বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আহতরা রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন। আজ রবিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে তারা পঙ্গু হাসপাতালের সামনের দুই পাশের সড়কে ব্যারিকেড দেন। এ সময় আহত বেশ কয়েকজন সড়কের ওপর শুয়ে পড়েন।
এদিকে সড়ক অবরোধের কারণে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের উভয় পাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এর আগে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে আহতরা অবস্থান নেন বলে জানা যায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পঙ্গু হাসপাতাল, নিউ সায়েন্স ও চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শতাধিক আহত ব্যক্তি রাস্তায় নেমে এসেছেন। সড়কে শুয়ে অনেকেই স্লোগান দিচ্ছেন। কেউ কেউ স্ট্রেচারে ভর করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। তারাও নানা ধরনের বৈষম্যবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন।
এ সময় জুলাই আন্দোলনের আহতরা ‘দালালি না বিপ্লব, বিপ্লব বিপ্লব’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘আস্থা নাই রে আস্থা নাই’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
আরও দেখা যায়, সড়কের দু্ই লেনে অবস্থান নিয়ে জুলাই আন্দোলনের আহতদের বিক্ষোভের কারণে আগারগাঁওগামী ও আগারগাঁও থেকে শিশুমেলা মোড় পর্যন্ত লিংক রোডে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গাড়িগুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে সামনে পেছনে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
আহতরা জানান, গত তিন মাস আগেও জুলাই আন্দোলনে আহতরা পঙ্গু হাসপাতালের সামনে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। তখন মধ্যরাতে হাসপাতালের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাসহ চারজন উপদেষ্টা তাদের দাবি–দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা সরে যায়। পরে তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে আহতদের স্বীকৃতি এবং পুনর্বাসন, চাকরির ব্যবস্থা, চিকিৎসা ও ভাতা ব্যবস্থার বাস্তবায়ন করার কথা ছিল। এরপর এত দিন তাদের কোনো একটি দাবিও সরকার পূরণ করেনি বলে আন্দোলনকারীরা দাবি করেন।
তাদের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে তাদের তিনটি দাবি না মানা পর্যন্ত তারা সড়কে থেকে সরবেন না। জরুরি ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান তারা। এ ছাড়া প্রত্যেক আহতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ভিত্তিতে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানান।
আহতদের মধ্যে একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে পতন ঘটানোর আন্দোলনের আহতরা টাকা-পয়সা কিছুই চাই না, শুধু সুচিকিৎসা, পুনবার্সন চাই। শেখ হাসিনার পতনের পর যে সরকার আমাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারেনি তাদের কাছে আমাদের আর কোনো আস্থা নাই।’
এ সময় উপদেষ্টাদের প্রতি আহতদের কোনো আস্থা নেই বলে তারা আজ রাস্তায় নেমেছেন বলেও জানান তিনি।