স্ত্রী ও সন্তানকে শ্বাসরেোধে হত্যার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়ার পর ১২ বছর ধরে পলাতক এক ব্যক্তি র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাতে সাভার থানা এলাকার শাহীবাগ থেকে জাকির হোসেন (৪১) নামের ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর কাওরান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাকির হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় নিপা আক্তারের। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে জাকির। এরই মধ্যে তাদের এক কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। পরে নিপা আবার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এসময় জাকিরের সঙ্গে তারই বড় ভাই জাহাঙ্গীরের স্ত্রী তাহমিনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
মোজাম্মেল হক আরও জানান, ২০০৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে জাহাঙ্গীর বাড়িতে না থাকার সুযোগে জাকির তাহমিনার ঘরে গেলে তাদেরকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন নিপা। নিপা তখন জাহাঙ্গীরকে সব বলে দেবেন বলে হুমকি দেন জাকিরকে।
এই ঝগড়ার জেরে পরদিন রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় নিপাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জাকির। এসময় তিনি তার তিন বছর বয়সী শিশুকন্যাকে জ্যোতিকেও হত্যা করেন। এ ঘটনায় নিপা আক্তারের বাবা আবু হানিফ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে পাঁচ বছর কারাভোগের পর ২০১০ সালে জামিনে ছাড়া পেয়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
২০২১ সালের ১২ জানুয়ারি আদালতের রায়ে জাকিরের মৃত্যুদণ্ড হয়। এছাড়া, হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাহমিনা, আমিনুল, মিলন, স্বপন ও হাসানকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাকির প্রথমে পালিয়ে সাভারে যান। পরে তিনি বাউলের ছদ্মবেশ নেন। ২০১৩ সালে আবার বিয়ে করে জিনজিরায় থাকতে শুরু করেন জাকির।
তবে এক জায়গায় বেশিদিন থাকতেন না তিনি। গ্রেপ্তার এড়াতে চট্টগ্রাম, ঢাকার আরামবাগ, ফকিরাপুল, হাজারীবাগ ও খিলগাঁওতেও ছিলেন তিনি। গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত বাউল ছদ্মবেশেই বিভিন্ন গানের দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতো।