শুক্রবার, ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ৩০শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

৭ দিনেও বরাদ্দের চাল পাননি বরিশালের জেলেরা,

এস এম রুহুল আমিন 
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩
  • ৩৯ বার পঠিত
মানবেতর জীবনমা ইলিশ রক্ষায় ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা শুরুর আজ সাতদিন। তবে এখনো বরাদ্দের চাল পাননি বলে অভিযোগ জেলেদের।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিবন্ধিত জেলে ইউনুস আলী।তার অভিযোগ, তিনি এখনো বরাদ্দের চাল পাননি। ফলে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি।একই ইউনিয়নের আরেক জেলে সেলিম মাঝি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘মোরা দেনায় জর্জরিত। মাছ ধরতে না পারলে দেনা পরিশোধ হরমু (করবো) কী দিয়া? ঘরে সয়-সদয় যা আছেলে (ছিল) হ্যা শেষ (সব), এহন খামু কী? হপ্তা গেলেও সরকারেরডে গোনে মোরা কিছু পাই নাই (সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও সরকার থেকে কিছু পাইনি)। ফলে পেডের দায় বাধ্য হইয়া হেদিন মাছ ধরতে গেছি পুলিশ আইয়া জালডু লইয়া গেছে। এহন আরও দেনায় পড়ছি। মহাজনরে জালের দামও দেওন লাগবে।’বরাদ্দের চাল না পাওয়ার বিষয়ে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ইব্রাহিম বিশ্বাস বলেন, আমার ওয়ার্ডে এখনো চাল বিতরণ হয়নি। কেন চাল দেওয়া হচ্ছে না তা চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন।পরে এ বিষয়ে জানতে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরে আলম ব্যাপারীকে ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বরিশাল সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে এমনই অভিযোগ শোনা যায় জেলেদের মুখে। সবার একই অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সাতদিন হয়ে গেলেও এখনো কেউ চাল পাননি।
বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকতারুজ্জামান মিলন। তিনি বলেন, ‘আমার এখানে জেলে আছে দেড় হাজারের বেশি। তিনদিন আগে (চাল) বরাদ্দ পেয়েছি ৮৫০ জনের। চাল দেওয়া শুরু করলেই সবাই চলে আসেন। এ নিয়ে বিপদে আছি। এখন পর্যন্ত ১০০ জেলেকে চাল দিয়েছি। বাকিদের কীভাবে সামলাবো বুঝতে পারছি না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এমন পরিস্থিতি শুধু বরিশাল জেলাতেই না, বিভাগের সব জেলাগুলোতে একই অবস্থা বিরাজ করছে।বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বরিশালের ছয় জেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা তিন লাখ ২২ হাজার ৮৪১। তাদের জন্য এবার মোট বরাদ্দ চালের পরিমাণ সাত হাজার ৬৯৬ টন। এ পর্যন্ত তাদের হিসাবে চাল পেয়েছেন ২০-২৫ শতাংশ জেলে।
বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের দেওয়া ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে হলে ইলিশের সঙ্গে সরাসরি জড়িত জেলেদের ঘরে ঘরে সময়মতো চাল পৌঁছে দিতে হবে। অন্যথায় জেলেদের ইলিশ শিকার থেকে বিরত রাখা যাবে না। জেলেদের ঘরে ঠিকমতো খাবার পৌঁছালে জেলেরা নদীতে নয়, ঘরেই থাকবে।
নিষেধাজ্ঞার সাতদিনেও জেলেদের বরাদ্দের চাল না পাওয়ার বিষয়ে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান  বলেন, জেলেদের বরাদ্দের চাল প্রতিটি উপজেলায় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যারা পাননি তারা দু-একদিনের মধ্যেই পেয়ে যাবেন।
তিনি জানান, বরিশাল জেলায় মোট ৭৫ হাজার নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এদের মধ্যে ৫১ হাজার ৭০০ জনের জন্য বরাদ্দের চাল এসেছে। বাকি প্রায় সাড়ে ২৩ হাজার জেলে পুরোপুরি এ বরাদ্দের আওতার বাইরে থাকছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com