ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশের হাই কমিশন। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল চিঠিপ্রাপ্তির এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এই নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাইল না নয়াদিল্লি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর বলেন, ‘প্রত্যার্পণের বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে একটি নোট ভার্বাল পেয়েছি আমরা। বর্তমানে এই বিষয়ে মন্তব্য করার মতো কিছু নেই।’
সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের সম্মুখীন করার জন্য বাংলাদেশ ফেরত চেয়েছে। ভারতকে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে।’ এবার সেই ‘নোট ভার্বাল’ বা কূটনৈতিক বার্তা পাওয়ার কথা স্বীকার করল ভারত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং তার পরবর্তী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। বাংলাদেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে দাবি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমানের খুনের ঘটনায় বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে ওই দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১৯৮টি ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। হাসিনাসহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে আগেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এবার হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে তার বিচার করতে চাইছে অন্তবর্তী সরকার।
ওই ইঙ্গিত যদিও অক্টোবরের শেষেই দিয়েছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘ফিনানশিয়াল টাইমস’-কে বলেছিলেন, ‘হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আদালতের রায় ঘোষণা হলে আমরা ভারতের সাথে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করব।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দুস্তান টাইমস ও অন্যান্য