ইতিহাস গড়া হলো না বাংলাদেশের, লেখা হলো না প্রোটিয়া বধ রূপকথা। চেষ্টা করেও ভাগ্য বদলাতে পারলেন না মাহমুদউল্লাহ। খুব কাছে গিয়েও পুড়তে হলো আক্ষেপের অনলে। তাতে আবারও বাড়লো দক্ষিণ আফ্রিকাকে টি-টোয়েন্টিতে হারানোর অপেক্ষা।
নাসাও কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে বোলাররা প্রোটিয়াদের ৬ উইকেটে ১১৩ রানে আটকে দিলেও হতাশ করেন ব্যাটাররা। ১০৯ রানে শেষ হয় টাইগারদের ইনিংস, ৪ রানের আক্ষেপে পুড়ে বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ খুব করেই চেষ্টা করেছিলেন, ২ বলে ছয় রানের সমীকরণ মেলাতে জোরের সাথেই ব্যাটটা হাকিয়েছিলেন। তবে এরপর যা হলো, মাহমুদউল্লাহর মাথায় হাত দেয়া বিস্ফোরক চোখই বলে দেয় সেই গল্প। তীরে এসে তরী ডুবার ব্যথা হয়তো এমনই হয়!
১১৪ রানের ছোট লক্ষ্যটা বড় হয়ে উঠে যখন ৫০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। আজও হতাশ করে টপ অর্ডার, সাকিব-শান্ত-লিটনরা ভাঙতে পারেননি ব্যর্থতার বেড়াজাল। একের পর এক ফেরেন হতাশা উপহার দিয়ে।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের আক্ষেপের নাম তানজিদ তামিম। দ্বিতীয় ওভারে রাবাদাকে উইকেট উপহার দিয়ে ফেরন ৯ রানে। ১ উইকেট হারিয়ে ২৯ রান আসে এই সময়ে৷ তবে পাওয়ার প্লে শেষ হতেই যেন তালগোল পাকিয়ে বসে বাংলাদেশ।
সদ্য আক্রমণে আসা কেশভ মহারাজার পাতা ফাঁদে পা দেন লিটন। ফেরেন ১৩ বলে ৯ রান। পরের ওভারে নর্টজেকেও উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন সাকিব (৩)। দলীয় রান পঞ্চাশে পৌঁছুতেই অধিনায়ক শান্তকে হারায় দল। সাকিবকে নকল করেই যেন ফেরা তার। ২৩ বলে ১৪ রান আসে তার ব্যাটে।
এরপর থেকে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে দলকে টানেন হৃদয়। দু’জনের জুটিতে ভাঙা স্বপ্ন জোড়া লাগাতে শুরু করে বাংলাদেশ। তবে এতো সুখ কপালে সয়নি, ৩ ওভার থেকে যখন প্রয়োজন মাত্র ২০ রান, তখন হৃদয় ভাঙেন হৃদয়। ৩৪ বলে ৩৭ রানে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন রাবাদার বলে।
জাকেরকে নিয়ে শেষ ওভার শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ, জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রানের। তবে জাকের- মাহমুদউল্লাহর উইকেট হারিয়ে ৬ রানের বেশি তোলতে পারেনি বাংলাদেশ।
এর আগে তানজিম সাকিবের হাত ধরে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। তাসকিনের সাথে জুটি গড়ে কাঁপিয়ে দেন প্রোটিয়া ব্যাটিং অর্ডার। ৪.২ ওভারে মাত্র ২৩ রানে ৪ উইকেট হারায় তারা।
প্রথম ওভার থেকেই শুরুটা করেন তানজিম সাকিব। ছক্কা-চারে ওভার শুরু করলেও তার প্রায়শ্চিত্ত করেন শেষ বলে। এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন রেজা হেন্ড্রিকসকে। কোনো রান না করেই ফেরেন রেজা।
পরের আঘাতটাও আসে তার হাত ধরেই। এবার কুইন্টন ডি কককেও ভরেন ঝুলিতে। নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসে এই ব্যাটারের স্ট্যাম্প উপড়ে দেন তানজিম। গলার কাঁটা হয়ে উঠা ডি ককের ব্যাটে আসে ১১ বলে ১৮।
এক ওভার পর আরেক প্রোটিয়া হিটার ট্রিস্টান স্টাবসকেও রানের খাতা খোলার আগেই সাকিব আল হাসানের ক্যাচে পরিণত করেন তানজিম। তবে এর মাঝেই উইকেটের খাতা খোলেন তাসকিনও। তার শিকার প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম (৪)।
মাত্র ২৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে অনিশ্চয়তায় দুলতে থাকা দলের হাল ধরেন হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। ১৭.৩ ওভার পর্যন্ত সামলে দেন টাইগার বোলারদের আগ্রাসন। জুটিতে যোগ করেন ৭০ বলে সমান ৭৯ রান।
ক্লাসেনের স্ট্যাম্প ভেঙে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। ৪৪ বলে ৪৬ রানে আউট হন ক্লাসেন। পরের ওভারে মিলারকে ফেরাম রিশাদ। ৩৮ বলে ২৯ রানে আউট হন তিনি। এরপর মোস্তাফিজের দূর্দান্ত শেষ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৩ রানেই শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস