প্রশ্ন : শোবিজ অঙ্গনে আপনাদের সংসার নিয়ে ইতিবাচক ধারণা ছিল সবার। কিন্তু হঠাৎ এমন কী হলো যে, আপনাদের সংসার ভেঙে আলাদা হতে হলো?
তানিয়া আহমেদ : মানুষের জীবনে কখন কী হয়ে যায়, সে নিজেও জানে না। সম্পর্কের জায়গায় কখনো কখনো কোনো না কোনোভাবে কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেই সমস্যা থেকেই দূরত্ব। কিছু বিষয় থাকে ব্যক্তিগত, সেগুলো চাইলেও শেয়ার করা যায় না। দু’জন ভালো মানুষ সবসময় ভালো না-ও থাকতে পারে। কেউ যদি মনে করে, সে নিজের মতো করে থাকবে বা চলবে, সেখানে তো কারোই কিছু করার থাকে না। আবার কেউ ছেড়ে যেতে চাইলে তাকে শত চেষ্টাতেও বেঁধে রাখা যায় না। তবে টুটুল সব কিছু নিয়মের মধ্যেই করেছেন।
প্রশ্ন : আলাদা হওয়ার বিষয়টি আপনাদের সন্তানরা কিভাবে দেখছে?
তানিয়া আহমেদ : সন্তানরা আমার ভালো বন্ধু। সবসময়ই ওদের সব কিছু যেমন আমাকে শেয়ার করে, আমিও সব কিছু সন্তানদের সাথে শেয়ার করি। আমাদের বিষয়টি নিয়ে সন্তানদের সাথে কথা হয়েছে। ওদের বলার পর যেটা ভালো হয়, সেটিই করতে বলেছে।
প্রশ্ন : ব্যক্তিগতভাবে এস আই টুটুলের নতুন সংসারের সিদ্ধান্তকে কিভাবে দেখছেন?
তানিয়া আহমেদ : এখানে আমার দেখায় আর কিছু যায়-আসে না। তবে এটুকু বলতে পারি, টুটুল ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকব। দিন শেষে আমার সন্তানদের বাবা সে। তার যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে সন্তানরা ভালো থাকবে না। সন্তানরা তার বাবাকে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আমাকেও খুব ভালোবাসে। উভয়ের জন্যই ওদের কষ্ট হবে। আমি মনে করি, এটি কাদা ছোড়াছুড়ির বিষয় নয়।
প্রশ্ন : আপনাদের সন্তানরা এখন কার সাথে থাকছে?
তানিয়া আহমেদ : ওরা তো আমার সাথেই আছে। আমি ওদের ভাগ করতে চাই না। যখন যার সাথে ইচ্ছে ওরা থাকতে পারে। যতদূর জেনেছি, সোনিয়ার (টুটুলের নতুন স্ত্রী) আগের ঘরের এক সন্তান আছে। সম্ভবত ছেলে। আমার এক সন্তান বিদেশে চাকরি করছে। আর ছোট সন্তান আমার কাছেই আছে। টুটুল সোনিয়ার সাথেই এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন। আরেকটি বিষয় পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই, আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে সাত-আট মাসের মতো হবে। এখনো এক বছর হয়নি।
প্রশ্ন : বিচ্ছেদের অনেক আগে থেকেই নাকি আপনারা আলাদা থাকতেন। এ বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চান?
তানিয়া আহমেদ : আমরা এক বাসায় থাকলেও এ সময়টা আলাদা থেকেছি। মানসিক দিক থেকে আমাদের দূরত্ব ছিল। অনেক কিছুই মতের অমিলের কারণে হয়েছে। যেগুলো একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।
প্রশ্ন : ডিভোর্সের পর আপনাদের মধ্যে যোগাযোগ বা কথা হয়েছে?
তানিয়া আহমেদ : না কথা হয়নি। মানুষের চিন্তা-চেতনার জায়গা ভিন্ন হয়। সবার চিন্তা-চেতনা এক না-ও হতে পারে। ডিভোর্সের পরও আমি সবসময় চেষ্টা করেছি, যোগাযোগ রাখার। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারিনি। টুটুলের সব জায়গা থেকে আমি কালো তালিকায় আছি। সন্তানদের ভরণপোষণের একটি ব্যাপার থাকে। দু’জন কথা বলে বিষয়টি ঠিক করে নিতাম। তবে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে পারিনি। যোগাযোগের সব মাধ্যম বন্ধ। তবে সন্তানদের সাথে টুটুলের যোগাযোগ হয়।
প্রশ্ন : সংসার করতে গেলে অনেক সমস্যা হয়। কিন্তু সেগুলো তো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা যেত। আপনি কি সেই চেষ্টা করেছিলেন?
তানিয়া আহমেদ : এ প্রশ্নের উত্তর এক বা দুই কথায় দেয়া যাবে না। আমি যখন বিষয়গুলো জানতে পেরেছি, নিজেকে বুঝিয়ে মানিয়ে নিয়েছি। অনেক কিছুই বলতে পারতাম। সেসব বলে তো আর লাভ হবে না। তা ছাড়া টুটুল একটা অবস্থান তৈরি করেছে। তার সম্মান আমাকেই ধরে রাখতে হবে। আমি সবসময় তাকে সম্মানের জায়গায় রাখার চেষ্টা করছি। না চাইলেও অনেক সময় আমাদের অনেক কিছুই মেনে নিতে হয়। সবসময় সৃষ্টিকর্তার কাছে একটা চাওয়াই থাকবে- তারা দু’জন ভালো থাকুক। তিনি ভালো থাকলে সন্তানরা মানসিকভাবে শান্তি পাবে।
প্রশ্ন : আপনি কি নতুন করে জীবন সাজানোর ব্যাপারে কিছু ভাবছেন?
তানিয়া আহমেদ : এ ভাবনার বিষয়টি আমাদের কারো ওপরই নেই। একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই ভালো জানেন। তিনি যেভাবে যখন চাইবেন, সেভাবেই সব হবে। দীর্ঘ ভালোবাসার সংসার টিকিয়ে রাখার কম চেষ্টা তো আর করা হয়নি। সবসময় তো সব চাওয়া পূরণ হয় না। তবে যে যেভাবে ভালো থাকতে চায়, তাকে সেভাবেই ভালো থাকতে দিতে হয়।
প্রশ্ন : আপনাদের বিচ্ছেদের পর টুটুলকে সবাই দোষারোপ করছেন, এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
তানিয়া আহমেদ : কোনো কিছুই ধারণা থেকে করা উচিত নয়। টুটুলের তুলনা টুটুলই। তার বিকল্প কেউ নেই। বাংলাদেশের একজন নামকরা শিল্পী এস আই টুটুল। তাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু মানুষ যা-তা মন্তব্য করছে। এটি মোটেও ঠিক নয়। এটি মনে রাখবেন, আপনাদের (দর্শক-শুভাকাক্সক্ষী) জন্যই আমরা। প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত ভালোলাগা থাকে। প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিগত জীবন আছে। এটি শুধুই ব্যক্তিগত। আমাদের বিষয় আমাদেরই সমাধান করতে হবে, অন্যরা পারবে না। তাই অন্যদের চুপ থাকাই ভালো। আশা করব, খারাপ মন্তব্য করা থেকে সবাই বিরত থাকবেন।