গত বুধবার নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। এরপর পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রোববার কার্যালয়ে প্রবেশ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। প্রবেশের পরই চিরচেনা অফিস দেখে হতভম্ব হন তারা। বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালে প্রিন্স বলেছেন, অফিসের ভেতরে তাণ্ডবের দৃশ্য দেখেছি। এটি দেখে আমরা হতভম্ব।
রোববার দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন শেষে তিনি একথা বলেন। এ সময় একটি গণতান্ত্রিক দেশে বৃহৎ একটি রাজনৈতিক দলের অফিসের এ অবস্থার জন্য সরকারকে দায়ী করেন সৈয়দ ইমরান। ‘কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চালানোর জন্য সরকার দায়ী।’ বলেন তিনি।
ঈমরান সালে প্রিন্স আরো বলেন, একটি সভ্য দেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। যে দল দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছে, সংগ্রাম করছে সেই দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এ অবস্থা দেখে আমরা হতভম্ব।
তিনি বলেন, সারা বাংলাদেশ সরকার যেভাবে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে, ঠিক একইভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় লণ্ডভণ্ড করে দেয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা এতে জড়িত, তাদেরকে দোষী সাব্যস্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
প্রিন্স বলেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সকল নেতার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা দেয়া হয়েছে সেই মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের দফতরের কম্পিউটার সিপি এছাড়া সদস্যদের মাসিক চাঁদার টাকা রাখার আলমারি ভেঙ্গে সবকিছু নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
প্রিন্স বলেন, ‘সরকার ভীত হয়ে আমাদের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে নস্যাৎ করার জন্য এই তাণ্ডব চালিয়েছে। কিন্তু দেশের জনগণ এত প্রতিবন্ধকতার পরেও গণসমাবেশ সফল করার মধ্য দিয়ে এই সরকারকে চপেটাঘাত দিয়েছে।
পল্টনের সমাবেশ করতে না পারায় বিএনপির পরাজয় হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যে জবাবে তিনি বলেন, এটা বিএনপির পরাজয় নয় সরকারের পরাজয় হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঁচ দিন ধরে পুলিশ তালাবদ্ধ রাখার পর আজ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালে প্রিন্সের নেতৃত্বে আইনজীবীদের একটি দল আজ দুপুর ১টায় সেখানে প্রবেশ করেন। সঙ্গে প্রবেশ করেন গণমাধ্যম কর্মীরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিএনপি কার্যালয়ের প্রতিটি কক্ষের বিভিন্ন কাগজপত্রসহ আসবাবপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। লণ্ডভণ্ড দেখা যায় সবকিছু। যেসব কক্ষ তালাবদ্ধ ছিল সে কক্ষগুলোতে ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে তালা কেটে ঢোকা হয়েছে। দেখা যায়, পড়ে আছে সেট কাটা তালা। ছিন্নভিন্ন হয়ে আছে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি। দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য কাচ ভাঙ্গা দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিএনপির দফতরের এক কর্মী বলেন, দফতরের চারটি মনিটর এবং জরুরি কাগজপত্র পুলিশ নিয়ে গেছে। অফিসে ছিল কিছু টাকা পয়সা সেটিও পুলিশ নিয়ে গেছে বলে তিনি দাবি করেন। এবং দফতরের গুরুত্বপূর্ণ নথিসহ দুটি ল্যাপটপ পুলিশ নিয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি। সারাদেশে দলীয় কর্মীদের যে বায়োডাটা ছিল সেটিও পুলিশ নিয়ে গেছে। বিএনপি কার্যালয়ে যে সিসি ক্যামেরা ছিলো পুলিশ সব খুলে নিয়ে গেছে।