বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার দমনের এক তুঘলকীয় নীতি গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, আগামীতে সিলেট, কুমিল্লা, রাজশাহী এবং ঢাকার সমাবেশকে ব্যর্থ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে ‘অপারেশন সার্চ লাইটের’ মতো বিএনপি’র নেতা-নেত্রী ও সাধারণ জনগণের ওপর সহিংস আক্রমণ করছে। গণদাবির ভিত্তিতে বিএনপির গণসমাবেশের কর্মসূচি অপ্রত্যাশিতভাবে সফল হওয়ায় আওয়ামী সরকারের গা জ্বালা করছে।
বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আকাশচুম্বি রিজার্ভের পরিমাণ, বিদ্যুতের বন্যা বইয়ে দেয়া, জাতীয় আয়ের বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের চালাকি, গরমিল দিয়ে ভুয়া পরিসংখ্যান তৈরী করে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা বের হয়ে আসছে। এখন আন্তর্জাতিক চোখেও এগুলো উন্মোচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশ এখন গভীর সঙ্কটে নিপতিত। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস এবং অজস্র রক্তধারার বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রের কবর রচনা করে শুধু পুলিশী শক্তির ওপর ভর করে টিকে থাকা সরকার গোটা জাতিকেই পরাধীন করেছে।
রিজভী বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি সভার অংশ হিসেবে গতকাল নরসিংদীতে বিএনপি কার্যালয়ের মধ্যে জেলা বিএনপির আহবায়ক খায়রুল কবির খোকনসহ নেতাদেরকে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে। দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ করে রাখার পরে পুলিশ কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে অবরুদ্ধ নেতাদের হয়রানি ও নাজেহাল করে। তারপর তাদের চিরচেনা চক্রান্তের অংশ হিসেবে সাজানো কাহিনী তৈরী করে। লাইসেন্স করা বিএনপি নেতার অস্ত্রকে তারা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম সোহেল, বিএনপি নেতা আব্দুল বাতেন, জামাল মিয়া, মনিরুল ইসলাম মনির, জেলা কৃষকদল নেতা কামাল উদ্দিন কমল, ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমানকে গ্রেফতার করে।
তিনি বলেন, ১৯ নভেম্বর সিলেটে গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের ছত্রছায়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সহিংসতা অব্যাহত রেখেছে। গুম হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে। এতে গাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং লুনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। অথচ পুলিশ ওসমানী নগর উপজেলা ছাত্রদলের ফয়সাল আহমেদ, নুরুল ইসলাম ও শাহেদ আহমেদকে গ্রেফতার করে।
নরসিংদীতে পুলিশ কর্তৃক বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের ওপর হামলা, গ্রেফতার এবং সিলেটে লিফলেট বিতরণকালে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা ও নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা মো: মুনির হোসেন, মো: সেলিমুজ্জামান সেলিম, সাইয়েদুল আলম বাবুল, তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।