়েছে। বনি ইসরাইলকে ৪০ বছর সালওয়া নামক পাখির গোশত খেতে হয়েছে। সূরা কাহাফ থেকে জানা যায় যে, মুসা (আ:)-এর শিক্ষাসফরে পাথেয় ছিল ভাজা মাছ। গবেষণায় দেখা গেছে যে, মানুষ যে অঞ্চলে মুরগি, মাছ, ফল, সবজি (Mediterian diet) খেয়ে থাকে তাদের হৃদরোগ কম হয়।

রাসূল (সা:) শারীরিক পরিশ্রমের উৎকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছেন। তিনি রাষ্ট্রপ্রধান হয়েও নিজের হাতে মাটি কেটেছেন, পাথর বহন করেছেন, উটের দড়ি টেনেছেন, একবার কবর খনন করেছেন, ঘর ঝাড়ু দিয়েছেন, জুতা সেলাই করেছেন। তিনি হেঁটে রোগী দেখতে যেতেন। তিনি মানুষকে দূর থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হেঁটে মসজিদে পড়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করতেন, মৃতের লাশ বহনে উৎসাহিত করতেন। তা ছাড়া হজ, তারাবিহ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজেরও রয়েছে শারীরিক পরিশ্রম। রাসূল (সা:)-এর পরিশ্রম ছিল Productive অর্থাৎ তাঁর পরিশ্রম ছিল কোনো কর্ম সম্পাদনের জন্য; শুধু অর্থহীন হাঁটাহাঁটি নয়। যেমন কেউ ১ ঘণ্টা রাস্তায় না হেঁটে বরং ওই সময় বাসায় কাজ করল (ঘর মোছা, পরিষ্কার করা, কাপড় ধোয়া ইত্যাদি)। তাতে নিজের পাশাপাশি পরিবারেরও উপকার হলো। অথচ আমাদের মধ্যে অনেকে রাসূলের এই আদর্শকে অনুসরণ করার ব্যাপারে কম গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।

হৃদরোগ প্রতিরোধের জন্য তেল, ঝাল ও চর্বিবিহীন নানারকম ডায়েটের পরামর্শ দেয়া হয়। অথচ প্রমাণিত যে, আমাদের রক্তের চর্বি ৮০% লিভার তৈরি করে। মাত্র ২০% চর্বি আসে খাবার থেকে। অর্থাৎ এরকম কড়া ডায়েটের গুরুত্ব অনেক কম। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা যে কার লিভার বেশি চর্বি তৈরি করছে বিশেষ করে ৪০ বছর পর থেকে। রাসূল (সা:) সবধরনের খাবারই খেতেন; কিন্তু কম পরিমাণে। গোশত এবং শাকসবজি খাওয়ার জন্য মানুষের দুই রকমের দাঁত রয়েছে। গরুর আছে শুধু ঘাস খাওয়ার জন্য দাঁত। আর বাঘ-সিংহ ইত্যাদির আছে শুধু গোশত খাওয়ার জন্য দাঁত। তাতেও বোঝা যায় যে, মহান আল্লাহ আমাদের সবধরনের খাবার খাওয়ার জন্যই সৃষ্টি করেছেন।

রাসূল (সা:) বলেছেন যে, কেউ যদি না জেনে চিকিৎসা করে সেই দায়ী হবে (ভুল চিকিৎসার জন্য)। এটি ডাক্তারদের জন্য একটি সতর্কবাণী। অর্থাৎ হৃদরোগের মতো গুরুত্বপূর্ণ রোগ চিকিৎসায় বিশেষ করে রিং বসানো, বাইপাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে যথেষ্ট জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে চিকিৎসা প্রদান করতে হবে। অন্যথায় ভুল চিকিৎসার দায় ডাক্তারের।

বর্তমান সময়ের মানসিক অস্থিরতা, ডিপ্রেশন, স্ট্রেস, পারিবারিক অশান্তি, অনিদ্রা ইত্যাদি হৃদরোগের প্রকোপ বৃদ্ধি করতে পারে। এ জন্য মানুষ মেডিটেশন, ইয়োগা ইত্যাদির আশ্রয় নিচ্ছে। অথচ একজন মুসলিমের মানসিক প্রশান্তি আনার জন্য আল্লাহর বিধানই যথেষ্ট। ‘প্রশ্নাতীতভাবে আল্লাহর স্মরণ দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।’ (কুরআন ১৩:২৮)

উপরের সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে জানা গেল যে, অসীম জ্ঞানের অধিকারী মহান আল্লাহ মানুষের জীবনযাপনের জন্য যে সুন্দর বিধান দিয়েছেন তা যেমন আমাদের যেকোনো সমস্যার সুন্দর সমাধান দিতে পারে তেমনি হৃদরোগের প্রতিরোধের জন্য একইভাবে কার্যকর।

লেখক : মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com