রবিবার, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে করণীয়

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০২৩
  • ৫১ বার পঠিত

সার সিস্টোলিকে ৯০ মিলিমিটার পারদ চাপ এবং ডায়াস্টোলিকে ৬০ মিলিমিটার পারদ চাপ হলো নিচের দিকে রক্তচাপের স্বাভাবিক মাত্রা। এর কম হলেই তখন লো প্রেসার জনিত বিভিন্ন জটিলতা শুরু হয়। বসা বা শুয়ে থাকা থেকে দাঁড়ানোর সময় প্রেসার কমে যাওয়া লো প্রেসারের সবচেয়ে সাধারণ রূপ। বয়স্ক লোকদের সাধারণত খাওয়ার পরে হঠাৎ করে প্রেসার কমে যেতে দেখা যায়। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত রক্তপাত ও গুরুতর সংক্রমণের জন্য লো প্রেসার অনেক সময় জীবন-হুমকির কারণ হতে পারে। চলুন জেনে নেই হঠাৎ প্রেসার কমে গেলে কি করতে হবে।

প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ

সোডিয়াম দ্রুত প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে। তবে বেশি সোডিয়াম গ্রহণ হৃদরোগেরও কারণ হতে পারে। তাই শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আগে থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যে, হঠাৎ সোডিয়াম খাওয়া ঠিক হবে কি না।

লবণাক্ত খাবার প্রেসার বাড়াতে পারে। টিনজাত স্যুপ, পনির, আচারযুক্ত আইটেম এবং জলপাই ইত্যাদি লবণাক্ত খাবার হিসেবে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে। অপ্রক্রিয়াজাত খাবারে টেবিল লবণ যোগ করা যায়। এতে কতটা লবণ খাওয়া হচ্ছে তার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার প্রেসার বৃদ্ধি করে। ফোলেট-সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো- মটরশুটি, মসুর ডাল, শাক, ডিম এবং সাইট্রাস ফল যেমন লেবু, কমলা। ক্যাফেইনযুক্ত চা বা কফি কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে এবং হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে অস্থায়ীভাবে প্রেসার বাড়াতে সাহায্য করে।

প্রচুর পানি পান করা

ডিহাইড্রেশন লো প্রেসারের একটা বড় কারণ হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে হালকা ডিহাইড্রেশনও লো প্রেসারের দিকে ঠেলে দিতে পারে। বমি, গুরুতর ডায়রিয়া, জ্বর, কঠোর ব্যায়াম এবং অতিরিক্ত ঘামের মাধ্যমে দ্রুত ডিহাইড্রেশন ঘটতে পারে। মূত্রবর্ধক জাতীয় ওষুধও ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রচুর পানি পানের কোন বিকল্প নেই। শরীরের প্রয়োজনীয় পানি বেরিয়ে যেতে শুরু করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে পুরো দৈহিক অবস্থা দুর্বল হয়ে থাকে, যা যে কোন অঘটনের দিকে ধাবিত করতে পারে।

সাবধানে শরীরের অবস্থানের পরিবর্তন করা

শরীরের অবস্থান পরিবর্তনের ফলে লো প্রেসার অর্থোস্ট্যাটিক নামে পরিচিত। যে কোন বয়সেই বহুল সংঘটিত এই লো প্রেসার এড়ানোর জন্য শরীরের অবস্থান পরিবর্তনের সময় সতর্ক থাকতে হয়। বসা বা শুয়ে থাকার পর নিজেকে দাঁড়ানোর জন্য যথেষ্ট সময় নিয়ে দাড়াতে হবে। দাঁড়ানোর সময় ধরে রাখার জন্য কাছাকাছি শক্ত কিছু রাখা দরকার। তাহলে মাথা ঘোরার অবস্থা হলে তাতে অবলম্বন করে ভারসাম্য বজায় রাখা যাবে।

দীর্ঘ সময় ধরে দাড়ানোর সময় মাঝে মাঝে পা নাড়াতে হবে। দাঁড়িয়ে থাকা অপেক্ষা পায়চারি উত্তম। তবে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঠায় হয়ে এক জায়গায় বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে না থাকাটাই ভালো। যে কোন দৈহিক অবস্থার পরিবর্তনে যথেষ্ট সময় নেয়া দরকার। হঠাৎ করে ভঙ্গি পরিবর্তন অনেক ক্ষেত্রে রক্ত সঞ্চালনের ভারসাম্য নষ্ট করে।

বসা অবস্থায় পা ক্রস করলে প্রেসার বেড়ে যায়। লো প্রেসারের উপসর্গযুক্ত লোকেদের জন্য পা আড়াআড়ি রাখার এই ন্যূনতম প্রচেষ্টাটি প্রেসার বাড়ানোতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

মোজা পড়া

রাবার জাতীয় হাত বা পা বন্ধনী কাপড় অথবা মোজা হাতে ও পায়ে রক্ত জমতে বাধা দেয়। অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশনের ক্ষেত্রে এই উপায়টি বেশ কার্যকর। বিছানায় বিশ্রামরত অবস্থায় পা থেকে রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করার জন্য কম্প্রেশন ব্রেসের প্রয়োজন হতে পারে। বয়স্ক লোকদের মধ্যে এই অবস্থার পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট লো প্রেসার বেশি দেখা যায়। তাই তাদের হাতে ও পায়ে মোজা পড়ানো যেতে পারে। অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন মধ্যবয়সী মানুষের ১১ শতাংশ এবং বয়স্ক লোকদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ঘটে।

লো প্রেসারের চরম অবস্থায় ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। তবে এই আকস্মিক দুরবস্থা থেকে রেহাই পেতে আগে থেকেই সতর্ক থাকা উত্তম। দৈনন্দিক জীবন ধারণে সুষম খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের যুগপৎ সংযোজনের মাধ্যমে লো প্রেসারের মত সকল স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্লাড প্রেসার ও থাইরয়েড পরীক্ষার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসরণ সঠিক খাদ্যাভাস বজায় রাখা সুস্থ জীবনের পরিপূরক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com