শনিবার, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
গৌরনদীতে সন্ত্রাস-মাদক বিরোধী র‌্যালি ও আলোচনা সভা সারাদেশে ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি, মানববন্ধন হাসিনার দালালরা বিভিন্ন অপকর্মের ফাইল পুড়িয়ে দিয়েছে : সারজিস শেখ হাসিনাকে পুনর্বহালের ষড়যন্ত্র বিএনপি মেনে নেবে না : জয়নুল আবদিন বিডিআর হত্যাকাণ্ডে কোনো দেশের সম্পৃক্ততা পেলে দায়ী করা হবে-তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎহীন সচিবালয়, বন্ধ দাপ্তরিক কার্যক্রম সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন ময়মনসিংহে ডাম্পট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের নিহত ৪ পেঁয়াজের দাম কমছেই, খুশি ভোক্তারা প্রতিদিনই বন্ধ হচ্ছে অসংখ্য মিল-কারখানা, বেকারের আর্তনাদ

সরকারের অপকৌশল উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা খুলনার দিকে ছুটে যাচ্ছে: রিজভী

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২২
  • ৯০ বার পঠিত

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্যাতন, পথে পথে বাধা, গ্রেপ্তারসহ সরকারের সকল অপকৌশলে উপেক্ষা করে বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ অদম্য উৎসাহ-উদ্দীপনায় সমাবেশস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে মধ্যে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে শহরের কয়েক কিলোমিটার এলাকা পূর্ণ হয়ে গেছে।’

আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘খুলনায় আজ বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে সরকার মূলত সান্ধ্য আইন জারি করেছে। সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতেই সরকারের নির্দেশে আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশে সমাবেশের দুই দিন আগে সড়ক পরিবহন ও লঞ্চ ধর্মঘট শুরু করা হয়। সরকারের নির্দেশে এই ধর্মঘটে চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ, রোগী, পরীক্ষার্থীরা ‘
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গতকাল থেকে ফেরি ও নৌ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সমাবেশে যাতে লোক সমাগম না হয়, তার সব চেষ্টাই করে যাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে, চেকপোষ্টসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। খুলনা মহানগরীর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশই হচ্ছে গণসমাবেশে মানুষের ঢল যাতে না নামে। সরকারের এই অপকৌশলে জনগণ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়লেও তারা অদম্য উৎসাহ-উদ্দীপনায় সমাবেশস্থলের দিকে ছুটে যাচ্ছে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ নদীপথে ট্রলার যোগে খুলনা মহানগরীর দিকে যাওয়ার পথে পথে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে হয়রানি করছে অত্যধিক মাত্রায়।বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খুলনায় যে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন সেই বাড়ির লোকজনসহ সেখান থেকে প্রায় ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’

তিনি বলেন, ‘শুধু স্থানীয় নেতাকর্মীরাই নয়, ঢাকা থেকেও যেসব বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা খুলনা গেছেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে।’

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, ‘জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মাগুরা স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি মাইক্রোবাস সমাবেশস্থলে যাওয়ার পথে পুলিশ আটকের পর তাদের গ্রেপ্তার করে গতকাল তাদেরকে আদালতে পাঠিয়েছে। সাতক্ষীরা থেকে বাসযোগে সমাবেশে আসার পথে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৫০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাগেরহাট থেকে আসার পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহনকারী একটি ট্রলার আটকিয়ে দিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ঝিকরগাছা থেকে আসার পথে ৩০-৪০ জন নেতাকর্মীকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে, পুলিশ তাদেরকে আটক করেছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কেশবপুর থেকে সমাবেশ স্থলে আসার পথে সোনাডাঙ্গায় ‘‘এই গাড়ী থাম’’ বলে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হকিস্টিক, রড ও ছুরি দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে ভয়ানক জখম করেছে। সন্ত্রাসীরা তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ খুলনা মহানগরীর প্রবেশ পথে নেতাকর্মীদের ঢুকতে বাধার সৃষ্টি করা হয়েছে।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সব বাধা উপেক্ষা করে খুলনা বিভাগীয় সমাবেশকে সফল করতে নেতাকর্মীরা প্রবল আনন্দ-উদ্দীপনায় খুলনা সোনালী ব্যাংক চত্বরে ইতোমধ্যে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, মাগুরা, সাতক্ষীরাসহ বিভাগের জেলা গুলো থেকে চিড়া-মুড়ি-গুড়-পানি-বিছানা নিয়ে সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছে। পথিমধ্যে অনেকেই খবরের কাগজ কিংবা চাদর বিছিয়ে রাত্রি যাপন করেছে, এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।’

রিজভী বলেন, ‘গণসমাবেশকে ঘিরে সরকার যে নীচতা, নীতিহীনতা, স্বার্থপরতা এবং ভীতি প্রদর্শণের পথ অবলম্বন করেছে তা এক কলঙ্কজনক নজির। স্থানীয় প্রশাসন নিজেরা সরকারের দুর্বৃত্তপনার সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যখন পথে পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করছে তখন সব জেনে বুঝেই প্রশাসন নিশ্চিন্তে নিদ্রা গেছে। সমাবেশকে নিয়ে যে তাণ্ডব দৃশ্যমান তা আওয়ামী ফ্যাসিবাদেরই উন্মত্ত লীলা। এই মুহূর্তে আওয়ামী ত্রাসের ক্রমপরিবর্তনশীল সঙ্গা জরুরি হয়ে পড়েছে। কারণ এদের নিষ্ঠুরতার তুলনা বিশ্ব ইতিহাসে কম।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্র স্বীকৃত ভিন্নমতকে সহ্য করেনি। সমাবেশ করা গণতন্ত্রের একটি অন্যতম প্রধান শর্ত। এটিকে বাধাগ্রস্ত করার একমাত্র উদ্দেশ্যই হচ্ছে কর্তৃত্ববাদকে প্রতিষ্ঠিত রাখা। স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্বিষহ পদ্ধতি বজায় রাখতেই খুলনার মহাসমাবেশে সরকার নারকীয় বাধা সৃষ্টি করছে। আওয়ামী লীগ মধ্যযুগীয় জমিদারতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই গণতন্ত্রের সব দরজা খোলা রাখার নীতিকে অমান্য করে। তাদের বিশ্বাসের একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে মানুষকে ভয় দেখিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখা। সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ইতোমধ্যে খুলনা মহানগরে এক অতুলনীয় জনস্রোতের তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের চত্বরকে কেন্দ্র করে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় মানবসমুদ্র তৈরি হয়েছে। জনগণের শক্তিকে শিকারি বাহিনীর মতো ওঁত পেতে থেকে আক্রমণ করলেও তাকে যে স্তিমিত করা যায় না, আজকে খুলনায় মানুষের সমাগম তারই এক বড় দৃষ্টান্ত। জনগণের শক্তিকে কেউ কখনো প্রতিহত করতে পারে না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আজকের এই সমাবেশ আওয়ামী সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর উদগ্র ক্ষমতালোভ, গণতন্ত্রকে শয্যাশায়ী ও মরণাপন্ন করা, গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রীকে বন্দী করে রাখা, অনাচার-ব্যর্থতা, কুপমুন্ডকতার বিরুদ্ধে জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিবাদ।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com