সরকারি তিতুমীর কলেজকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় কলেজের সামনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে, গতকাল বুধবার বিকেল ৫টার পর থেকে কলেজটির ফটকের সামনে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে আমরণ অনশন’ ব্যানারে অনশন শুরু করেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী।এ সময় তারা সাত দফা দাবি জানান।
শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবিগুলো হলো- তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করা। শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন ও ২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুটি বিষয় ল’ এবং জার্নালিজম সাবজেক্ট সংযোজন।
এ ছাড়া একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিতকরণ ও আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ।
এদিকে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামো গঠন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে ‘শাটডাউন তিতুমীর’ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা।
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘তিতুমীর ঐক্য’র নেতা আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এতে কলেজগুলো অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। তবে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আমরা অনড়। দাবি না মানলে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।’
এর আগে, গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে আলাদা হওয়া সরকারি সাতটি কলেজ নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হবে বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ওইদিন তিনি বলেন, ‘আট বছর আগে একটি সরকার বিবেচনাহীনভাবে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে। যার ফলে জটিল সমস্যা তৈরি হয়েছে। এই সাত কলেজ নিয়ে নতুন একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে।’
তার আগে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে সাত কলেজ থেকে আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ৭ কলেজের অধ্যক্ষরা। এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয় সংলগ্ন লাউঞ্জে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রসঙ্গত, রবিবার স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে নিউমার্কেট এলাকায় আন্দোলন করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাতে তাদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এরপরই ঢাবি থেকে সাত কলেজকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত আসে।