বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, টিসিবির ন্যায্যমূল্যের ট্রাকের পেছনে মানুষের ভীড়ই বলে দেয় দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। এই দুর্ভিক্ষ ঠেকাতে হলে সরকারকে হটাতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী যুবদল এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশে আজকে একটা নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। মানুষ বলতে পারে না, টিসিবির ন্যায্যমূল্যের ট্রাকের পেছনে গিয়ে মুখোশ পরে দাঁড়ায়। এরপর সেখানে লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়। সেখানে এক লিটার তেল,একটু চাল, একটু ডাল, একটু আলুর জন্য ধাক্কাধাক্কি করে, মারামারি করে। মানুষকে বাঁচাতে হলে, দুর্ভিক্ষ যেন না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হলে এই সরকারকে হটানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’
আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের অতি মুনাফার কারনে দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে গেল। এর অর্থ কী? এর অর্থ হচ্ছে, এই সরকারের বাজারের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, যত সিন্ডিকেট, সেসব সিন্ডিকেটের প্রধান হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।’
করোনার ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে—প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করতে চাই, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ কবে থেকে শুরু হলো? আর কবে থেকে এ দেশের মানুষ চিৎকার করছে যে, তেলের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, ডালের দাম কমাও। আমরা আর পারছি না। আর দুই বছর ধরে করোনার যে চুরি, যে ডাকাতি আপনারা করেছেন স্বাস্থ্য খাতে, করোনাকে কেন্দ্র করে প্রণোদনা দেওয়ার নামে বড়লোককে সরকারি টাকা দিয়েছেন, গরিবকে আরও গরিব করেছেন। সে কথার জবাব কে দেবে প্রধানমন্ত্রী?’
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যতবারই ক্ষমতায় এসেছে, ততবারই তারা জনগণের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার চেষ্টা করেছে। ১৯৭২-৭৫-এ একই অবস্থা ছিল এবং তাদের দুর্নীতির কারণে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। লক্ষ মানুষ না খেতে পেরে মরে গিয়েছিল। আজকে আবার ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়েই চলেছে।’