সোমবার, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন

ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
  • ৯০ বার পঠিত

হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের প্রত্যেকের জন্য অতিপ্রয়োজনীয়। কারণ শুধু হাত ধুয়ে নেওয়ার মাধ্যমেই অনেক রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা যায়। আর এর প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল করোনাকালে। মহামারির সময় হাত ধোয়ার গুরুত্ব উপলব্ধিও করতে পেরেছিল গোটা বিশ্ব। আগের দিনে মানুষ এতটা সচেতন ছিলেন না। ফলে তাদের মধ্যে রোগবালাই ছিল বেশি।

হাত ধুয়ে নেওয়ার উপকারিতা : অপকারিতা কী, সেটা নিয়েই বরং প্রশ্ন তোলা যায়। তবে এটির উপকারিতা লিখে শেষ করা যাবে না। প্রথমে আসি ডায়রিয়ায়। আমাদের দেশে শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান একটি কারণ হলো ডায়রিয়া। এ রোগ ছড়ায় কিন্তু অপরিচ্ছন্ন হাতের মাধ্যমেই। হাত ধুয়ে নেওয়ার মাধ্যমে এ রোগটির প্রকোপ বহুলাংশে কমিয়ে নিয়ে আসা যায়। এক সময় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গ্রামের পর গ্রাম উজার হয়েছে। তবে এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। মৃত্যুও অনেকাংশে কমে গেছে। কারণ ওরস্যালাইন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু এখনো ‘ডায়রিয়াশূন্য বাংলাদেশ’ একথা বলা যায় না। তাই অন্য চিকিৎসার পাশাপাশি হাত ধোয়ার অভ্যাসটি থাকলে এ রোগ থেকে দূরে থাকা যায়।

শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়নি আমাদের দেশে এমন পরিবারের সংখ্যা খুব কমই রয়েছে। এ রোগটি প্রতিরোধের একমাত্র উপায় নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। শিশুকে ধরার আগে, খাওয়ানোর আগে হাত ধুয়ে নিলে এ রোগের জীবাণু শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে না। এতে আপনার শিশু রোগমুক্ত থাকবে।
কিছুকাল আগেও দেশে এমন কাউকে পাওয়া যেত না, যার পেটে কৃমি নেই। আগে তো শিশুদের পেটভর্তি থাকত কৃমিতে। এখন কিন্তু অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। কারণও সবার জানা একটুখানি সচেতনতা। আগে শিশুরা খালি পায়ে হাঁটত, হাত না ধুয়ে খাবার খেত, শৌচকর্মের পর হাত ধুয়ে নিত না। এখনকার বাবা-মায়েরা অবশ্য বেশ সচেতন। তবে আরও সচেতন হতে হবে। শিশুকে অন্তত হাত ধোয়া শেখাতে মোটেও ভুল করবেন না। শুধু হাত ধোয়ার কারণে কিন্তু শিশুদের গলায় ক্ষত, কানের ইনফেকশন, চোখের ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়া থেকেও রক্ষা পায়।

আমেরিকান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি)-এর গবেষণায় এগুলো প্রমাণিত হয়েছে। তারা আরও বলেছে, শুধু হাত ধুলেই ২০টি মারাত্মক রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। তাদের মতে, আমেরিকায় প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ লোক মারা যায় হাত না ধোয়ার কারণে। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা কিন্তু অনেক বেশি হবে।

তো হাত আপনাকেও ধুয়ে নিতেই হবে। সন্তানকেও ধুয়ে নিতে শেখাতে হবে। হাত ধোবেন শৌচকর্মের পর, খাবারের আগে, হাঁচি-কাশির পর, অসুস্থ রোগীর সেবা করলে, শিশুর রান্না করার আগে, শিশুকে খাওয়ানোর আগে।

অনেকে শুধু হাতে পানি লাগান। এতে কিন্তু হাত ধোয়া হয় না। এতে কিছুটা ময়লা পরিষ্কার হয় হয়তো। তবে জীবাণু থেকেই যায়। তাই অবশ্য সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সাবান না থাকলে ছাই দিয়ে ধুতে পারেন।

সাবান সবসময় বহন করা যায় না। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই সচেতন হতে হবে। বর্তমানে বাজারে সেনিটাইজার পাওয়া যায়। এটা হাত করে জীবাণুমুক্ত। যেখানেই থাকুন, হাত জীবাণু মুক্ত রাখুন। নিয়মিত হাত ধুয়ে নিন, সুস্থ থাকুন।

লেখক : এমডি (নিউরোলজি)

রেজিস্টার, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতাল (নিনস), আগারগাঁও, ঢাকা

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com