সিরিয়ার কৌশলগত সামরিক শক্তির প্রায় ৮০ ভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকেই সিরিয়ার বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। সাড়ে ৩০০ বারের বেশি হামলা চালিয়েছে তারা। ইসরাইল বলছে, বাশারের অস্ত্রভাণ্ডার যাতে নতুন ক্ষমতাসীনদের হাতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনী জানায় বাশারের পতনের পর ৪৮ ঘণ্টায় তাদের বিমান ও নৌবাহিনী সাড়ে ৩০০ বারের বেশি সিরিয়ার কৌশলগত টার্গেটে হামলা চালিয়েছে। বেশিভাগ হামলাই হয়েছে সিরিয়ার অস্ত্রভাণ্ডারগুলোর ওপর।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা সাবেক বাশার সরকারের ৭০-৮০ ভাগ অস্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে।
ইসরাইল এই কার্যক্রমের নাম দিয়েছে ‘বাশান অ্যারো।’ গোলান মালভূমি ও দক্ষিণ সিরিয়া অঞ্চলের বাইবেলিক নাম এটি। ইসরাইলি বাহিনী ৩২০টির বেশি টার্গেটের তালিকাও প্রকাশ করেছে।
সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলা শুরু হয় শনিবার রাতে। ইসরাইলি বিমান বাহিনীকে হামলা চালাতে অনেক বেশি স্বাধীনতা দেয়া হয়।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, ইসরাইলি বিমানবাহিনী দামেস্ক, হোমস, তারতাস, লাটাকিয়া ও পালমিরার সিরিয়ার বিমানঘাঁটি, অস্ত্রভাণ্ডার ও অস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্রগুলোতে হামলা চালায়।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের হামলায় অনেক দূরপাল্লার প্রজেক্টাইল, স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুইজ ক্ষেপণাস্ত্র, উপকূল থেকে সাগরে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, রাডার, ট্যাঙ্ক, হ্যাঙ্গার ইত্যাদি ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরাইল দাবি করে, তারা সিরিয়ার কয়েকটি রাসায়নিক অস্ত্র গুদামেও হামলা চালিয়েছে।
এদিকে সোমবার রাতে ইসরাইলি নৌবাহিনী সিরিয়ার মিনেত আল-বেইদা উপসাগর ও লাতাকিয়া বন্দরে ১৫টি নৌযান ধ্বংস করে দেয়।
বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে বাশার আল-আসাদ রোববার সকালে পালিয়ে যান।
সিরিয়ার নতুন সরকারের প্রতি এক বার্তায় মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল তাদের সাথে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তবে ইহুদি রাষ্ট্রটি হুমকির মুখে পড়লে তারা হামলা করতে দ্বিধা করবে না।
তিনি ভিডিও বার্তায় বলেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। তবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রয়োজনীয় সবকিছু করব।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল