বুধবার, ১২:৪৯ অপরাহ্ন, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
ইসকন ইস্যুতে দেশি-বিদেশি ইন্ধন থাকতে পারে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা, যে নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের লেজ রেখে গেছে : তারেক রহমান বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের স্মরনে গৌরনদীতে স্মরন সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আইনজীবীকে ‘কুপিয়ে হত্যা করল’ ইসকন সদস্যরা অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিবৃতি

৪ হাজার গ্রাহকের শত কোটি টাকা আত্মসাৎ

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২
  • ৮২ বার পঠিত

লাখে ১২ শ’ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা করে মুনাফা দেয়ার প্রলোভনে চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের বিভিন্ন সঞ্চয়ী প্রকল্প, ডিপিএস, এফডিআর, পেনশন পলিসি করেছে হাজারো গ্রাহক। শুধু তাই নয়, ফ্ল্যাট, ডায়াগনস্টিক, স্কুল, হোটেল ব্যবসায় লগ্নি করার প্রলোভন দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে কিছুদিন লভ্যাংশ দিয়ে বিশ্বাস অর্জন করত। এরপর শুরু হতো টালবাহানা।

এভাবে চার হাজার গ্রাহকের শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায় চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতিতে জড়িতরা। তবে র্যাবের জালে ধরা পড়েছে, ভুয়া এই সমিতির দুই কর্ণধার।

প্রায় ৫৬০ জন ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪-এর একটি দল চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো: জাকির হোসেন (৫৪) ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমানকে (৪২) গ্রেফতার করে।

র্যাব-৪-এর অধিনায়ক (সিও) ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতির অফিস থেকে ভর্তি ফরম, ঋণ গ্রহীতার ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র, ক্ষুদ্রঋণ গ্রহীতাদের জীবনবৃত্তান্ত, লিফলেট, সিল, বিভিন্ন নামে সঞ্চয় পাস বই উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ৩৭ বছর আগে এই সমিতি প্রতিষ্ঠা লাভ করে, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর-৮৩। প্রথম দিকে তারা স্থানীয় বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও স্বল্প আয়ের মানুষকে অধিক মুনাফায় সঞ্চয় ও ক্ষুদ্রঋণের প্রতি আকৃষ্ট করত। তারা চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের ব্যানারে আরো বড় পরিসরে কাজ শুরু করে।
তারা টার্গেট করে মিরপুর এলাকার মধ্যবিত্ত, গার্মেন্টকর্মী, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, অটোচালক, সবজি ব্যবসায়ী, ফল ব্যবসায়ী, গৃহকর্মী ও নিম্ন আয়ের মানুষকে উচ্চ মুনাফা দেয়ার আশ্বাসে সঞ্চয়ী পলিসি, এফডিআর, ডিপিএস, পেনশন পলিসি, শিক্ষা পলিসি, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী পার্টনার পলিসিতে আকৃষ্ট করত।

এমন চটকদার ১৮ থেকে ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা এবং ফিক্সড ডিপোজিটের ক্ষেত্রে তিন-পাঁচ বছরের দ্বিগুণ মুনাফা দেয়ার আশ্বাসে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের অনেকে সমিতিতে টাকা জমাতেন। অনেকে নিজের পেনশনের টাকা, গ্রামের ভিটাবাড়ি বিক্রি করা টাকা, বিদেশ থেকে কষ্ট করে অর্জিত টাকা এ সমিতিতে উচ্চ মুনাফা লাভের আশায় জমা রাখা শুরু করেন। পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে, গত তিন-চার মাস আগে হঠাৎ অফিসে তালা দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। গ্রাহকের বিনিয়োগ করা অর্থে তারা বিভিন্ন জায়গায় নামেবেনামে জায়গাজমি কেনা, বহুতল ভবন নির্মাণ, বিভিন্ন ছোট-বড় প্রতিষ্ঠান করেছেন বলে র্যাবের অনুসন্ধানে জানা গেছে।

ডিআইজি মোজাম্মেল হক বলেন, কমিটির সভাপতি জাকির হোসেন খান বি.কম পাস করে একটি ফার্ম থেকে ১৯৯৫ সালে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট সার্টিফিকেট সম্পন্ন করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একটি গার্মেন্ট প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৬ সাল থেকে মিরপুর-১০ এলাকায় ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

১৯৯৩ সালে তিনি চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সদস্য হিসেবে যোগদান করে বর্তমানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নামে ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে একাধিক ফ্ল্যাটসহ নামেবেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি সমিতির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করছিলেন।

গ্রেফতার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান ঢাকার একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.কম সম্পন্ন করেন। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ঢাকার একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। পরে ২০০৩ সাল থেকে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ২০২১ সালে সমিতির সহসভাপতি এবং গত জানুয়ারি থেকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। গুলশান-নিকেতনে নিজের ফ্লাটে বসবাস করেন। এ ছাড়া তার নামেবেনামে অনেক সম্পদ রয়েছে বলে দাবি করেন র্যাব-৪ সিও।

চেতনা বহুমুখী সমবায় সমিতির বিনিয়োগ বাড়ানোর সাথে সাথে আরো পাঁচটি নামসর্বস্ব কোম্পানি পরিচালনা করছিলেন অভিযুক্তরা। সেগুলো হলো চেতনা টাওয়ার, চেতনা কুঠির, চেতনা মডেল একাডেমি, চেতনা ডায়াগনস্টিক ও হোটেল ব্লু বারশি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com